ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নুসরাত হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

নুসরাত হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যা মামলাটি যেমন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়েছিল, একইভাবে নুসরাত হত্যা মামলাটিও নিষ্পত্তি করা হবে। এই মামলার চার্জশীট দাখিলের পরপরই দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমি আপনাদের যদি কিছু বলি সেটা মনে হয় ঠিক হবে না। কারণ আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না।’ একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মামলায় আইনগত সহায়তা প্রসঙ্গে বলেন, আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতা (কোয়ালিফিকেশন) লাগে উনার তা নেই। জনগণের প্রয়োজনে নিশ্চয়ই তা করা হবে। সমাজের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের সংশোধন করতে হলে সংসদে যেতে হয়, এজন্য বিষয়টি বিধিমালায় রাখা হয়েছে, মন্ত্রণালয় বিধিমালা সংশোধন করতে পারবে। প্রয়োজনে নিশ্চয়ই সংশোধিত হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘জাতীয় আইনগত সেবা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হবে আগামী রবিবার। এ বছর এ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শেখ হাসিনার অবদান, বিনামূল্যে লিগ্যাল এইডে আইনি সেবাদান’। ওইদিন সকাল ১০টায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ দিবসের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকদের সরকারী আইনী সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন করতেই দিনটি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রায় সকলেই নুসরাত হত্যাকা-ের বিষয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং এই বিচারটা শেষ করার বিষয়ে তাদের একটা আগ্রহ আছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই বিচারটা যত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায়। আমি বলতে পারি আমরা প্রসিকিউশন থেকে যেসব প্রস্তুতি দরকার মামলা পরিচালনা করতে সমাপ্ত করতে যেসব প্রস্তুতি দরকার আমরা সেগুলো নিয়ে রেখেছি। যে মুহূর্তে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে, রাজন হত্যা মামলা যেমন তড়িৎ আমরা শেষ করতে পেরেছি, এ রকম তাড়াতাড়ি কোন মামলা শেষ হয়নি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে, ঠিক সে রকমভাবে আমরা সেটাকে শেষ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ’আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের মামলা আপীল বিভাগে দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এ্যাটর্নি’ জেনারেলের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই না এই মামলাগুলো বিলম্বিত হোক। কেন বিলম্বিত হচ্ছে, সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সাক্ষী না আসার কারণে বিলম্ব হয়, সেগুলো দূর করার চেষ্টা করছি। খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমি আপনাদের যদি কিছু বলি সেটা মনে হয় ঠিক হবে না। কারণ আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না। আইনমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ২৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দিবসের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চ ও চত্বরে লিগ্যাল এইড মেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়া জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির উদ্যোগে জেলা পর্যায়ে সভা, সেমিনার, রক্তদান কর্মসূচী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে সংবাদপত্রে আইন সহায়তা বিষয়ক ক্রোড়পত্র ও বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশিত হবে এবং রেডিও-টেলিভিশনে হবে আইন সহায়তা সংক্রান্ত টকশো ও মুক্ত আলোচনা। ২০০৯ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত জাতীয় আইনগত সংস্থার মাধ্যমে মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯০ জনকে বিনামূল্যে আইনী সেবা দেয়া হয়েছে। আইনগত সহায়তা প্রাপ্তদের মধ্যে ৬৬ হাজার ৪০২ জন কারাবন্দী ছিলেন । খুশির খবর হলো, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যেখানে ২০২০ সালে ৩৭,০০০ বিচারপ্রার্থীকে আইনগত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে আমরা কেবল ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরেই ৮২,০০০ বিচারপ্রার্থীকে আইনগত সহায়তা প্রদান করেছি। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে আমরা ৯০,০০০ বিচারপ্রার্থীকে আইনগত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী বাৎসরিক আয় যাদের এক লাখ টাকা তারা বিনামূল্যে সরকারের কাছ থেকে আইনগত সহায়তা পান। মানুষের আয় বেড়েছে জানিয়ে এই সেবা পেতে বাৎসরিক আয়ের সীমা বাড়ানো হবে কি না- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রয়োজনে নিশ্চয়ই তা করা হবে। সমাজের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের সংশোধন করতে হলে সংসদে যেতে হয়, এজন্য বিষয়টি বিধিমালায় রাখা হয়েছে, মন্ত্রণালয় বিধিমালা সংশোধন করতে পারবে। প্রয়োজনে নিশ্চয়ই সংশোধিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোঃ জহিরুল হকসহ অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×