ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের দুই প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২০ এপ্রিল ২০১৯

 ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের দুই প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ম্যাড থেটারের জনপ্রিয় প্রযোজনা ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের পরপর দুই দিন দুটি প্রদর্শনী হবে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে একটি এবং আজ শনিবার বাংলাদেশ শিল্পকলার একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির আরও একটি প্রদর্শনী হবে। দল সূত্রে জানা গেছে, ম্যাড থেটারের ‘নদ্দিউ নতিম’ গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের বর্ষবরণ উৎসব ১৪২৬-এ নাটকটি মঞ্চায়ন হয় শুক্রবার। এদিন আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নাটকের মঞ্চায়ন হয়। আর শনিবার নাটকটির নিয়মিত প্রদর্শনী হিসেবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হবে। দেশের মাটিতে পরপর দুইদিন প্রদর্শনী করার অভিজ্ঞতা ম্যাড থেটার প্রথমবারের মতো লাভ করতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৭ সালে লন্ডনের ব্রাডি আর্টস সেন্টারে পরপর দুইদিন প্রদর্শনী করেছিল ম্যাড থেটার। কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের কালজয়ী উপন্যাস ‘কে কথা কয়’-এর নাট্যরূপ ‘নদ্দিউ নতিম’। নাটকটি ম্যাড থেটারের প্রথম প্রযোজনা। নাটক রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম, যিনি ম্যাড থেটারের হেড ম্যাড। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন আসাদুল ইসলাম, সোনিয়া হাসান ও আর্য মেঘদূত, যারা একই পরিবারের সদস্য, বাংলা নাটকের ক্ষেত্রে যা অনন্য ও নতুন মেরুকরণ। নাটকটি দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে এর অভিনয় গুণে, কাহিনীর চমৎকারিত্বে, ঘটনার বিন্যাসে ও চরিত্রের বিচিত্রতায়। নাটকটি নিয়মিতভাবে ঢাকায় মঞ্চস্থ হচ্ছে। প্রতিটি প্রদর্শনীতেই রয়েছে দর্শকদের আগ্রহ আকর্ষণ এবং পুনর্বার দেখার তাগিদ। নাটকটির সহযোগী নির্দেশক আনিসুল হক বরুণ, সেট ও লাইট ডিজাইন ফয়েজ জহির, পোশাক সোনিয়া হাসান, আবহসঙ্গীত আর্য মেঘদূত, আলোক নিয়ন্ত্রণে আরিফ আহমেদ ও আবহসঙ্গীত নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন আদর, আতিক ও রাশেদ। দেশে ও দেশের বাইরে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের একের পর এক সফল প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ম্যাড থেটার দর্শকদের মন জয় করে চলেছে। ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের কাহিনীতে দেখা যায় মতিন উদ্দিন একজন কবি। মনে মনে নিজেকে কল্পনা করে নেয়- সে একজন উজবেক কবি। নিজেই সে নিজেকে স্বপ্ন দেখে- ধবধবে ফর্সা গায়ের রং, পরনে জোব্বার মতো একটা পোশাক, লম্বাটে মুখ, চোখ তীক্ষ্ন। মতিনের মধ্যে বাস করে অন্য এক মতিন। দিনে দিনে মতিন উদ্দিন হয়ে ওঠে নদ্দিউ নতিম। মতিনের হৃদয়ের সবটুকু দখল করে থাকে সহপাঠিনী নিশু। ভাবের ভেলায় ভেসে বেড়ালেও ভাবাবেগে মতিন ডুবে যায় না, সে বুঝতে পারে নিশুর মতো স্কলার মেয়ের যোগ্য সে নয়। মতিনের একদিন চোখে পড়ে পত্রিকার পাতায় তিন লাইনের ছোট্ট একটা বিজ্ঞাপন- একজন সর্বক্ষণিক টিউটর প্রয়োজন, টিউটরের সৃজনশীলতা ব্যক্তিগত যোগ্যতা হিসেবে ধরা হবে, বেতন আকর্ষণীয়। বেতনের আকর্ষণীয় ক্ষমতায় মতিন তার কবি সত্তাকে সাময়িক স্তিমিত রেখে কমল নামের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চার টিউটর পদে অভিষিক্ত হয়। মতিনের কর্মকাে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হওয়ায় তাকে টিউটর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী বাচ্চাটি কবিকে ভুলে না। বাচ্চাটি কবির সঙ্গে কথা বলতে চায়, কিন্তু সে সুযোগ তো আর নেই। কবি চলে গেছে। বাচ্চাটি জেদ ধরে- সে কথা বলবেই বলবে। এক পর্যায়ে সুযোগ হয় কবির সঙ্গে কথা বলার। কমল মতিনের সঙ্গে তার জীবনের একটি সিক্রেট শেয়ার করে, যে সিক্রেটের জন্য মতিনকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়াতে হয়। হাসপাতালের এক হিমশীতল ঘরে সে শুয়ে থাকে। তার কাছে মনে হয়, সে যেন অনন্তকাল এভাবেই শুয়ে ছিল। কী সেই সিক্রেট যার জন্য কবিকে জীবন দিতে হলো? ম্যাড থেটার- মানুষের অবচেতনে এক ধরনের সূক্ষ্ম পাগলামি কাজ করে। এই পাগলামি ব্যবহার করে কেউ কেউ প্রথাগত যুক্তি বুদ্ধির দেয়াল ভেঙে নতুন সমীকরণ আমাদের সামনে দাঁড় করায়। যারা এই পাগলামি ব্যবহার করতে পারে তারা প্রচলিত ধারার বাইরে নতুন কিছু করার সম্ভাবনা তৈরি করে। সেই সম্ভাবনাকে থিয়েটারের মাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য ম্যাড থেটার।
×