ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কিরগিজদের জয়ে সেমিতে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:১৮, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

কিরগিজদের জয়ে সেমিতে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ চাইনিজ তাইপের মহিলা রেফারি ওয়াং চিয়েহ খেলা শেষ হবার বাঁশি বাজাতেই রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড় আনন্দে চিৎকার করতে করতে ঢুকে গেল মাঠে। ঝাঁপিয়ে পড়ে জড়িয়ে ধরলো মাঠে খেলা সতীর্থ ফুটবলারদের। একটু পর সবাই মিলে ছুটে গেল মাঠের এক কোণে ভিআইপি গ্যালারির দিকে। সেখানে জাতীয় পতাকা নিয়ে স্বদেশী ফুটবলারদের জন্য প্রাণখুলে অভিনন্দনে সিক্ত করছিল কিছু সমর্থক। বিজয়িনী ফুটবলার এবং সমর্থকদের এত আনন্দ-উচ্ছ্বাসের যৌক্তিক কারণ অবশ্যই আছে। একটু আগেই যে তারা একটি ঘাম ঝরানো জয়ে নিশ্চিত করেছে ‘বঙ্গমাতা অনুর্ধ-১৯ নারী আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে নাম লেখানো। বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘বি’ গ্রুপের এই ম্যাচে কিরগিজস্তান ২-১ গোলে হারিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিতে ৩ পয়েন্ট লাভ করল মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তান। পয়েন্ট টেবিলে আছে দ্বিতীয় স্থানে। স্বাগতিক বাংলাদেশ দলেরও সমান পয়েন্ট। তবে গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় (+২) তারাই আছে এক নম্বরে, আর কিরগিজরা আছে তাদের নিচে (+১)। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলে হারিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আমিরাতকে। টানা দুই ম্যাচে হেরে ও কোন পয়েন্ট না পেয়ে এই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল আমিরাত। পক্ষান্তরে আমিরাতকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শেষ চারে চলে গেল কিরগিজরা। কিরগিজদের এই জয়ে লাভ হয়েছে বাংলাদেশ দলেরও। তারাও এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিতে নাম লেখালো। এখন আগামী শুক্রবার গ্রুপসেরা হওয়ার জন্য লড়াই করবে বাংলাদেশ-কিরগিজস্তান। স্বাগতিক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গ্রুপসেরা হবার লড়াইয়ের আগে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশই। কারণ গোল গড়ে তারাই এগিয়ে। সেক্ষেত্রে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ড্র করলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে বাংলার বাঘিনীরা। বুধবারের ম্যাচে হেরে আমিরাত আক্ষেপ করতেই পারে। কেননা তারা ম্যাচে দুটি পেনাল্টি পেলেও একটি কাজে লাগাতে পারেনি। কিরগিজস্তান ৬ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় ম্যাচে। কর্নার থেকে অসাধারণ বাঁকানো শটে সরাসরি বল জালে পাঠান কিরগিজ ফরোয়ার্ড বরনবেকভা আইজহান (১-০)। ১৮ মিনিটে কর্নার থেকে মাপা শটে বক্সে বলটা পাঠান আইজহান। গোলরক্ষক লাফিয়ে উঠে বল ধরার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বল পেয়ে নিচু হেডে জালে পাঠান মিডফিল্ডার ইয়েসবেক কিজি (২-০)। ৩৮ মিনিটে পেনাল্টি পায় আমিরাত। মিডফিল্ডার সাহদ খালেদ আলজারকানের পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান (১-২)। ৭০ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েও তা দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাজে লাগাতে পারেনি আমিরাত। কারণ প্রতিপক্ষের ফাউলের সুবাদে আবারও পেনাল্টি পায় তারা। কিন্তু বদলি ফরোয়ার্ড সেনদিয়া যে শটটি নেন তা চলে যায় পোস্টের অনেক ওপর দিয়ে। হতাশায় পোড়ে আমিরাত দল। ৮৭ মিনিটে দশজনের দলে পরিণত হয় কিরগিজস্তান। বল নিয়ে যাবার মুহূর্তে প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার আলজারকানকে পেছন থেকে তার ঘাড়ে আঘাত করেন ফরোয়ার্ড আইজহান। বিষয়টি চোখ এড়ায়নি রেফারির। তিনি সরাসরি লালকার্ড দেখান আইজহানকে। তবে শেষ পর্যন্ত শক্তিক্ষয় হলেও বিপদ ঘটেনি কিরগিজদের। প্রতিপক্ষকে আর কোন গোল করতে দেয়নি তারা।
×