ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভরে উঠবে কৃষকের গোলা

মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২৭ এপ্রিল ২০১৯

 মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ

চারদিকে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। মাঠ ভরা সবুজ সমুদ্রে সোনালি ফসলের হাতছানি। ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। এমন সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে এখনই দুলে উঠছে কৃষকের স্বপ্ন। এই বৈশাখেও সমুদ্রের ছোট ছোট ঢেউয়ের মতো সবুজ ধানের পাতাগুলো দোল খাচ্ছে। কদিন পরেই সবুজ চারাগুলো হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালি ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। সোনালি ধানে ভরে উঠবে গোলা- ওঠান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কোন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে সিরাজগঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন। এ বছর এক লাখ ৪১ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। যেটা গত বছরের চেয়ে তিন হাজার ৮শ’ ৪০ হেক্টর বেশি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার ৩শ’ ২০ মেট্রিকটন ধান। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে প্রতিবিঘায় অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ মণ ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তাড়াশ উপজেলার মাধবপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আসান হাবিব মন্ডল। তিনি আট বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। সবল সবুজ ধানের চারাগুলো হাতড়াচ্ছিলেন তিনি। এমন সুন্দর চারা দেখে তার মনটা খুশিতে ভরে উঠেছে। এ বছর সার ও বিদ্যুতের কোন সঙ্কট না থাকায় খুবই ভাল ফলনের আশা করছেন তিনি। এ বছর বিদ্যুত ও সারের কোন সঙ্কট হয়নি। যে কারণে ফসল অনেক সুন্দর হয়েছে। সবল-সতেজ চারাগুলো দেখে মনে হয় ধানের ব্যাপক ফলন হবে। এখন পর্যন্ত ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। ফলন খুব ভাল হবে। এ বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চাষীরা ধান রোপণ করেছেন। যথা সময়ে সার, বালাইনাশক ও সেচ দিতে পারায় প্রাথমিকভাবে চারাগুলো উজ্জীবিত রয়েছে। ধান গাছে শীষ গজানো থেকে শুরু করে ধান পাকার আগ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল ফলন হবে বলে জানান কৃষকেরা। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত রায়গঞ্জ, তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর অঞ্চলের নিচু জমিগুলো বছরের অন্তত ৩-৪ মাস বন্যাজনিত কারণে পানির নিচে তলিয়ে থাকে। ফলে তারা বোরো চাষের ওপর নির্ভরশীল। ভালভাবে এ বোরো ফসল ঘরে তুলতে পারলে তাদের সারা বছরের চাহিদা পূরণ হয়। এ কারণেই বোরো মৌসুমকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখে এ অঞ্চলের চাষীরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাবিবুল ইসলাম জানান, এ বছর সিরাজগঞ্জের প্রতি উপজেলায় বোরো চাষ বেড়েছে। চলনবিল অধ্যুষিত চার উপজেলায় ব্যাপকহারে ধান উৎপাদন করা হচ্ছে। পুরো জেলায় এক লাখ ৪১ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে চলনবিল অধ্যুষিত রায়গঞ্জ, তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলায় ৯৫ হাজার এক শ’ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার ৩শ’ ২০ মেট্রিকটন ধান। এবার এখন পর্যন্ত বোরো চাষে কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। সার, বীজ ও বালাইনাশক সঙ্কট ছিল না। তাছাড়া নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ থাকায় সেচ কার্যক্রমও সঠিকভাবে চলেছে। ফলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা। -বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে
×