ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মৃত্যু প্রহরে ঢাকার খাল ॥ অনেকগুলো এখন শুধুই স্মৃতি

প্রকাশিত: ১১:০০, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

মৃত্যু প্রহরে ঢাকার খাল ॥ অনেকগুলো এখন শুধুই স্মৃতি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ রাজধানীর মুগদা থানার একটু সামনেই মা-া ব্রিজ। রাস্তার দু’পাশে সরু ড্রেন। আছে কালো বিবর্ণ পানির কম-বেশি প্রবাহ। দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে চলেন পথচারীরা। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এটি মা-া খাল নামে পরিচিত। সত্যিই বিস্মিত হওয়ার মতো খবর। এক সময় এর পরিধি নাকি অনেক বড় ছিল। যুগের পর যুগ দখলের প্রতিযোগিতা, ময়লা-আবর্জনায় খালটি এখন ড্রেনে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, এক সময় এ খাল দিয়ে চলত ছোট-বড় নৌযান। পণ্য পরিবহনেও এ খালের গুরুত্ব ছিল বেশ। এখন খালের জমিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য স্থাপনা। সবার চোখের সামনে নির্বিচারে খালটি বেহাত হয়েছে। অথচ কেউ বাধা দেয়নি। তাই তো স্থানীয় বাসিন্দাদের দুঃখ এটিকে আর খাল বলা যায় না। রাজধানীর ড্রেনগুলোও অনেক বড়। এত গেল একটি খালের করুণ গল্প। রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট ফ্লাইওভার সংলগ্ন ফার্নিচার দোকানগুলোর সামনে ‘খিলগাঁও-বাসাবো’ খালের নাম সম্বলিত ঢাকা ওয়াসার একটি ফলক রয়েছে। এতে খাল দখলমুক্ত রাখতে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কথা লেখা রয়েছে। তবে ফলকটির আশপাশের কোথাও খালের কোন অস্তিত্ব নেই। রাজধানী জুড়ে প্রবহমান খালগুলোর করুণ মৃত্যুর গল্প এখন পুরনো মানুষদের মুখে মুখে। যেখানে এখন আর খালের কোন অস্তিত্ব নেই কিন্তু মন থেকে সরে যায়নি সেই স্মৃতি চিহ্ন। যদিও বারবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা জেলা প্রশাসনসহ ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এসব খাল উদ্ধারের আশ^াস দিয়েছে। গত ১০ বছরের বেশি সময় খাল উদ্ধারে ইতিবাচক কোন পদক্ষেপ আসেনি। জানা গেছে, রাজধানীতে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৫০ খালের অস্তিত্ব ছিল। এর আগে ছিল ৬৫। গত ২৯ বছরে ৩৬টির বেশি বিলীন হয়ে গেছে। বাদবাকি ২৬টির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলেও দখল ও দূষণের হুমকির মধ্যে রয়েছে এসব জলাশয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ওয়াসার পক্ষ থেকে ১২ খাল প্রবহমান বলা হলেও বর্তমানে ২১ খাল বর্ষা মৌসুমে প্রবহমান থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে এ খালগুলো সারা বছর প্রবহমান রাখা সম্ভব। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এসব বিষয়ে উদাসীন। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বক্স-কালভার্টগুলো ভেঙ্গে হলেও খাল উদ্ধার করতে হবে। ওয়াসার গাফিলতির কারণে খালগুলো নালায় পরিণত হয়ে অস্তিত্ব হারাচ্ছে। বাপার পক্ষ থেকে খাল উদ্ধারের একটি প্রস্তাব তৈরি করে সরকারের কাছে দেয়ার পরিকল্পনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই প্রস্তাবে ও দেখানো হয়েছে কত সহজেই রাজধানীর ২৬ খাল উদ্ধার করে সচল রাখা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান অবস্থার উন্নতি না হলে বা জলাশয় রক্ষায় কঠিন পদক্ষেপ না নেয়া হলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে রাজধানীতে আর খালের কোন অস্তিত্ব থাকবে না। দখলে যাওয়া ৪৩ খাল উচ্ছেদ অভিযানে নামার কথা ছিল দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের। সিদ্ধান্ত হয়, খাল উচ্ছেদের পর সীমানা চিহ্নিত করা হবে। এরপর নির্মাণ করা হবে ওয়াকওয়ে। খালের দু’পারে লাগানো হবে ফুলসহ নানা প্রজাতির গাছ। এখনও সবকিছু পরিকল্পনাতেই রয়েছে। ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল, বক্স কালভার্ট অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য ঘোষণা দেন। প্রাথমিকভাবে নন্দীপাড়া-ত্রিমোহনী খাল ও হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকার রাস্তা অবৈধ দখলমুক্ত করার অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজধানীর দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। অভিযানে সফলতাও এসেছিল। কিন্তু দখলমুক্ত রাখার ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি। তাই সব খাল এখন ফের দখল হয়েছে। ত্রিমোহিনী খালের বাঁচার চেষ্টা ॥ খালপাড় ঘেঁষে সারি সারি স্থাপনা। কাঁচা-পাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে খালের ওপর। রয়েছে আবাসিক ভবনও। বলতে গেলে ইচ্ছে মতো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে খালের বুকে। ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনীর গুদারাঘাটের এই চিত্রই বলে দেয় কতটা লাগামহীনভাবে চলছে খাল দখলের মহোৎসব। সরকারী জমি দখল করে অবাধে চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য। পুরো খাল দখলে মরিয়া স্থানীয় ভূমিদস্যুরাও। খালের সংখ্যা কত ॥ প্রকৃতপক্ষে রাজধানীতে খালের সংখ্যা কত এ নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা জেলা প্রশাসন ও মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান একেক রকম। রাজধানীর খাল সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসা বলছে, নগরীতে খালের সংখ্যা ২৬। অন্যদিকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালের সংখ্যা ৫০। ঢাকা ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) ঢাকায় মোট খালের সংখ্যা ৪৩ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়াসার হিসাবে ১২ এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রতিবেদনে ২৪ খাল আংশিক প্রবহমান বলা হয়েছে। বাকি খালগুলোর বেশির ভাগ অবৈধ দখলে বিলুপ্ত, কিছু আবার আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে বিলুপ্তির পথে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি তৈরি করা ম্যাপটি অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য। ওয়াসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর ২৬ খাল ঢাকা ওয়াসাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ সংস্কারের কাজ চলছে। