ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে দুই বংলার মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৯:২১, ১৬ এপ্রিল ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ে দুই বংলার মিলনমেলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১৫ এপ্রিল ॥ ‘ইচ্ছে হচ্ছিল, দাদাকে ছুঁয়ে দেখি। কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক দিয়ে অনেক চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ছুঁতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল দাদাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করি। তাহলে হয়তো দীর্ঘদিনের জমে থাকা কষ্টগুলো থেকে রেহাই পেতাম। এক রক্ত, বংশ, তবু কেন আলাদা? নিজের মানুষকে দেখব, কেন এত জটিলতা? এটা কেন সহজ করা হয় না? এভাবে কথা বলে আমি শান্তি পাই না।’ ওপারের সীমান্তে আসা দাদাকে দেখতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নাতনি বিথীকা। ওপারে দাদা আর এপারে নাতনি বিথীকা রায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে দু’জন দু’জনের সঙ্গে কথা বলছেন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছে থাকলেও পারছেন না, মাঝখানে যেন অলঙ্ঘনীয় কাঁটাতারের বেড়া। শুধু দাদা সত্যেন রায় আর নাতনি বিথিকাই নন। সোমবার হাজার হাজার মানুষ তাদের স্বজনদের এক পলক দেখতে ছুটে যান ওই সীমান্তে। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেতনা সীমান্তে নাগর নদীর পাড়ে, রাণীশংকৈল উপজেলার কুকরাদহ সীমান্তে প্রতি বছরের মতো এবারও বসেছিল দুই বংলার মানুষের মিলনমেলা। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বসে এ মেলা। শ্যামলী ও সেজুথীর ভাই সোরমেন থাকেন শিলিগুড়িতে। ভাইয়ের জন্য পিঠা এনেছেন। কথা হলেও নিজের তৈরি পিঠা দিতে পারেননি। তবুও দেখার আনন্দ নিয়ে বিদায় নিলেন তারা। রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর থেকে মেনুকা, অলকা এসেছেন ভারতের কাকরমনি গ্রামে থাকা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। মায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুভূতি বলতে গিয়ে মেনুকা বলেন, বিয়ের পর এই প্রথম মাকে দেখলাম। তবে তেমন কথা হয়নি। অসুস্থ মাকে একনজর দেখে এলাম। এখন একটু ভাল লাগছে। হরিপুর উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শাহীন ফেরদৌস টগর বলেন, এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাকিস্তান-ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল।
×