ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোহলির অন্যরকম বিশ্বকাপ

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ২১ এপ্রিল ২০১৯

কোহলির অন্যরকম বিশ্বকাপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০০৮ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া বিরাট কোহলি মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে দেখেছেন দলের চূড়ান্ত সাফল্য। তরুণ সদস্য হিসেবে গ্রেট শচীন টেন্ডুলকরের সঙ্গে তিনিও ২০১১ বিশ্বকাপ ট্রফি ছোঁয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির ২০১৫ বিশ্বকাপ দলেও। তবে চার বছরের ব্যবধানে এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ক্রিকেটপাগল দেড় শ’ কোটি মানুষের ভার তার কাঁধে। মিশন ইংল্যান্ডে ট্রফি পুনরুদ্ধারের নেতৃত্ব দেবেন সুপার উইলোবাজ। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) তার দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর সময়টা ভাল যাচ্ছে না। পরশু নবম ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয় জয়ের দিনে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকানো কোহলির মনজুড়ে এখন কেবলই বিশ্বকাপ। শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিতে যাওয়ার আগে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন অভিজ্ঞতাটা একেবারে অন্যরকম। ইন্ডিয়া টুডে’কে দেয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাতকারের শুরুতেই কোহলি বলেন, ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ী সেই দলের সঙ্গে ছিলাম কিন্তু টিম মিটিং বা সিদ্ধান্ত তৈরিতে আমার কোন হাত ছিল না। ২০১৫তে হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে না জড়ালেও হয়েছে। কিন্তু এবার ব্যাপারটা একেবারে ভিন্ন। অধিনায়ক হিসেবে আমাকে অনেক কিছুতেই জড়াতে হচ্ছে। বিশ্বকাপের মতো এমন বিশাল একটা টুর্নামেন্টের গুরুত্ব অধিনায়কের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। আপনি যখন অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন তখন আপনার অনেক বড় চ্যালেঞ্জ দরকার। বিশ্বকাপের মতো বড় চ্যালেঞ্জ আর কিছুই হতে পারে না। টিম ম্যানেজমেন্টের পাশে থেকে এর বিশালতা উপলব্ধি করতে পারছি, একেবারেই আলাদা। আইপিএল নয়, আমি আসলে বিশ্বকাপের জন্য মুখিয়ে আছি। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ভারত যখন ২০১১ সালে বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধার করে ২২ বছর বয়সী কোহলি তখন দলের নবীন সদস্য। ইংল্যান্ডে এবার নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন অধিনায়ক হিসেবে। তবে উইকেটের পেছনে সেই ধোনি থাকায় বাড়তি চাপ নেই বলে জানিয়েছেন সময়ের অন্যতম সফল এ ব্যাটসম্যান। কোহলি বলেন, ধোনি এমন একজন ক্রিকেটার যিনি ১ থেকে ৩০০ নম্বর বল (প্রথম থেকে শেষ ওভার) পর্যন্ত খেলাটা বোঝেন। আমি বলব না তাকে পাওয়া বিলাসিতার পর্যায়ে, তবে এ রকম একটি মাথা স্টাম্পের পেছনে থাকাটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। দিনশেষে আমি কৌশল প্রণয়নের জন্য মাহি ভাই আর রোহিতের সঙ্গেই আলাপ করি। মাঠে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোহলি যে ধোনির কি পরিমাণ সহযোগিতা নেন সেটির উদাহরণ দিতে গিয়ে ভারত অধিনায়ক আরও যোগ করেন, ডেথ ওভারগুলোতে রান আটকানোর জন্য আমি আউটফিল্ডের দিকে নেমে যাই। তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুঁটিনাটি দিক দেখার দায়িত্ব ধোনির। আমি কেবল ফিল্ডিং সাজানো আর বোলার বদলের দিকটিই দেখি। কিন্তু কোন এ্যাঙ্গেল থেকে বল করতে হবে, বিশেষ কিছু করার আছে কি-না, এসব মাহি ভাই-ই দেখেন। ভারত এবার বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে অন্যতম ফেবারিট হিসেবে। কোহলির নেতৃত্বে দেশ-বিদেশে একের পর এক সাফল্য সঙ্গী করেই ইংল্যান্ডে পাড়ি জমাবে টিম ইন্ডিয়া। ইতোমধ্যে চূড়ান্ত দল ঘোষণা হয়ে গেছে। খুব একটা বিতর্ক নেই। কেবল আমবাতি রাইডু ও ঋষভ পন্থের জায়গা না পাওয়াটাই আলোচিত। বিশেষ করে ছয় মাস ধরে চার নম্বর পজিশনে রাইডুকে খেলানো হলেও তাকে বাদ দিয়ে সেখানে নবীন বিজয় শঙ্করকে ভাবা হচ্ছে। ভারতের হয়ে মাত্র ৯টি ম্যাচ খেলে ৩৩ গড়ে ১৬৫ রান করেছেন। ধারণা করা হয় তরুণ এই অলরাউন্ডারের অন্তর্ভুক্তিতে অধিনায়ক কোহলিরও ভূমিকা রয়েছে। প্রধান নির্বাচক এমএসকে প্রসাদও বলেছিলেন, শঙ্কর ব্যাটিং ছাড়াও বোলিং আর ফিল্ডিং ভাল করেন। এই কারণে ও আমাদের দলের অংশ হয়েছে। অধিনায়ক কোহলিও মনে করছেন যে, শঙ্করের অন্তর্ভুক্তিতে দল লাভাবান হবে। ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে ৩০ মে শুরু হতে যাওয়া ১২তম ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচ ৫ জুন, প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ম্যানচেস্টারে ১৬ জুন বহুল আলোচিত ম্যাচে চিরশত্রু পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে কোহলি এ্যান্ড কোং।
×