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বলছে, রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা এক সময় প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত হতো। তখন নগরীতেই ৬৫ খাল ছিল। বর্তমানে প্রবহমান খালের সংখ্যা ২৬। এর মধ্যে সাতটি খাল পড়েছে ডিএসসিসি এলাকায়। বাকি খালগুলো পড়েছে উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। ঢাকার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ধোলাইখাল, নন্দীপাড়া খাল, ত্রিমোহিনী খাল ও ডিএনডি বাঁধ বন্যা নিয়ন্ত্রণ খালে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করলে খালগুলো আবারও পূর্বের ন্যায় সচল হবে। তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন খালের মালিকানা ব্যক্তির নামেও রেকর্ড হয়ে গেছে। এসব জটিলতাও নিরসন জরুরী হয়ে পড়েছে। আংশিক প্রবহমান যেসব খাল ॥ ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রস্তুত করা ম্যাপ থেকে দেখা যায়, নলি খাল, দ্বিগুণ খাল, কল্যাণপুর খাল, মেরুল খাল, ডুমনী-কাঁঠালদিয়া খাল, কামরাঙ্গীরচর খাল, বেগুনবাড়ী খাল, মহাখালী খাল, গুলশান খাল, গুলার খাল, নাসিরাবাদ-নিগুর এপাইদ খাল, হাইক্কার খাল, রায়েরবাজার খাল, কালুনগর খাল, রাজাবাজার খাল, ধানম-ি খাল, পরীবাগ খাল, মেরাদিয়া-গজারিয়া খাল, জোয়ারসাহারা খাল, ডুমনী খাল, বাউথার খাল, নাসিরাবাদ-নন্দীপাড়া খাল, দক্ষিণগাঁও-নন্দীপাড়া খাল, আরামবাগ খাল, গোপীবাগ খাল, ধলপুর খাল, ধোলাইখাল, যাত্রাবাড়ী-মাতুয়াইল-মা-া খাল, ডিএনডি বাঁধ বন্যা নিয়ন্ত্রণ খাল, জিয়া সরণি খাল, শ্যামপুর-কদমতলী খাল এবং কদমতলী খাল আংশিক প্রবহমান রয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে যেসব খাল আংশিক প্রবহমান বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তার অধিকাংশই দৃশ্যত নালায় পরিণত হয়েছে। আবার বাস্তবে কিছু খালের অস্তিত্বও নেই। দু’মাসের মধ্যে দখলমুক্ত করার উদ্যোগ ॥ ফের খাল দখলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত খালগুলোর প্রবাহ ধরে রাখার জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে দখলমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি’র মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ কাজ করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘খালগুলো ওয়াসার অধীন। খালের পাড় ঢাকা জেলা প্রশাসনের অধীন। জেলা প্রশাসককে বলেছি আপনি আসেন, পর্যবেক্ষণ করেন। খালের দু’পাশে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে, এগুলো ভেঙ্গে ফেলা উচিত। আমি বলে দিয়েছি, কোন খাল দখলে থাকবে না। গত বৃহস্পতিবার মিরপুরের কালশী খাল পরিদর্শনে এসে মেয়র এসব কথা বলেন। অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। একইভাবে খাল পাড়ের অবৈধ স্থাপনাগুলোও ভেঙ্গে ফেলতে হবে। খালে যে পর্যন্ত আমাদের মেশিন যাবে, নগরপিতা হিসেবে সেই পর্যন্ত খালগুলো আমি পরিষ্কার করেই ছাড়ব। মেয়র আরও বলেন, আমি দেখেছি, বাইশটেকি খালের কোথাও কোথাও এক-দুই ফুট জায়গা অবৈধ দখলে রয়েছে। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। আমার কাজ হবে এই মুহূর্তে এগুলো পরিষ্কার করা। সিটি কর্পোরেশনের প্রতিবেদন ॥ রাজধানীর জলাবদ্ধতার মূল কারণ নিয়ে সম্প্রতি ঢাকার খালগুলো নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। এতে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরীতে খালের সংখ্যা ৪৩। এর মধ্যে ঢাকা ওয়াসা রক্ষণাবেক্ষণ করে ২৬। নয়টি খাল রাস্তা,বক্সকালভার্ট ও ব্রিক স্যুয়ারেজ লাইনে পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকি আটটি খাল রয়েছে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে। ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসির আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় সভায় ‘ঢাকায় জলাবদ্ধতার কারণ এবং রাজধানীর খালগুলোর বর্তমান অবস্থা’ নিয়ে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেন ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শরীফ উদ্দিন। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিদ্যমান খালগুলোর মধ্যে রামচন্দ্রপুর খাল ১০০ ফুটের জায়গায় ৬০ ফুট, মহাখালী খাল ৬০ ফুটের জায়গায় ৩০ ফুট, প্যারিস খাল ২০ ফুটের স্থলে ১০-১২ ফুট, বাইশটেকি খাল ৩০ ফুটের স্থলে ১৮-২০ ফুট, বাউনিয়া খাল ৬০ ফুটের বদলে ৩৫-৪০ ফুট, দ্বিগুণ খাল ২০০ ফুটের বদলে ১৭০ ফুট, আবদুল্লাহপুর খাল ১০০ ফুটের বদলে ৬৫ ফুট, কল্যাণপুর প্রধান খাল ১২০ ফুটের স্থলে স্থানভেদে ৬০ থেকে ৭০ ফুুট, কল্যাণপুর ‘ক’ খালের বিশাল অংশে এখন সুরু ড্রেন, রূপনগর খাল ৬০ ফুটের স্থলে ২৫ থেকে ৩০ ফুট, কাটাসুর খাল ২০ মিটারের বদলে ১৪ মিটার, ইব্রাহিমপুর খালের কচুক্ষেত সংলগ্ন মাঝামাঝি স্থানে ৩০ ফুটের স্থলে ১৮ ফুট রয়েছে। এসব খালের অধিকাংশ স্থানে প্রভাবশালীরা দখল করে বহুতল ভবন, দোকানপাট ও ময়লা আবর্জনায় ভরাট করে রেখেছে। ফলে খালে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় বিলীন হয়ে গেছে অস্তিত্ব। মৃত্যুর প্রহর গুনছে বিভিন্ন খাল ॥ রামচন্দ্রপুর খাল শুরু নবোদয় প্রধান সড়কের ৮ নং রোড থেকে। খালটির এ অংশ থেকে ৬০০ মিটার পর ওয়াসা পাম্প সংলগ্ন অংশে অবৈধ বহুতল স্থাপনা নির্মাণ ও ময়লা আবর্জনার স্তূপ জমে আছে। এ খাল পাড়ের ৩০ ফুট জায়গা ভরাট করে রাস্তা তৈরি করেছে সিটি কর্পোরেশন। এছাড়া নবোদয় প্রধান সড়কের ১০ নং রোডের সুনিবিড় হাউজিং বিশাল অংশ দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে। ডিএনসিসির ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ডের বিশাল অংশ জুড়ে কাটাসুর খালের অবস্থান। এ খালটির দৈর্ঘ্য এক হাজার ৭১৫ মিটার। বর্তমানে খালের শুরুর অংশে ১৪ মিটার এবং শেষাংশে ২০ মিটার প্রস্থ রয়েছে। ১৫০ বর্গমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। তাছাড়া এক হাজার ৫৪৫ মিটার অংশ ময়লা ও আবর্জনায় ভরা। এ খালটির ১৬৫/৫, পুলপার ৬৭/৫ পশ্চিম কাটাসুর, ২৫২/১ বসিলা রোড, বেড়িবাঁধ রোড কালভার্ট, মোহাম্মদপুর হাউজিং, নবোদয় হাউজিং ও ৩ নং রোড কালভার্টের দক্ষিণ পাশে খালের মধ্যে একটি মসজিদ ও একটি গীর্জা গড়ে উঠেছে। এসব এলাকায় ৬০ ফুট প্রস্থের স্থলে ৩০ ফুট রয়েছে। কসাইবাড়ী খালের অস্তিত্বই নেই। উত্তরার দক্ষিণ আজমপুর থেকে শুরু হয়ে কসাইবাড়ী হয়ে মোল্লারটেক পর্যন্ত বিস্তৃতি ছিল এ খালটির। এখন এটি পরিণত হয়েছে ড্রেনে। এর দৈর্ঘ্য ছিল আট হাজার মিটার এবং প্রস্থ ১০ থেকে ১২ মিটার আছে। কল্যাণপুর ‘খ’ খাল কাগজে-কলমে ৪০ ফুট হলেও অনেক জায়গায় খালের কোন অস্তিত্ব নেই। শীতলক্ষ্যা নদী হতে উৎপন্ন হয়ে ক্রমশ সরু হয়ে ঘোপদক্ষিণ মৌজার পশ্চিম প্রান্তে বাওয়ানী জুট মিলের ভেতরে গিয়েছিল ঘোপদক্ষিণ খাল। এ খালটির বর্তমানে কোন অস্তিত্ব নেই। সিটি কর্পোরেশনের প্রতিবেদনে জলাবদ্ধতা দূর করতে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য খালের ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ, বিলীন হওয়া খাল উদ্ধার, পুনর্খনন ও বর্ষা মৌসুমের আগে খাল পরিষ্কার করতে হবে।
×