ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার রোজায় নিত্যপণ্যের দাম কারসাজি করে বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২১ এপ্রিল ২০১৯

এবার রোজায় নিত্যপণ্যের দাম কারসাজি করে বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা

শংকর কুমার দে ॥ এবার রোজায় মুনাফালোভী, মজুদদারি, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে মনিটরিংসহ কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। সরকার এ বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থান নিয়েছে। রমজান মাস শুরুর আগেই বাজার মনিটরিং করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি মনিটর করবে তারা। কারসাজি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ালে অভিযুক্তদের এবার কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট যাতে গড়ে উঠতে না পারে এবং নিত্যপণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ ঠিক রাখতে তদারকি করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রমজান মাসের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের ওপর শুরু করা হচ্ছে গোয়েন্দা নজরদারি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর করবে পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান। এ জন্য রোজার আগেই যারা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আসায় কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বলে বাজার সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে পরিচিত তাদের তালিকা তৈরি করছে গোয়েন্দা সংস্থা। রাজধানীসহ সারাদেশে এই ধরনের ২৪৬ বাজার সিন্ডিকেটের সদস্যের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধকল্পে রোজাদারদের দুর্ভোগ লাঘব ও সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, চাঁদাবাজি, দখল, দূষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে জনসাধানের দুর্ভোগ লাঘবসহ দেশের যেসব চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটছে তার প্রতিটি ঘটনার মনিটরিং করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এরই অংশ হিসেবে এবারের রমজান মাস আসার আগেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ মানুষজনের কাছে দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সরকারের নীতি নির্ধারক মহল। এ জন্য রমজান মাস আসার আগেই রমজান মাসের দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি মনিটরিং, পর্যবেক্ষণ, তদারকিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। রমজান মাসে রাজধানী ঢাকার বাজার তদারকির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম, উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে একজন ম্যাজিস্ট্রেট, একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন করে কর্মকর্তা এবং পুলিশ ও র‌্যাবের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তারা নিয়মিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা ছাড়াও অনিয়মের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। গোয়েন্দা নজরদারির ও অনুসন্ধানের আওতায় আনা হয়েছে রাজধানীর ২৪৬ আমদানিকারক যারা বাজার সিন্ডিকেট হিসেবে পরিচিত। বাজারে পর্যাপ্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ থাকা সত্ত্বেও যাতে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে মুনাফা লুটতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিবছরই রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। অধিক মুনাফার আশায় বাজারে কৃত্তিম সঙ্কট সৃষ্টি করে তারা গলা কেটে পকেট ভারি করতে গিয়ে ক্রেতা সাধারণের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে। নির্বাচনের বছরে যাতে কোন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্তিম সঙ্কট অধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে।
×