ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটছে না

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারের চলমান দরপতন থামাতে বাজার সংশ্লিষ্টদের নানা বৈঠক হলেও তা যেন কোন কাজেই আসছে না। বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কোনভাবেই কাটছে না। মঙ্গলবারও মূল্য সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬২ পয়েন্ট কমেছে। এদিকে এই দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও ৩০০ কোটির নিচে নেমে গেছে। মঙ্গলবার ডিএসইতে মোট ২৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। রবিবার ডিএসইতে ৩৫১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এই হিসাবে ডিএসইতে ৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন কমেছে। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৪২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ২৬৭টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টি কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৬২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ২১৫ পয়েন্টে। আর ডিএস ৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৮৭২ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের। কোম্পানিটির ৩২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে মুন্নু সিরামিক এবং ১২ কোটি ১৩ লাখ টাকা লেনদেনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল। সার্বিক লেনদেন উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউনাইটেড পাওয়ার, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, মুন্নু জুট স্টাফলার্স, যমুনা ব্যাংক, ন্যাশনাল পলিমার, এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিট এবং ডরিন পাওয়ার। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১২ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ১২১ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬টির, কমেছে ১৮৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির শেয়ার দর। এর আগে সোমবার পুঁজিবাজার ইসু্যুতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, শেয়ারবাজারে সূচকের হঠাৎ উত্থান-পতনের পেছনে কেউ কেউ জড়িত রয়েছেন। আমরা ১৯৯৬, ২০১০ সালে এই ধরনের ঘটনা দেখেছি। যারা এসব ঘটনার পেছনে জড়িত তাদের কে খুঁজে বের করার কাজ চলছে। মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সময় মার্কেট স্বাভাবিক রয়েছে। সূচক ৫ হাজার ৯০০ পয়েন্ট থেকে ৫ হাজার ৩০০ পয়েন্ট নিয়ে গেলে তেমন কোন বড় কিছু নয়। জাপানের শেয়ারবাজারে ১৯৮৯ সালে সূচক ছিল ৩৯ হাজার সেটা ২০০৭ সালে মাত্র ৭ হাজার পয়েন্ট এ নেমে আসে আবার ইন্ডিয়াতে সূচক ২১ হাজার পয়েন্ট থেকে ৭ হাজার পয়েন্ট এ নেমে আসে। মার্কেটে এই ধরনের উত্থান-পতন ঘটেই, এটা কোন বিষয় না। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফেরানো এবং এই বাজারের উন্নয়নে আসন্ন জাতীয় বাজেটে বেশ কিছু আর্থিক প্রণোদনা থাকবে। সব প্রণোদনাই হবে মূলত কর সংক্রান্ত। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। এর মধ্যে কিছু বিষয়ের প্রতিফলন আগামী অর্থবছরের বাজেটেই থাকবে। বাজারকে আরও শক্তিশালী করা, এর ব্যাপ্তি বাড়ানো, আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এই বাজারে সম্পৃক্ত করা, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুবিধা ইত্যাদি বিবেচনা করে বাজেটে বেশ কিছু ক্ষেত্রে কর-ছাড় দেয়া হতে পারে। এর মধ্যে লভ্যাংশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আগাম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হতে পারে।
×