ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লক্কড় ঝক্কড় গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায় বিআরটিএ

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

লক্কড় ঝক্কড় গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায় বিআরটিএ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নীরবতা ভেঙ্গে সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে এবং লক্কড়-ঝক্কড় পরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিআরটিএ)। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার দুপুরে বিআরটিএ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বলেছে, ‘রাস্তায় কোন রঙচটা, জরাজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান দেখা গেলে বা রাস্তায় কোন ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হতে দেখলে উক্ত অবস্থার ছবি, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, স্থান, তারিখ ও সময় উল্লেখ করে বিআরটিএর ফেসবুক পেজে www.facebook.com/brta. gov.bd পোস্ট বা রহভড়@নৎঃধ.মড়া.নফ ঠিকানায় ই মেইল পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ বিআরটিএ পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম পোস্ট দেয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫৩৫ লাইক দেখা যায়। ৫৭ জন মন্তব্য করেছেন। পোস্ট শেয়ার হয়েছে ১৮৩ বার। তবে মন্তব্যদাতাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিআরটিএর কার্যক্রম নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। অনেকেই আইন অমান্যকারী বাস ও মোটরসাইকেলের ছবি পোস্ট করেন, গাড়ির নম্বরসহ। দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আইন অমান্য করে গাড়ি নিয়ে পথচলার ছবি রয়েছে সেখানে। রাজধানীতে পরিবহন শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। চলছে ডিএমপির স্পেশাল টাস্কফোর্সের অভিযানও। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে ‘ট্রাফিক পক্ষ’ পরিচালনার ঘোষণা আসে পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে। তবে সড়কের যানবাহন চলাচলে অব্যবস্থাপনায় অনেকটাই নীরব ছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এবার তারাও এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে। বাস্তবতা হলো, জনবল সঙ্কটের কারণে বিআরটিএ অভিযান দৃশ্যমান নয়। বিআরটিএ পোস্টের বিপরীতে তারিকুল নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘ছবি দেয়ার পরে ব্যবস্থা নিয়েছেন এমন কিছু প্রমাণ দিন। মিরপুর বিআরটিএ’র অফিসের সামনে দিয়ে মিরপুর-১০ টু মিরপুর-১৪ নম্বর রুটে মুড়ির টিন লেগুনা যাদের ফিটনেসে কোন বালাই নেই, চলাচল করে। এটা দেখার জন্য ছবি তুলে পোস্ট দেয়ার প্রয়োজন নেই, বিআরটিএর অফিসের সামনে দাঁড়ালেই খালি চোখে এসব দেখা যায়।’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিআরটিএ জবাবও দিয়েছে। জবাবে বলা হয়, ‘ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রুটপারমিট, ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযান রাস্তায় চলাচল করা সম্পূর্ণ বেআইনী। রাস্তায় মোটরযান চলাচল ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃপক্ষের ওপর এ বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেয়া আছে। তারপরও এ পোস্টের উল্লিখিত তথ্যসহ ছবি পাঠালে এবং তা প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ প্রয়োজনে বিআরটিএর পরিচালকের (এনফোর্সমেন্ট) সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধও জানানো হয়। এ বিষয়ে বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয় বিআরটিএ। আবার এটি পরীক্ষাও করে বিআরটিএ। অনেক মোটরযান ফিটনেস ছাড়াই সড়কে চলাচল করছে। আবার অনেকে মোটরযানের ফিটনেস মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মালিকপক্ষ ফিটনেস পরীক্ষা করে না। সড়কে পরিবহন শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের মোবাইল কোর্ট কাজ করছে। এরপরও সড়কে লক্কড়-ঝক্কড় বাস, রঙচটা, জরাজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচলের অভিযোগও মিলছে। আমাদের যেহেতু মাঠ পর্যায়ে লোকবল কম তাই নজরদারিও সর্বক্ষণিক নেয়া সম্ভব হয় না। তাই সচেতন নগরবাসীর সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।
×