ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় স্বামীকে বেঁধে মারধর, স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ

প্রকাশিত: ১১:১৩, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

কলাপাড়ায় স্বামীকে বেঁধে মারধর, স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী, ১৬ এপ্রিল ॥ জেলার কলাপাড়ায় স্বামী মোঃ সিদ্দিককে বেঁধে মারধর করে নিঃসন্তান গৃহবধূ আসমা বেগমকে (৩০) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থল পশ্চিম চাপলী গ্রাম। স্বামীকে বেঁধে ৭/৮ বখাটে চক্র আসমাকে সোমবার রাত নয়টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা আটকে গণধর্ষণ শেষে অন্য এলাকার মেম্বার আনোয়ার ফকিরের বাড়িতে রেখে যায়। রাতে স্বামী এবং সকালে স্ত্রীকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে মনো কাউন্সিল শেষে ভিকটিম আসমাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলের প্রোগ্রাম অফিসার ইদ্রিস আলম মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে আইনী সহায়তার জন্য পাঠিয়েছেন। আর স্বামী সিদ্দিক কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত সিদ্দিক জানায়, তার দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা বেগম সোমবার ঢাকা থেকে কলাপাড়ায় আসেন। সিদ্দিক তার স্ত্রীকে নিয়ে খালা হাসিনা বেগম ও খালু মতিয়ার রহমানের চাপলী গ্রামের বাড়িতে রাত কাটাতে যায়। আনুমানিক নয়টার দিকে ১৫/১৬ জনের একটি স্থানীয় সন্ত্রাসীচক্র ওই বাড়িতে দু‘দিকের দরজা দিয়ে ঢুকে প্রথমে সিদ্দিকের কাছে জানতে চায় আসমা তার বিয়ে করা স্ত্রী এর কী প্রমাণ আছে। এরপরে সিদ্দিককে বেধড়ক মারধর করে হাত-পা বেঁধে বাড়ি সংলগ্ন বিলে নিয়ে রাখে। আর স্ত্রী আসমাকে প্রথমে ওই ঘরে আটকে এবং পরে নতুনপাড়া এলাকার একটি মাছের ঘেরের ঝুঁপড়ি ঘরে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বখাটেচক্র রাতেই সেখানকার ইউপি মেম্বারের বাড়িতে আসমাকে রেখে আসে। সিদ্দিককে তার মা গিয়ে উদ্ধার করে। রাতেই কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। আর সকালে আসমা কলাপাড়া হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। আসমা এবং তার স্বামী সিদ্দিক এসব অভিযোগ এনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন (এ খবর লেখার সময়) বলে গণমাধ্যমকে জানান। বখাটেচক্রের সবাইকে তারা চিনতে পেরেছেন বলেও জানান। ইউপি মেম্বার আনোয়ার ফকির জানান, রাতে যখন তার বাড়িতে গিয়ে আসমা বেগম অবস্থান নিয়েছে তখন ধর্ষণের কথা তাকে বলেনি। ভোরেও বলেনি। সকাল নয় টার দিকে সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আসমাকে তার দেবর সগিরের সঙ্গে চলে যেতে বলে। এর বেশি কিছু জানেন না। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত তার কাছে এ ধরনের কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে খবর শুনতে পেয়ে একজন অফিসারকে ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সিদ্দিক ও আসমা জানায়, তারা এক বছর আগে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। সিদ্দিকের আগের স্ত্রী সন্তান রয়েছে। আসমার বাড়ি বরগুনা জেলায়। সে ঢাকায় একটি গার্মেন্টে চাকরি করছে। মোবাইলে পরিচয় সূত্রে তাদের বিয়ে হয়। কলাপাড়া হাসপাতালের ওসিসি’র প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ ইদ্রিস আলম জানান, ভিকটিম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে তাদের কাছে আইনী সহায়তার জন্য এসেছেন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা ও মনো কাউন্সিলিং করে ভিকটিমকে আইনী সহায়তা প্রদানের জন্য মহিপুর থানায় লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কলাপাড়া হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ রেফায়েত হোসেন জানান, কলাপাড়া হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালে ভিকটিমের পরীক্ষা সম্ভব না। বিষয়টি মহিপুর থানার ওসিকে জানানো হয়েছে এবং পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বলা হয়েছে।
×