ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তর্জাতিক মুক্তি ও মানবাধিকার প্রামাণ্যচিত্র উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ১১:২০, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

আন্তর্জাতিক মুক্তি ও মানবাধিকার প্রামাণ্যচিত্র উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বজুড়ে ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে মানবতা। অমানবিকতার আগ্রাসনে রাষ্ট্রহারা হচ্ছে মানুষ, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে শরণার্থীর সংখ্যা। এমন প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর মানুষের মুক্তি ও মানবাধিকার রক্ষার নানা প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম মেলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে শুরু হলো সপ্তম আন্তর্জাতিক মুক্তি ও মানবাধিকারবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব। বৃহস্পতিবার সূচনা হওয়া উৎসবের প্রতিপাদ্য ‘রোহিঙ্গা পীড়ন’। দুজন দেশী চলচ্চিত্রকার নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্রের সঙ্গে বিশে^র ১৩ দেশের প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে পাঁচ দিনের উৎসব । বৃহস্পতিবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও সঙ্গীতজ্ঞ সুজেয় শ্যাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিবৃন্দ। উদ্বাধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রদর্শিত হয় চিত্রশিল্পী দিলার বেগম জলি নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘জঠরলীনা’। উদ্বোধনী আলোচনায় বক্তারা বলেন, আজকের পৃথিবীতে মানবাধিকার হরণের ঘটনা যেমন বেড়ে চলেছে তেমনি মানুষের লড়াই, মুক্তিসংগ্রাম সেলুলয়েডে তুলে ধরার চেষ্টাও অব্যাহত। ডকুমেন্টারি ফিল্মের ব্যাপক ভূমিকার কথা এ প্রসঙ্গে না বললেই নয়। এ ধারার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নিপীড়িত মানুষের বেদনার চিত্র তুলে ধারার পাশাপাশি জানানো হচ্ছে মানবতার আর্তি। আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মূল মিলনায়তন, সেমিনার রুম (বেসমেন্ট-২) প্রামাণ্যচিত্রগুলো প্রদর্শন করা হবে। শুধু ১৯ ও ২১ এপ্রিল উন্মুক্ত মঞ্চে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। উৎসবে চারটি বিভাগে প্রদর্শিত হবে চলচ্চিত্রগুলো। ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম সেকশন বিভাগে সারাবিশ্বের সাম্প্রতিক মুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এতে এ বছরের অস্কারে শর্ট লিস্টেড স্পেনের প্রামাণ্যচিত্র ‘দ্য সাইলেন্স অব আদার্স’ প্রদর্শিত হবে। প্রতিযোগিতামূলক নাইন্টিন সেভেনটি ওয়ান এ্যান্ড বিয়ন্ড বিভাগে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ ও তৎপরবর্তী সময় নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এ বছর প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত ৫টি ছবি হলোÑ দিলারা বেগম জলির ‘জঠরলীনা’, ফরিদ আহমেদের ‘লালসবুজের দীপাবলী’, তারেক মাহমুদের ‘শব্দসেনা’, ফুয়াদ চৌধুরীর ‘মারসিলেস মেইহেম’ এবং ফারশাত রিজওয়ানের ‘জননী যন্ত্রণা’। এই বিভাগে একটি ছবিকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেয়া হবে। যার মূল্যমান ১ লাখ টাকা। ওয়ান মিনিট ফিল্ম সেকশন বিভাগে ১ মিনিট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট চলচ্চিত্রসমূহ প্রদর্শিত হবে। এই বিভাগে প্রদর্শনের জন্য ৩টি বিষয় নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচিত চলচ্চিত্রের বিষয়: মুক্তিযোদ্ধার সাথে একদিন, বধ্যভূমিতে একদিন অথবা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে একদিন। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বিভাগে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। অংশগ্রহণকারীদের বয়সসীমা ১২-২২ বছর। এ বছর প্রায় ৩০ টি ছবি প্রদর্শিত হবে এই বিভাগে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এক্সপেরিয়েন্স: দ্য লাস্ট গুডবাই বিভাগে ইউসি শোহা ফাউন্ডেশন- ইউনিভার্সিটি অব সাউথার্ন কালিফোর্র্নিয়ার সহায়তায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা ও হত্যাযজ্ঞ নিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি চলচ্চিত্র ‘দ্য লাস্ট গুডবাই’। ছবিটির দৈঘ্য ১৫ মিনিট। ছবিটি দেখার জন্য পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন থেকে লটারীর মাধ্যমে ছবিটি দেখার সুযোগ দেয়া হবে। বিস্তারিত বা ভন.পড়স/রভফভষযৎ থেকে জানা যাবে। উৎসবে রয়েছে এক্সপোজিশন অব ইয়াং ফিল্ম ট্যালেন্ট বিষয়ক কর্মশালা। চার দিনব্যাপী কর্মশালা উৎসব চলাকালীন অনুষ্ঠিত হবে। এ বিভাগে ১২ তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা তাদের প্রকল্পসমূহ জমা দিয়েছেন, যাদের অধিকাংশেরই বিষয় মুক্তিযুদ্ধ। এছাড়া ১০ চলচ্চিত্র নির্মাতা পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন। নির্বাচিত সেরা নির্মাতার উপস্থাপিত প্রকল্প থেকে ছবি নির্মাণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকার অনুদান সহায়তা পাবেন। কর্মশালাটি ঢাকা ডকল্যাব ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করছে। ভারত ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতারা কর্মশালা পরিচালনা করবেন।
×