ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অমিত দাস

জমকালো আয়োজন

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

জমকালো আয়োজন

এই বিশ্বে এমন কোন সমাজ দেখা যায় না যেখানে বিবাহ ব্যবস্থা প্রচলিত নেই। তাই বলা যায় বিবাহ বিশ্বজনীন বিষয়। সন্তান বড় হলে সব পিতামাতার দায়িত্ব হলো তাদের জন্য উপযুক্ত পাত্রপাত্রীর সন্ধান করা কিন্তু পাত্রপাত্রী খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিবাহযোগ্য সন্তানের জীবনসাথী মিলাতে গিয়ে এই সমাজের কত বাবা-মায়ের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। পাত্র-পাত্রী বাছাই করাটা এখন একটা সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে পত্রিকার পাতা উল্টাতেই নজরে আসে পাত্র চাই পাত্রী চাই বলে বিজ্ঞাপন। সেই বিজ্ঞাপনে পাত্র-পাত্রীর বংশ পরিচয় শিক্ষাগত যোগ্যতা শারীরিক বর্ণনা ঠিকানা এমনকি অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার প্রকাশ করা হয়ে থাকে। আমরা তো সকলেই জানি সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না হলে কেউ কোন কিছু এমনি এমনি গণমাধ্যমে প্রচার করে না। তাই পাত্র-পাত্রী সন্ধান আজকাল একটি বড় সমস্যা। অনেক প্রতারক চক্র বিয়ে ঠিক করে দেয়াটাকে ব্যবসার ফাঁদ বানিয়েছে। অনেক সহজ সরল মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে ঠকিয়ে বিপদে ফেলে বড় অঙ্কের টাকা ভাগিয়ে নেয় যা সত্যিই দুঃখজনক। কোন পিতা মাতাই তো আর অমর হয়ে এই দুনিয়াতে আসেননি। একটা সময়ে এসে সকলেরই জীবনের অবসান হবে। তাই তার প্রিয় সন্তানকে কার হাতে রেখে যাবেন এই দুর্ভাবনায় পড়েন এই সমাজের প্রায় সব সন্তানের পিতামাতা। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা চান তার কন্যাকে উপযুক্ত পাত্রের হাতে দান করতে আর পুত্র সন্তানের পিতারও মনে সাধ রয়েছে সংসারে গৃহলক্ষ্মী হয়ে আসবে মনের মতো একটি পুত্রবধূ। যার আগমনে সংসারে সুখ-শান্তি আয়-উন্নতি ক্রমশ বাড়তে থাকবে আর তার পরেই নাতি নাতনির মুখ দেখে পরম নিশ্চিন্তে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারবেন। কোথায় পাওয়া যাবে মনের মতো পাত্র-পাত্রী-এ নিয়ে অভিভাবকরা চিন্তায় থাকেন। তাই উপায়ন্তর না দেখে অনেকে অনলাইনভিত্তিক ম্যারেজ মিডিয়া ও ফেসবুকের দিকে ঝুঁকছেন। বাঙালী যুবক-যুবতীরা এখনও বিয়ের ব্যাপারে বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। নিজে নিজে বিয়ের পাত্রী বেছে নেয়া প্রায় বাঙালী যুবকের পক্ষেই সম্ভব হয় না, বলা যায় অসম্ভব। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা সুযোগ-সুবিধা ব্যক্তিত্ব ছেলেমেয়ের মেলামেশা এখনও এমন পর্র্যায়ে আসেনি ইচ্ছা করলেই পাত্র-পাত্রী হুট করে মুখ ফসকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিতে পারবে। তাই অভিভাবককে এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়া সন্তানের পক্ষে প্রায় দুরূহ। তাছাড়া আমাদের সমাজে রোমান্টিক বিবাহকে ভাল চোখে দেখা হয় না। তাই বাবা মায়ের মনোনীত পাত্র-পাত্রীই অনেক বাঙালী যুবক-যুবতীর জীবনসাথী হয়ে থাকেন। বিয়েতে প্রচুর লোক খাওয়ানো, উপহার দান, জমকালো আড়ম্বর অনুষ্ঠান করে অনেকে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। জমি বন্ধক দেন বাড়িভিটা বিক্রি করে দেন। সামাজিকতা রক্ষা করতে গিয়ে বংশের মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে আর্থিক দৈন্যদশায় পড়েন বহু অভিভাবক। চন্দ্রনাথ ডিগ্রী কলেজ, নেত্রকোনা থেকে
×