ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী

বই ॥ তিড়িং বিড়িং প্রজাপতি

প্রকাশিত: ১২:৫০, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

বই ॥ তিড়িং বিড়িং প্রজাপতি

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিচরণশীল লেখক আবদুল বাসিত মোহাম্মদ একজন কবি হিসেবে সমধিক খ্যাতি লাভ করলেও ছড়া-সাহিত্যেও তাঁর অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তাঁর গল্প, কবিতাসহ বেশ কিছু ছড়াগ্রন্থ আমরা পাঠ করেছি। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯ এ পায়রা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত আজকের আলোচিত তাঁর ‘তিড়িং বিড়িং প্রজাপতি’ একদম শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ। বিচিত্রা সাইজের ৩২ পৃষ্ঠার অফসেট পেপারে নির্মিত গ্রন্থটিতে ২৮টি ছড়া স্থান পেয়েছে। বইটির মনোমুগ্ধকর চাররঙা প্রচ্ছদ করেছেন এমদাদ আরেফিন এবং অলংকরণ করেছেন টিটনকান্তি দাশ। মূল্য ধার্য করা হয়েছে মাত্র ১২০/= (একশত বিশ টাকা)। বইটির প্রথম ছড়ার কয়েক পংক্তি ‘চাই না কিছুই চাই না/একটা ছাড়া দুইটা কিন্তু/খাই না।/একটা আপেল একটা কমলা/একটা আঙ্গুর একটা কলা/দুইটা কিন্তু খাই না/একা একা কখন কোথা/ ভুল করেও যাই না।/চাই না কিছুই চাই না/একটা ছাড়া দুইটা কিন্তু /খাই না।’ লেখালেখি নিয়ে ‘ফুড়ুত ফুড়ুত’ ছড়ায় লিখলেন- ‘ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন আমার/কেমন মজা জানো/দেখি আমি ছড়া কাটছি/কবিতা আর গানও।/মাথা আমার ঘুরছে ঠিকই/চড়ুই পাখির মতো/ফুড়ুত ফুড়ুত শব্দ শুধু/মাথায় অবিরত।’(সংক্ষিপ্ত) তাঁর ‘ভিড়িং’ ছড়া এ রকমÑ ‘তিড়িং তিড়িং ফড়িং/উড়ছে আলোয় মরছে ভালোয়/ধরছে দেখো ভিড়িং।/ (প্রথম ৩ পংক্তি) তাঁর ‘হই চই’ ছড়াটি বেশ মজার। দেখা যাক- ‘হই চই হই চই/হাঁস হাঁস তই তই/জল জল কল কল/কাজ আজ তল তল।/ঝন ঝন গুঞ্জন/ভন ভন মউ-বন/কোনজন কোনজন?/নাম তার রঞ্জন।’ ‘ছোট্ট গাঁও’ ছড়ায় ছড়াকার তাঁর বন্ধুদের গ্রামের বাড়িতে য়াবার নিমন্ত্রণ করেছেন এভাবেÑ ‘আও আও বন্ধুরা সব/আও রে ছুটে আও/শিশির ভেজা ঘাসের বাড়ি/আমার ছোট্ট গাঁও।’ (সংক্ষিপ্ত) ৪ স্তবকের ‘ছড়া’ নামের ছড়াটি- ‘কাঁঠাল বিচি কাঁঠাল বিচি/ কাঁঠালতলে ওই/কাক যে গেছে কাঁঠাল বাড়ি/কাঠবিড়ালি কই?’ ছড়াটি ভাল হলেও নামকরণ ‘কাঁঠাল বিচি’ দিলে আরও চমকপ্রদ হতো। তাঁর প্রতিটি ছড়া সহজ, সরল ও প্রাঞ্জলভাষায় লিখিত এবং বৈচিত্র্যময়। একটি ছড়ার চেয়ে আরেকটি আকর্ষণীয়। প্রতিটি ছড়া এক কথায় মজার, বোঝার ও শেখার। শিশু-কিশোর, শিশুসাহিত্যিক ও পাঠকসমাজ বিশিষ্ট ছড়াশিল্পী আবদুল বাসিত মোহাম্মদের ‘তিড়িং বিড়িং প্রজাপতি’পাঠে মুগ্ধ হবেন- আমার বিশ্বাস।
×