ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গিলেস্পির বাজি অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

 গিলেস্পির বাজি অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত দেড় বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বেশ খারাপ সময় গেছে। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপা জেতার পর থেকেই দলটি সেভাবে দুরন্ত থাকতে পারেনি। আর এক বছরের জন্য অন্যতম দুই সেরা ক্রিকেটার স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার নিষিদ্ধ থাকায় অসিদের ওয়ানডে নৈপুণ্য ছিল যাচ্ছেতাই রকমের। তবে সেই অবস্থা পাল্টে গেছে। টানা দুই সিরিজ অস্ট্রেলিয়া দল জিতেছে শক্তিশালী ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে। স্মিথ-ওয়ার্নার ছিলেন এ দুই সিরিজে অনুপস্থিত। তবে এখন তারাও ফেরার অবস্থায় আছেন। এ কারণে আসন্ন বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলকে নিয়েও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে ফেবারিট হিসেবে আশা করছেন অনেকে। এমনকি সাবেক পেসার জেসন গিলেস্পি দাবি করলেন, অসিরা ভালভাবেই জানে কিভাবে বিশ্বকাপ জিততে হয়। ভারতের মাটিতে এবার অবিস্মরণীয় নৈপুণ্য দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়া দল। টানা দুই ম্যাচ হেরেও ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ৩-২ ব্যবধানে। এরপর পাকিস্তানকে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে নিজেদের ফেবারিটের পর্যায়ে নিয়ে গেছে তারা। আর এসবই হয়েছে এ্যারন ফিঞ্চের নেতৃত্বে। এই দলটিতে এখন স্মিথ-ওয়ার্নার যোগ হয়ে গেলে নিশ্চিতভাবেই আরও দুর্দান্ত দলে পরিণত হবে অসিরা। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা এখন বিশ্বকাপ স্কোয়াড গঠন নিয়ে সবকিছু পর্যালোচনা করছেন। অচিরেই হয়তো অসি দল ঘোষণা করা হবে। সেই দলে স্মিথ-ওয়ার্নারের ফেরার রাস্তাটা বেশ উন্মুক্ত হয়েই আছে। বিশেষ করে ওয়ার্নার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার কিছু আগে থেকেই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোয় রানের মধ্যে থেকে নিজের ফেরার দাবিটা জোরালো করে ফেলেছেন। তবে এখন যে ফর্মে আছে দলটি তাতে করে নির্বাচকদের জন্য কাজটা কঠিনই হবে এ দু’জনকে ফেরানোর জন্য কাউকে বাদ রাখা। অথচ ভারত-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দু’টি ওয়ানডে সিরিজ জেতার আগে বেশ নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল অসিরা। এ দু’টি সিরিজের আগে গত বছরের শুরু থেকে তারা দুইবার ইংল্যান্ডের কাছে এবং একটি করে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হেরে গিয়েছিল। টানা ৮ ওয়ানডে জেতার দুর্দান্ত কীর্তি গড়ে এখন বিশ্বকাপের আগে সেই পুরনো চেহারাতেই ফিরে এসেছে অসিরা। এবার বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে নামার অপেক্ষা। ১ জুন ব্রিস্টলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সেই লড়াই শুরু হবে অস্ট্রেলিয়ার। এ বিষয়ে গিলেস্পি বলেন, ‘বিশ্বকাপের অন্য সব দলই ভাল করে জানে যে কিভাবে বিশ্বকাপ জিততে হবে সেটা জানা আছে অস্ট্রেলিয়া দলের। এটা এমন একটি বিষয় যা সবগুলো দেশের মনের মধ্যেই গেঁথে আছে। যখন তারা বিশ্বকাপে ফেবারিট থাকে না, তখনও অস্ট্রেলিয়া জানে কিভাবে বিশ্বকাপ ঘরে তুলতে হয়।’ গিলেস্পিও এবার বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার খুব ভাল সুযোগ দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছেও মনে হয় অস্ট্রেলিয়া এখন খুব বড় মানের ডার্ক হর্স। আমি কোনভাবেই তাদের বাইরে সরিয়ে রাখতে পারব না। এটি নিশ্চিতভাবেই সত্য।’ অস্ট্রেলিয়া বর্তমানে বিশ্বর‌্যাঙ্কিংয়ে ওয়ানডেতে ৫ নম্বর দল। ফেবারিটের তালিকায় এক নম্বরে থাকা বিশ্বকাপের স্বাগতিক ইংল্যান্ড, দুইয়ে থাকা ভারত, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা আছে তাদের ওপরে। কিন্তু এরপরও বর্তমানে সাসেক্সের কোচ গিলেস্পি বিশ্বাস করেন ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া একেবারে উপযুক্ত সময়ে গর্জে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে তারা প্রচুর আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে। অবশ্যই আমি চাই অস্ট্রেলিয়া ভাল করুক। তাদের সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানে তারা যেমন করেছে তাতে করে অনেক প্রতিশ্রুতিময় বিষয় দেখা গেছে। তারা সত্যিই অনেক ভাল ক্রিকেট খেলেছে এ দুই সিরিজে।’ আগামী ১৫ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দল ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। আর ২৩ মে পর্যন্ত প্রয়োজনে সেই দলে পরিবর্তনও আনতে পারবে। তবে দলটি কেমন হতে পারে সেটি প্রায় পরিষ্কারই সবার কাছে। সাম্প্রতিক সময়ের দলে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসতে পারে দুটি। আর সেই পরিবর্তনটা স্মিথ ও ওয়ার্নারের দলে ফেরা দিয়ে হতে পারে। কিন্তু স্বাগতিক হিসেবে এবং সাম্প্রতিক পারফর্মেন্স বিবেচনায় এবার ইংল্যান্ডকে ফেবারিট মনে করছেন অনেকে।
×