ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নূরজাহান নীরা

প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৮ এপ্রিল ২০১৯

প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ

নতুন নতুন ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। এ ইতিহাস লজ্জার। এ ইতিহাস মূল্যবোধ অবক্ষয়ের। এ ইতিহাস ব্যর্থতার। এ ইতিহাস নির্মমতার। চারদিকে অশনিসঙ্কেত! অন্ধকার জেঁকে বসেছে মানুষের মন থেকে শুরু করে পুরো দেশে। কলঙ্কিত অধ্যায় রচিত হচ্ছে তথাকথিত শিক্ষিত, ভদ্র, নামধারী, মুখোশধারী কিছু মানুষ নামের পশুর দ্বারা। আর এ পশুগুলোকে আশ্রয় দিয়ে আসছে দুর্নীতিবাজ ও অসৎ কিছু রাজনীতিবিদ। কিছু প্রশাসনের লোক আছে যারা ঘুষ খেয়ে অপরাধীদের সহযোগিতা করে। যেমন ঘটেছে নোয়াখালীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের ক্ষেত্রে। প্রশাসন এবং দলীয় শক্তি না থাকলে রাফির গায়ে আগুন দেওয়ার সাহস ওদের হতো না। প্রশ্ন থেকে যায়, প্রবেশপত্র ছাড়া কিছু বোরকা পরিহিত ছেলে পরীক্ষা হলে কিভাবে ঢুকলো? সাধারণত পরীক্ষা হলে পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ ঢুকতে পারে না। এখানে পরিষ্কার যে নুসরাত হত্যাকা-ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ অনেকে জড়িত এবং এটি পরিকল্পিত খুন। এর আগেও আমরা দেখেছি কুমিল্লা সেনা সংরক্ষিত এলাকায় সোহাগী জাহান তনুকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। যেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ, সেখানে এমন খুন বাইরের লোক করতে পারে না, এটা বোঝার জন্য কোন বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। দেশের সাধারণ মানুষও সেটা বোঝে। তবে অপরাধী যত শক্তিশালী হোক আইনের উর্ধে কিন্তু কেউ নয়। যদি আইন প্রয়োগকারীরা সঠিকভাবে আইনের প্রয়োগ করেন তাহলে এ সমাজ থেকে এ ধরনের অপরাধ কমতে বাধ্য। আর যদি এমনভাবে অন্যায়কারীকে সহযোগিতা করা হয় তাহলে আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে আরও ভয়াবহ কিছু। একদিকে যেমন বাড়ছে নারী জাগরণ, বাড়ছে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ, অন্যদিকে সমান তালে বাড়ছে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা। বাড়ছে নারীর ওপর নির্মম পাশবিক নির্যাতন। আমাদের দেশটা স্বাধীন করতে গিয়ে অনেক মা বোনকে ইজ্জত হারাতে হয়েছে আর যাতে হারাতে না হয়, আর যাতে সেই পরাধীনতার গ্লানি আমাদের সামনে না আসে সে জন্যই আমাদের দেশের ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করা উচিত। এটা এখন সময়ের দাবি। প্রতিবাদের ভাষাকে স্তব্ধ করা যায় না, হত্যা করা যায় না। নুসরাত মারা গেছে কিন্তু নুসরাতের প্রতিবাদের ভাষা মারা যায় নি। নুসরাতের কণ্ঠ থেকে সে ভাষা আজ দেশবাসীর কণ্ঠে ছড়িয়ে পড়েছে। গোটা দেশের সচেতন মানুষ সিরাজ উদদৌলার ফাঁসি চায়, তার সহযোগীদের ফাঁসি চায়। সরকার এ ধরনের অপরাধীদের দ্রুত ট্রাইব্যুনালে বিচার পরিচালনা করলে। অপরাধ কমে আসবে। নুসরাতের খুনির ফাঁসির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় ফিরে আসুক দেশবাসীর বিশ্বাস। নারায়ণগঞ্জ থেকে
×