ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মীরসরাইয়ের বারোমাসি খাল এখন ভাগাড়

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

মীরসরাইয়ের বারোমাসি খাল এখন ভাগাড়

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ২৩ এপ্রিল ॥ মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের দেওয়ানপুর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরনো বারোমাসি খাল। তবে, দখল-দূষণে ঐতিহ্যবাহী খালটি এখন পরিণত হয়েছে, ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীঘ্রই দখলদারদের উচ্ছেদ ও খনন কাজ শুরু করা না হলে অচিরেই এটি মৃত খালে পরিণত হবে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো খাল জুড়ে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়, দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা পানি আর বিভিন্ন স্থানে সংযুক্ত আবাসিক ভবনের পানির পাইপ থেকে পড়ছে টয়লেটের নোংরা পানি। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কোন সুব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয়রা তা ফেলছেন এ খালে। দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশের কারণে নানা রোগ-ব্যাধিতে ভুগছেন বাসিন্দারা। খালের কয়েকটি স্থানে মাত্র ১০-১৫ গজ পর পর খাল অনেকাংশ দখল করে আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাাশি ভবন সংলগ্ন খালের উপর কালভার্ট নির্মাণ করেছে ভবন মালিকরা। এসব স্থাপনা নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ণ এই খালটি আরও সংকুচিত হয়েছে। এতে পানি প্রবাহের পথ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এছাড়াও এই খালের পাশে ঢাকা চট্টগ্রাম পুরনো মহাসড়ক সংলগ্ন একটি কসাইখানার গরুর রক্ত বর্জ্যরে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। বারোমাসি খালটি পলি ও আবর্জনার ভাগাড়ে ভরাট হওয়ায় আসন্ন বর্ষায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে দেওয়ানপুর গ্রামের বাসিন্দা ভগীরত (৭০) ও ব্যবসায়ী মোঃ ফরিদ, মোঃ এরাদ, বাবুল শর্মা জানান, পুরনো এই বারোমাসি খালটি আবর্জনা ও পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় একেবারেই বন্ধ। এতে করে কৃষক ও সবজি চাষীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অচিরেই এই দখল দূষণ বন্ধ করে খাল খনন না করলে এটি মৃত খালে পরিণত হবে। এই খালটি দখল দূষণ মুক্ত করতে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাবেদ ইকবাল জানান, বেদখলকৃত জায়গা এবং আবাসিক ভবনের মালিক ও ভাড়াটিয়াদের আবর্জনা না ফেলার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। স্থানীয় জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বারোমাসি খালের কসাইখানা থেকে ফারুক মঞ্জিল পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার খালের পলি ও আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই তা বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম ফজলুল হক জানান, বারোমাসি খাল পরিদর্শন করে বেদখলকৃত খাল পুনরুদ্ধার করা হবে এবং খাল খনন করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখা হবে। যাতে করে কৃষকদের শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ করতে সমস্যা না হয়।
×