ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিজেপি, বিএসপি শিবিরে অস্বস্তি

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

বিজেপি, বিএসপি শিবিরে অস্বস্তি

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণের আগে বড়সড় ধাক্কা খেল উত্তর প্রদেশের বহুজন সমাজবাদী পার্টি প্রধান মায়াবতী, যোগী আদিত্যনাথ ও মানেকা গান্ধী। আপাতত নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না এই হেভিওয়েটরা। এনডিটিভি ও পিটিআই অনলাইনের। নির্বাচনী প্রচারে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জেরে সোমবার মায়াবতীকে ৪৮ ঘণ্টা প্রচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় দেশটির নির্বাচন কমিশন। মায়াবতী নির্বাচন কমিশনের এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রীমকোর্টের দারস্থ হলে মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্ট নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পক্ষে রায় দেয়। পাশাপাশি একই দিন উত্তর প্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের জেরে আগামী তিনদিন তাকে নির্বাচনী প্রচার থেকে দূরে থাকতে বলে কমিশন। একই সঙ্গে বিজেপি নেতা মানেকা গান্ধীকেও আগামী ৪৮ ঘণ্টা নির্বাচনী প্রচার থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। মঙ্গলবার ভারতের সুপ্রীমকোর্টেও প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, অবশেষে মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশন জেগে উঠেছে এবং বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জন্য রাজনীতিবিদদের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আর দ্বিতীয় দফা নির্দেশনা নয়। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই বলবত থাকবে। সম্প্রতি দেওবন্দে দেয়া বক্তব্যে বিএসপি প্রধান মায়াবতী মুসলিম সম্প্রদায়কে কংগ্রেস ও তার জোটের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি না করার বিষয়ে সতর্ক করেন। এর কয়েক দিন পর মায়াবতীকে একহাত নিতে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘কংগ্রেস, এসপি ও বিএসপি মুসলিম সম্প্রদায়ের খলিফা আলীর ওপর আস্থা রাখেন। আর আমরা বজরংবলীর ওপর বিশ্বাস রাখি। যোগী আদিত্যনাথের এ বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সুস্পষ্ট এ সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিরোধী নেতারা। এ অবস্থায় বিরোধী দলগুলো আদালতের শরণাপন্ন হয়। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্টে শুনানির সময় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদের কোন ক্ষমতা নেই। প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে আমরা বিরত করতে পারি না।’ এই বক্তব্যের পর রঞ্জন গগৈই বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলছে যে তারা নখদন্তহীন’। আচরণবিধি ভাঙলে তারা একটি নোটিস দেয়, তা না মানলে একটি সতর্কবার্তা। আসলেই বিষয়টি এমন কিনা, তা জানতে চাই আমরা। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এমন একজন প্রতিনিধির কাছ থেকে শুনতে চাই, যার এ বিষয়ে গভীর জ্ঞান রয়েছে। আগামীকাল ১৮ এপ্রিল ভারতে লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হবে। ঠিক এই মুহূর্তে দুই দলের অন্যতম মুখ যোগী এবং মায়াবতী প্রচারে না থাকায় বিজেপি ও মায়াবতীর শিবির কার্যত ধাক্কা খেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সমাজবাদী পার্টির জনপ্রিয় মুখ আযম খানের বিরুদ্ধেও নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বলবত রয়েছে। বিজেপি নেত্রী জয়প্রদা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। আবার ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণে বিজেপি নেতা মানেকা গান্ধী বিরুদ্ধেও আনা অভিযোগের পক্ষে রয়েছে সুপ্রীমকোর্ট। ওদিকে তামিলনাড়ুর ভেলোর কেন্দ্রের ভোট বাতিল হতে পারে। দেশটির রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত সুপারিশ পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই কেন্দ্রের ডিএমকে প্রার্থী কাথির আনন্দের কার্যালয় থেকে গত ১০ এপ্রিল বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধারের জেরে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেয়। নগদ অর্থ উদ্ধারের পরপরই ভোট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করে কমিশন। পাশাপাশি ডিএমকের প্রার্থী এবং দলের দুই সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ডিএমকে প্রার্থী কাথির আনন্দের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পর্কে কোন তথ্য দেননি তিনি। দলের আরও দুই সদস্য শ্রীনিবাসন আর দামোদারানের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
×