ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার ওপর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

আবারও বিএনপি ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র হচ্ছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২০ এপ্রিল ২০১৯

 আবারও বিএনপি ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র হচ্ছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লেখা ‘খালেদা জিয়া তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে শত নাগরিক কমিটি আয়োজিত প্রকাশনা উৎসবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৮৬০ পৃষ্ঠার এ বইটি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ ও সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই শিকদার। প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আবারও বিএনপি ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আগেও বারবার বিএনপি ভাঙ্গার চেষ্টা হয়েছে, দলটিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু জনগণের সমর্থন থাকায় তা সম্ভব হয়নি। প্রতিবারই জনগণের শক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির নির্বাচিত ৬ সাংসদের শপথ নেয়ার প্রশ্নই আসে না। ফখরুল বলেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সরকার খালেদা জিয়াকে আটক রেখেছে। এছাড়া দেশে রাজনীতিকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবাইকে আন্দোলন সংগ্রামের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই, হতাশার বৃত্ত ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা আর হতাশার কথা শুনতে চাই না। বিএনপি এখনও নিঃশেষ হয়ে যায়নি। দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জেলে থাকুন আর বাইরে থাকুন তিনিই আমাদের প্রেরণার উৎস। তিনি আমাদের শক্তি ও সাহস। অতীতেও বহুবার বিএনপি প্রতিটি সঙ্কটে ওঠে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি এদেশের জনগণের দল। বিএনপিকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া জীবন্ত কিংবদন্তি। তিনি একজন সেনানায়কের স্ত্রী। তিনি হঠাৎ এসে ক্ষমতায় বসে পড়েননি। দীর্ঘ ৯ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে জনগণকে ভালবেসে এবং তাদের ভালবাসায় রাষ্ট্র পরিচালার দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছিলেন। গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন দেশে দু’জন মানুষের অবদান বেশি। তাদের একজন জিয়াউর রহমান এবং অপরজন হলেন খালেদা জিয়া। জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন। ফখরুল বলেন, বিএনপির ঘোষণাপত্রে ছিল রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা। কিন্তু যখন স্বৈরাচার এরশাদকে সরাতে জাতীয় ঐক্যের বিষয় এলো, আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্য করার প্রেক্ষাপট তৈরি হলো, তখন এটা একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াল। বিএনপির রাষ্ট্রপতি শাসিত রাষ্ট্রের ঘোষণার কারণে ঐক্য হচ্ছিল না অথবা ভেঙ্গে যাচ্ছিল। তখন সংসদীয় গণতন্ত্রের ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সুতরাং মনে রাখতে হবে দেশে গণতন্ত্র বলতে যা কিছু এর অবদান জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার। তবে সবচেয়ে বেশি অবদান খালেদা জিয়ার। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, কার্যকর আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। আর তার মুক্তি ছাড়া গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, অতীতেও তারা বাকশালের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করেছে। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগেই ২৯ তারিখ ভোট ডাকাতি করে আরেকবার গণতন্ত্র হত্যা করে আওয়ামী লীগ। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি থেকে নির্বাচিত ৬ জনের সংসদে যাওয়া নিয়ে কোন আলোচনা নয়। এই সিদ্ধান্ত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্মতিক্রমে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিয়েছি। সুতরাং এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার প্রশ্নই আসে না। বিষয়টা এখানেই নিষ্পত্তি হওয়ার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা।
×