ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ফান্ডের চাঁদা নিয়ে আন্দোলনের হুমকি শিক্ষক নেতাদের

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ফান্ডের চাঁদা নিয়ে আন্দোলনের হুমকি শিক্ষক নেতাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ফান্ডে বর্ধিত ৪ শতাংশ চাঁদার আদেশ বাতিল না হলে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। দাবি পূরণ না হলে একই সঙ্গে রাজধানীর পলাশীতে ব্যানবেইস ভবনে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস ঘেরাও ফেরও হুমকি দিয়েছেন তারা। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচীর ঘোষণা দেন তারা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ কাওছার আলী শেখ, উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, উপদেষ্টাম-লীর অন্যতম সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ আবুল কাশেম, সহসভাপতি আলী আজগার হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মোহাম্মদ সেলিম প্রমুখ। শিক্ষক নেতারা বলেন, দাবি আদায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মতো কঠোর কর্মসূচীর আগে ৩০ এপ্রিল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেবেন তারা। একইদিনে সারাদেশের জেলা শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এর আগে ২৫ এপ্রিল দেশের সব উপজেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচী এবং প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীদের তারা স্মারকলিপি দেবেন। সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই চাঁদার হার বৃদ্ধি করা হয়। এতে শিক্ষকরা মর্মাহত, ক্ষুব্ধ। এর আগেও কয়েকবার চাঁদা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন জারি করেও তা স্থগিত করা হয়। অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের শত শত কোটি টাকার সিড মানি কোন ব্যাংকে কী সুদে থাকে জানার অধিকার সব শিক্ষকের থাকলেও তা জানা যায় না কোনদিনই এমন অভিযোগ করে শিক্ষক নেতারা বলেন, অবসর ও কল্যাণে গত ১৬ বছরে কোন অনুসন্ধান, তদন্ত বা অডিট হয়নি। শিক্ষকদের জমা করা চাঁদার শত শত কোটি টাকা ও সরকারের দেয়া সিড মানি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে তুলে বিতর্কিত বেসরকারী ব্যাংকে রাখা হয় কেন? বেসরকারী ব্যাংক থেকে পাওয়া অতিরিক্ত সুদের টাকা কাদের পকেটে যায়Ñ প্রশ্ন শিক্ষক নেতাদের? অবসর ও কল্যাণের সব ব্যাংক হিসেব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অডিট করানোর দাবি জানান তারা। শিক্ষকরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পেনশন পান না। অবসরে গেলে এককালীন কয়েক লাখ টাকা পান অবসর সুবিধা বোর্ড থেকে। এছাড়াও কিছু টাকা পান কল্যাণ ফান্ড থেকে। এই দুটি সুবিধা পেতে এমপিওভুক্ত পদে চাকরিকালীন পুরো সময়ের প্রতি মাসে মোট ৬ শতাংশ হারে টাকা বেতন-ভাতার সরকারী অংশ থেকে অবসর ও কল্যাণ ফান্ডের জন্য চাঁদা বাবদ কেটে রাখা হয়। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক আদেশ অনুসারে অবসর ও কল্যাণ ফান্ডের চাঁদার হার ১০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৬ শতাংশ। চলতি মাস থেকে এই বর্ধিত চাঁদা দিতে হবে। কিন্তু শিক্ষকরা তা দিতে চান না। তাদের যুক্তি বেশি চাঁদার জন্য বাড়তি কোন সুবিধা পাবেন না তারা। অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শরিফ আহমেদ সাদী অবশ্য বলেছেন, এ আদেশ আসলে আগের সিদ্ধান্ত অনুসারেই হয়েছে। এটাকে নেতিবাচকভাবে না দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা অবসরের পর টাকা পাওয়ার যে ভোগান্তি সেটা তো মূলত হয় ফান্ডের অভাবে।
×