ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার প্রসঙ্গ’ শীর্ষক সেমিনার

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ চ্যালেঞ্জের মুখে

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ চ্যালেঞ্জের মুখে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অতি দরিদ্র ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মা, কিশোরী, শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে খর্বতা, কৃশতা ও কম ওজনসম্পন্ন শিশুদের সংখ্যা কমলেও বিশ্বে অপুষ্টির হার বাংলাদেশে সর্বোচ্চ। ধনী ও গরিবের বৈষম্য আজ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এ পরিস্থিতি দেশে সকল মানুষের মৌলিক অধিকারÑ খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রতিষ্ঠার বিষয়কে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে তুলেছে। আর অতিদরিদ্র ও দরিদ্র জনগণ কম-বেশি খাদ্য পেলেও তাদের পুষ্টি পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে খাদ্য অধিকার আন্দোলন আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্য : খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার প্রসঙ্গ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। খাদ্য অধিকার আন্দোলনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এমপি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহ নেওয়াজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম, আইসিসিও কোপারেশন বাংলাদেশ কর্মসূচীর প্রধান মোঃ আবুল কালাম আজাদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিধানে সরকারী কর্মসূচীর কিছু অংশ তুলে ধরে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা সামনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা হ্রাস পেয়েই চলেছে। দেশের প্রত্যেক মানুষ এখন দুবেলা খাবার পায়। তারা পুষ্টি সম্পর্কেও বেশ সচেতন। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। তাই নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতকল্পে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি নাগরিক খাদ্য পাবার অধিকার রাখে। খাদ্যের অধিকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিকসহ বিভিন্ন খাতে দৃশ্যমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে চলেছে। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ শতাংশের উপরে অবস্থানের ধারাবাহিকতায় গত বছর থেকে ৭ শতাংশের উপরে অর্জিত হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আসন্ন জাতীয় বাজেটে প্রধান প্রধান দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকা ও জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করা যেতে পারে। সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন ও খাদ্য নিরাপত্তা কার্যকর করার প্রধান কার্যক্রম ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী’র বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে সকল কর্মসূচীর ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা দরকার। অতি দারিদ্র্য ও দরিদ্রের সংখ্যা হ্রাস পেলে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার কর্মসূচীও আরও বেশি সফলতার মুখ দেখবে।
×