ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাশরাফির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ দলে চমক রাহী

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

মাশরাফির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ দলে চমক রাহী

মিথুন আশরাফ ॥ পেসার তাসকিন আহমেদের কপাল শেষপর্যন্ত পুড়ল। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে আসন্ন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে চমক হিসেবে থাকলেন ওয়ানডে অভিষেক না হওয়া পেসার আবু জায়েদ রাহী। অথচ ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি আলো ছড়ানো পেসার তাসকিনের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হলো না। দুর্ভাগা হয়ে থাকলেন তাসকিন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলো মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। তিনি আবার জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন। দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ শুরু হতে আর ৪৩ দিন বাকি। ৩০ মে থেকে ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে শুরু হবে বিশ্বকাপ। শেষ হবে ১৪ জুলাই। এজন্য সব দলই নিজেদের দল ঘোষণা করে দিচ্ছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশও বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করে দিয়েছে। ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে। এই দলে একমাত্র চমক বলতে রাহীই। বিশ্বকাপ দলে যোগ হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। অভিজ্ঞ দল গড়া হয়েছে। এর আগে ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছে বাংলাদেশ। সেই ট্রফিতে দলের নৈপুণ্যের কথা বিবেচনায় এনে অভিজ্ঞ দল গড়েছেন নির্বাচকরা। বিশ্বকাপ দলে যে সিনিয়র পাঁচ ক্রিকেটার মাশরাফি, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থাকবেন, তা তো আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল। এরসঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনেরও থাকা নিশ্চিতই ছিল। শুধু দুটি জায়গা নিয়ে ছিল একটু দ্বিধাদ্বন্দ্ব। সেই দুই জায়গা পূরণ করে দিলো বিসিবির নির্বাচকরা। সৈকতকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হলো। যেহেতু ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে হওয়া ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সৈকত দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন, আবার অভিজ্ঞতাও আছে; তাই সৈকতকে বেছে নেয়া হয়েছে। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগেও আবাহনীর হয়ে অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সৈকত। লীগ পর্বের সর্বশেষ ম্যাচে অপরাজিত ১০১ রানও করেছেন। তাই গত বছর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের পর আবার ওয়ানডে দলে সুযোগ ধরা দিয়েছে সৈকতের। সঙ্গে একজন পেসার কে হবেন? সেই প্রশ্নের উত্তরও মিলে গেছে। তাসকিন ও শফিউল ইসলামের নাম উচ্চারিত হলেও শেষপর্যন্ত ওয়ানডে অভিষেক না হওয়া পেসার রাহীকেই বেছে নেয়া হয়েছে। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন বিবেচনায় এবং ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগেও রাহীর নৈপুণ্য বিবেচনায় নিয়ে তাসকিনের চেয়ে ভাল অপশন রাহীকেই মনে করা হয়েছে। তাই রাহীকেই শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপ দলে রাখা হয়েছে। তাছাড়া রাহী সুইংটা খুব দারুণভাবে করতে পারেন। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে যেটি খুব প্রয়োজনও। অবশ্য বিশ্বকাপের যে দল দেয়া হয়েছে, তা পরিবর্তনও হতে পারে। দুই একটি জায়গায় পরিবর্তনের ছোঁয়াও লাগতে পারে। সামনেই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ রয়েছে। সেই সিরিজে বাংলাদেশসহ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলবে। এই সিরিজের জন্য আবার বিশ্বকাপের দলের সঙ্গে আরও দুইজনকে রাখা হয়েছে। একজন হলেন ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলী রাব্বি। আরেকজন হলেন স্পিনার নাঈম হাসান। বাংলাদেশ দলে ইনজুরি সংখ্যা এ মুহূর্তে বেশি। আয়ারল্যান্ড সিরিজে হয়ত বিশ্বকাপ দলে থাকা সবাই সব ম্যাচ খেলবেন না। তখন রাব্বি, নাঈমকেও ঝালিয়ে নেয়া হবে। বিশ্বকাপ দলে থাকা কেউ যদি আয়ারল্যান্ড সিরিজে বেশি খারাপ করেন, তাহলে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ হয়ে যেতে পারেন সেই ক্রিকেটার। তখন রাব্বি, নাঈমের সুযোগ ধরা দিতেও পারে। বিশ্বকাপ দল দিয়ে দেয়া হলেও ২৩ মে পর্যন্ত দলে পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। সেই সুযোগ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিই দিয়েছে। আর তাই যদি কেউ আয়ারল্যান্ড সিরিজে সুযোগ পেয়ে বিশেষ নৈপুণ্য দেখান, তাহলে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েও যেতে পারেন। আর ইনজুরির ছোবল যদি কাউকে ছিটকে দেয়, তাহলেও সুযোগ ধরা দেবে। সেক্ষেত্রে তাসকিনেরও সুযোগ মিলতে পারে। যদি কোন পেসার ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ খেলতে না পারেন, তাহলে তাসকিনকে বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। শুধু তাসকিন নন, ইমরুল কায়েসও আছেন নজরে। দেখা গেল, ওপেনার হিসেবে যাদের ধরা হচ্ছে, তাদের মধ্যে কেউ ইনজুরিতে পড়লেন। তখন ইমরুলের ডাক পড়তে পারে। বাংলাদেশ দল সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলে। সেই সিরিজের দল থেকে বিশ্বকাপ দলে স্পিনার নাঈম ও পেসার শফিউল ইসলামকে রাখা হয়নি। যোগ করা হয়েছে সৈকতকে। আর রাহীকেও নেয়া হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও তাসকিন ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি। এবার এই ইনজুরি থেকে মাত্র সেরে ওঠায় কেমন নৈপুণ্য করবেন তাসকিন, এই দ্বিধা থেকে বাদ পড়লেন তিনি। তাছাড়া জানা গেছে, তাসকিন এখনও শতভাগ ফিট নন। তাই তাসকিনকে রাখা হয়নি। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ॥ মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহীম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবু জায়েদ রাহী।
×