ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নটর ডেম ক্যাথেড্রাল বিখ্যাত যে কারণে

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

নটর ডেম ক্যাথেড্রাল বিখ্যাত যে কারণে

ফ্রান্সের প্যারিসের ৮৫০ বছরের পুরনো নটর ডেম ক্যাথেড্রালে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে ক্যাথেড্রালের ছাদ ও গোলাকার চূড়া ধসে পড়েছে। কাঠ দিয়ে এটির ভেতরে করা নক্সা পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ভবনের অবশিষ্ট কাঠামো। প্যারিসের ডেপুটি মেয়র ইমানুয়েল গ্রেগর বলেন, ক্যাথেড্রালের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ক্যাথেড্রালের ভেতরের শিল্পকর্ম ও অন্যান্য অমূল্য সম্পদ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন জরুরী সেবা বিভাগের কর্মীরা। গোথিক কাঠামোর এই ভবনটি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ ছিল। এটির বিশেষত্ব হলো- গোলাপ জানালা ॥ ক্যাথেড্রালটির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে তিনটি গোলাপ দরজা রয়েছে, যা ত্রয়োদশ শতাব্দীর। এগুলো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। প্রথম এবং সবচেয়ে ছোট জানালাটি ভবনের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। এটির নির্মাণ শেষ হয় ১২২৫ সালের দিকে। এটির গ্লাস দিয়ে এর চারপাশে থাকা পাথরে কারুকার্য দারুণভাবে উপভোগ্য। দক্ষিণের জানালাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩ মিটার (৪৩ ফুট)। ৮৪ প্যানেল দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটির আসল গ্লাস অক্ষত ছিল না। কারণ এর আগের অগ্নিকা-ে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। দুটি টাওয়ার ॥ নটর ডেমে আসা পর্যটকদের অধিকাংশই দুটি গোথিক টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে সময় কাটান। এ টাওয়ার দুটি ক্যাথেড্রালের পশ্চিমে অবস্থিত। একটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১২০০ সালে। কিন্তু উত্তরের প্রথম টাওয়ারটি ৪০ বছরের আগে নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এর ১০ বছর পর ১২৫০ সালে দক্ষিণের টাওয়ারটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। টাওয়ার দুটির প্রত্যেকটি ৬৮ মিটার উঁচু। এটিতে উঠতে ৩৮৭ ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এখান থেকে প্যারিসের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। গারগয়েলস ॥ ক্যাথেড্রালটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গারগয়েলস। প্যারিসের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে উঠতে হবে গারগয়েলসে। এখান থেকে শহরটির সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। তবে এখানে উঠতে হলে সাহস ও শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন। কাল্পনিক এই প্রাণীটি একের অধিক প্রাণীর অবয়বে তৈরি করা হয়েছে যেটি হাতের ওপর ভর করে পুরো শহরের ওপর নজর রাখছে। ঘণ্টা ॥ এই ক্যাথেড্রালে ১০টি ঘণ্টা রয়েছে। সবচেয়ে বড়টির নাম ইমানুয়েল। এটির ওজন ২৩টনেরও বেশি এবং ১৬৮৫ সালে এটি দক্ষিণ টাওয়ারে স্থাপন করা হয়। উত্তরের টাওয়ার থেকে সবচেয়ে ছোট ঘণ্টা পরিবর্তনের মাধ্যমে ২০১৩ সালে ক্যাথেড্রালটির ৮৫০ বছর উদযাপন করা হয়। মোচাকার গোথিক চূড়া ॥ নটর ডেমের বিখ্যাত মোচাকার চূড়াটি সোমবার আগুনে ধসে পড়েছে। এটি ত্রয়োদশ শতাব্দীর নিদর্শন ছিল। ভবনটির ইতিহাসে এটি বহুবার পরিবর্তন করা হয়েছে। ফরাসী বিপ্লবের সময় এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ১৮৬০ সালে এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন ॥ নটরডেম যিশু খ্রিস্টের পবিত্র স্মৃতিচিহ্নের বলে অভিহিত করা হয়। এখানে ক্রসের টুকরো, নখ ও হলি ক্রাউন (পবিত্র মুকুট) অব থর্নস রয়েছে বলে কথিত আছে। মুকুটটি আগুন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।-বিবিসি ও গার্ডিয়ান
×