ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমস্যা সমাধানে সুপারিশ বাস্তবায়ন চাই

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৬ এপ্রিল ২০১৯

সমস্যা সমাধানে সুপারিশ বাস্তবায়ন চাই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ করতে বিভিন্ন সময় যেসব সুপারিশ দেয়া হয় তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমস্যাগুলো সমাধান হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও শ্রেণী-পেশার সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, সমস্যা সমাধান করতে হলে যেসব সুপারিশ আসে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে অপরাধীরা যাতে পার পেয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সোমবার ১৪ দল আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই মত দেন। সিরডাপ মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সব কিছুতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো এখনও সমাধানের পথে। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মাদক এখনও সম্পূর্ণ মুক্ত হয়নি। এগুলো আমরা এখনও সম্পূর্ণ সমাধান করতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার নির্দেশ দিয়েছেন কিন্তু তার নির্দেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি বলেই সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি। অনেক সমস্যা আছে যা সমাধানের জন্য যেসব সুপারিশ রয়েছে তা যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে সমাধান হয়নি। তিনি বলেন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার আমলে সৃষ্ট অনেক সমস্যা আমরা এখনও সমাধান করতি পারিনি। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেসব সুপারিশ বিভিন্ন সময় এসেছে তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। ১৪ দলের এই সেমিনারে যে সুপারিশগুলো এসেছে তা আমরা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে দেব। এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে অন্যান্য বিষয়ের মতো সড়ক ও মাদক সমস্যারও সমাধান হবে। জঙ্গীবাদ যদি আমরা মুক্ত করতে পারি, সড়ক সমস্যার সমাধান এবং মাদকও আমরা মুক্ত করতে পারব। সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান এমপি বলেন, সড়কে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে সব সরকারের আমলেই বিভিন্ন সুপারিশ আছে কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি। সড়কে চাঁদাবাজির কথা বলা হয়, ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় মোহাম্মদ নাসিম যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছিল। কারণ, তখন আন্তরিকতা ছিল তাই এটা সম্ভব হয়েছিল। যানবাহনের চালকের অদক্ষতার কথা বলা হয়। চালকদের প্রশিক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। সরকার ১ লাখ চালককে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কিন্তু সেটা আমাদের দেশের জন্য নয়, তাদের বিদেশে পাঠানো হবে। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সরকারের সময় বিআরটিসিকে দুর্নীতিবাজ সংগঠনে পরিণত করা হয়েছিল। দেশে হাইওয়ে বলে কিছু ছিল না, নামমাত্র হাইওয়ে ছিল। পুরো সিস্টেমটাই দুর্বল করে ফেলা হয়েছিল। জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় এসব সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এখনও আমরা সেগুলো ঠিক করতে পারিনি। তবে প্রত্যেকটি সেক্টরে আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী এ সময় বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, নাজমুল হুদা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবাষির্কী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সবাইকে নিয়ে পালন করার জন্য সকল রাজবন্দীদের মুক্তির কথা বলেছেন। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তার বক্তব্যে বলেন, সড়কে বিরাট বড় নৈরাজ্য চলছে। যানবাহনের ফিটনেস দেখার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। চালকরা মাদক খেয়ে সড়কে নামে। আর কয়েক মাস পর আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করব। সেই সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দিয়ে শুধুমাত্র দ-িত দাগী আসামি ছাড়া এই দুটি উৎসব সবাইকে নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে পালন করার প্রস্তাব করছি। প্রবীণ সাংবাদিক এবং কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে যেসব সুপারিশ দেয়া হয় তার বাস্তবায়ন হয় না। সুপারিশ বাস্তবায়নের এই অবহেলা দূর করতে হবে। জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে হবে। এটা করতে না পারলে সমস্যার সমাধান হবে না। অপরাধীরা অপরাধ করে বেরিয়ে যাচ্ছে, বিচার হচ্ছে না। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, মাদকসেবীদের সঙ্গে পুলিশের কোন কোন কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে। শুনেছি মাদকদ্রব্য ইয়াবার একটি ট্যাবলেটের দাম ৪/৫শ’ টাকা।
×