স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাঢ়া থেকে বাপ্পী চত্ব¡র, হাটখোলা, কাঠপট্টি হয়ে মোক্তারপুর পর্যন্ত রাস্তাটি নারায়ণগঞ্জ নগরী থেকে মুন্সীগঞ্জের যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু এ রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে যানবাহন দিয়ে যাত্রী চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হচ্ছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ নগরী-মুন্সীগঞ্জ সড়ক জুড়েই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ নগরী থেকে মুন্সীগঞ্জ শহর পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য পাবলিক যানবাহন হচ্ছে লেগুনা, ইজিবাইক ও স্কুটার। প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাঢ়া, ২নং রেলগেট, জিমখানা থেকে যাত্রীরা লেগুনা, ইজিবাইক ও স্কুটারসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে মুন্সীগঞ্জ শহরে চলাচল করছে। মুন্সীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন পেশার লোকজন এ সড়কটি ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জ নগরী হয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করছে।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির দিনের যাত্রীদের ভোগান্তির অন্ত থাকে না। সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারায়ণগঞ্জ নগরী-মুন্সীগঞ্জ সড়কটি সেতু কর্তৃপক্ষ, কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে পড়েছে। এ সড়কে চলাচলরত লেগুনার চালক সালাম জানান, বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হওয়া গর্তে পানি জমে যায়। ফলে পানি দিয়েই লেগুনা চালাতে হয়। এতে প্রায়ই বিকল হয়ে যায়। এমনকি গাড়ির স্প্রিংসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যাচ্ছে। সপ্তাহে দুই-তিন দিন গাড়ি গ্যারেজে নিতে হয়।
রাস্তার করুণ দশার কারণে কোন কোন সময় যা আয় হয় এর চেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করতে হয় গাড়ি মেরামত করতে। ইজিবাইক চালক সেন্টু মিয়া জানান, রাস্তায় গর্তের কারণে প্রতিদিন তিন-চারটি ইজিবাইক খানাখন্দে উল্টে যাচ্ছে। আমারটিও কয়েকদিন আগে উল্টে গিয়েছিল। এতে নারীসহ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। হাটখোলা হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, রাস্তাটি খুবই খারাপ অবস্থা। বেহাল রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় যানবাহন গায়ের ওপর উঠিয়ে দিতে পারে এই আশঙ্কায় অন্যদের বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছি। নারী শ্রমিক নূরজাহান জানান, বাধ্য হয়েই এ রাস্তা দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। রাস্তার ওপরে জমে থাকা পানি যানবাহনের চলাচলের সময় প্রায়ই শরীরের পরিধেয় জামা কাপড়ের ওপর ছিটকে পড়ে নষ্ট করে দিচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা একটি বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম সৈকত জানান, দুই জেলার লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করছে। কিন্তু রাস্তাটি প্রায় দুই-তিন বছর ধরে বেহাল অবস্থা থাকলেও কারো যেন নজরেই পড়ছে না। এ স্থানে রাস্তাটি নিচু হওয়ায় পানি জমে রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রাস্তাটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সাংবাদিকদের জানান, এই সড়কের যে অংশটুকু ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশনে পড়েছে সে অংশটুকু সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ মেরামত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা চাইলে আমরা সেটা অবশ্যই করব।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ কবির হোসাইন জানান, এ সড়কটি কোয়াটার কিলোমিটার সিটি কর্পোরেশনের অধীনে পড়েছে। তবুও জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে মেয়রের নির্দেশে রাস্তাটি হাটখোলা পর্যন্ত করে দেয়া হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: