ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাজার বিঘার ফসলহানির আশঙ্কা

পবায় সেতুর মুখ বন্ধ করে খামার নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৯:০১, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

পবায় সেতুর মুখ বন্ধ করে খামার নির্মাণ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ পবা উপজেলার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের বিলধরমপুর এলাকায় একটি সেতুর প্রবাহমুখ বন্ধ করে সেখানে বাড়ি ও খামার নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সেতুর মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েছে। সেতুর মুখ ভরাট ও বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে উজানে বসতবাড়ি ও ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ওই এলাকার প্রায় হাজার বিঘা জমির ফসল ডুবে যাবে। এমনকি পানির চাপে রাস্তায় ভাঙ্গন ধরবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) অধীনে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে বর্ষার সময়ে সড়কের দু’পাশের পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক থাকে। পাশাপাশি ফসলের ক্ষতি যেন না হয়। কিন্তু গত বছর নিজ জমি দাবি করে একই উপজেলার বিএনপি নেতা সেলিম রেজা বাচ্চু খামার তৈরির উদ্যোগ নেন। স্থানীয় লোকজন, থানা ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পানি নিষ্কাশনের নালা রেখে ভরাট করে। তবে এবারে তিনি পানি নিষ্কাশনের নালা না রেখেই সেতুর মুখ ভরাট ও বন্ধ করে খামারের ঘর নির্মাণ করেছেন। পানি নিষ্কাশনের জন্য এখনই পদক্ষেপ না নিলে ওই এলাকার প্রায় হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। এতে একদিকে ব্যাপকভাবে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। সরেজমিন দেখা যায়, ৪০ ফুট দৈর্ঘের ও ২০ ফুট প্রস্থের সেতুর দক্ষিণ পাশের তলদেশ প্রায় পুরোটাই মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। বর্ষা শুরু হলে কোনক্রমের সেতুর নিচ দিয়ে নিষ্কাশন হবে না। সেলিম রেজা বাচ্চুর কেয়ারটেকার আবু তালেব বলেন, ‘এখানে প্রায় দুই বিঘা জমির ওপরে মুরগির খামার হবে। তাই পুকুর খননের মাটি দিয়ে নিচু জমি উঁচু করা হয়েছে। জমির মাঝখান দিয়ে এই সেতু। তাই ভরাট করা হয়েছে। দর্শনপাড়া গ্রামের একাব্বর বলেন, ‘বর্ষায় আমাদের এই এলাকার সমুদয় পানি ওই সেতুুর নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখন বৃষ্টি হলে পাকা ধানও ডুবে যাবে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমের কোন আবাদই হবে না। সেতুর মুখ ভরাট করে বন্ধকারী সেলিম রেজা বাচ্চু বলেন, ‘নিজের জমি ভরাট করেছি। এর আগে পুকুরখনন করে অন্যেরা পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করেছে। এলাকার মানুষ তখন কোথায় ছিল। পানি নিষ্কাশন না হলে আমার কি করার আছে’। তিনি আরও বলেন, ‘বোরো ধান কাটা হলে রিং পাইপ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে’। দর্শনপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান রাজ বলেন, ‘তিনি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিষেধ করা সত্ত্বেও সেতুর মুখ বন্ধ করে বাড়ি ও খামার নির্মাণ করছে। এতে সামান্য পানিতে আবাদ তলিয়ে যাবে’। তিনি আরও বলেন, ‘পবা উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্রপীড়িত ইউনিয়ন হচ্ছে দর্শনপাড়া। এই ইউনিয়নে আদিবাসী গোষ্ঠী কৃষি কাজের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। শীঘ্রই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হলে এ নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে’।
×