ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

ববির আন্দোলন জোরদার হচ্ছে ॥ সেশনজটের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২০ এপ্রিল ২০১৯

 ববির আন্দোলন জোরদার হচ্ছে ॥ সেশনজটের আশঙ্কা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন দমাতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। এতে করে আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। টানা ২৪ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের এবং পরবর্তীকালে শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষা এবং প্রশাসনিক কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর এতে করে সেশনজটের আশঙ্কা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থীরা জনকণ্ঠকে বলেন, ভিসির পদত্যাগের দাবিতে গত ২৪ দিনের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা চলছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী বিশেষ করে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। এসব নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়টি এখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একমাত্র দাবিতে পরিণত হয়েছে। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন সেটা মোটেও অভিভাবকসুলভ নয়। উপাচার্যের মেয়াদ রয়েছে আগামী ২৭ মে পর্যন্ত। এরপরে তিনি আর ওইপদে নিয়ম অনুযায়ী থাকতে পারবেন না। এই অল্পদিনের জন্য গত ২৪ দিন এবং সামনে আরও দেড় মাস যদি এভাবে পাঠদান ও ক্লাস বন্ধ থাকে তাহলে হাজার হাজার সাধারণ শিক্ষার্থীকে সেশনজটে পড়তে হবে। এছাড়া আন্দোলনের কারণে রুটিন অনুযায়ী যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলোও নেয়া সম্ভব হয়নি। আন্দোলন শেষ হলে নতুন করে আবার রুটিন তৈরি করবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস, তাতে অনেক সময় চলে যাবে। যেজন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে জরুরী ভিত্তিতে বিষয়টির সমাধান করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর আগে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠক করেও বিষয়টির কোন সুরাহা করতে পারেননি। সূত্রমতে, শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে গত ২৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আয়োজন করার প্রতিবাদ করায় ওইদিনের আরেকটি অনুষ্ঠানে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদে গত ২৭ মার্চ থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা ভিসির বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি করে আন্দোলন শুরু করে। ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা এখন এক দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। তা হলো উপাচার্যের পদত্যাগ। ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
×