ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতকে ন্যাটো মিত্রের মর্যাদা

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

 ভারতকে ন্যাটো মিত্রের মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদার করতে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পুনরায় একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান ও বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের কয়েকজন প্রভাবশালী কংগ্রেস সদস্য এই বিলটি উত্থাপন করেন। বিলটি আইনে পরিণত হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ভারতকে ন্যাটো মিত্রদের মতো সুবিধা দেবে ওয়াশিংটন। খবর এনডিটিভি অনলাইনের। এই সুবিধার আওতায় নয়াদিল্লী ওয়াশিংটনের কাছ থেকে অস্ত্র আমদানিসহ অন্যান্য সামরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। ভারতের কাছে আরও বেশি পরিমাণে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরাম ইউএসআইএসপিএফ এই বিলটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে দৌড়ঝাঁপ করছিল। সংগঠনটির মতে, এই বিলটির আওতায় নয়াদিল্লী ওয়াশিংটনের কাছ থেকে বিশেষ করে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব পাবে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত কমিটির সিনিয়র সদস্য জো উইলসন চলতি সপ্তাহে বিলটি উত্থাপন করেন। বিলটির নাম দেয়া হয়েছে, এইচআর-২১২৩। বিলটি কংগ্রেসে উত্থাপনকালে জো উইলসন বলেন, ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতার মূল শক্তি হিসেবে গণ্য। ভারত রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতিতে কঠোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করবে। বিলটির পক্ষে সমর্থন দেয়ায় আমি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরাম ইউএসআইএসপিএফ’র প্রধান নির্বাহী ও প্রেসিডেন্ট ডক্টর মুকেশ অগ্নিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ তারা এই বিলটির পক্ষে প্রচুর কাজ করেছেন। বিলটির জন্য আরও কাজ করেন কংগ্রেস সদস্য অমি বেড়া। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতাদের মধ্যে অমি বেড়া সবচেয়ে সিনিয়র। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ইন্ডিয়া ককাসের সহ-প্রধান কংগ্রেস সদস্য জর্জ হোল্ডিং ছাড়া ব্রাড শেরম্যান, তুলসি গাবার্ড ও টেড ইয়োহো বিলটির জন্য কাজ করেন। ২০১৭ সালে ‘এনডিএএ’ নামে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে অপর একটি বিল পাস হয়। সেই বিলে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান প্রতিরক্ষা অংশীদার হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। প্রতিরক্ষার পাশাপাশি ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লীর মধ্যে বাণিজ্য, প্রযুক্তিগত অংশীদার হিসেবে গণ্য করা হয়। এইচআর-২১২৩ নামের এই নতুন বিল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্র দফতরের সম্পর্ককে আরও বৃদ্ধি করবে বলে জানিয়েছে ইউএসআইএসপিএফ। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানায়, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ককে একটি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে। কারণ ২০১৭ সালের ওই বিলে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাভোগী দেশের মর্যাদা দেয়নি। তবে এই বিলে অস্ত্র রফতানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তার ন্যাটো মিত্রদেশ এবং ইসরাইল, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানকে যেসব সুবিধা দেয় ভারতকেও সেসব সুবিধার কথা উল্লেখ আছে। ইউএসআইএসপিএফ-এর প্রধান ডক্টর মুকেশ অগ্নি বলেন, বিলটি উত্থাপনের জন্য আমি কংগ্রেস সদস্য জো উইলসনের নেতৃত্বকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে আমরা আশাবাদী যে বিলটি আইনে পরিণত হবে। কারণ এতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রতিরক্ষা সম্পর্কোন্নয়নে এই বিল একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ইউএসআইএসপিএফ চেয়ারম্যান জন চেম্বার বলেন, বিলটির প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আর এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ভবিষ্যত সম্পর্ক আরও উন্নতি হবে। তাই আমি আশা করছি শীঘ্রই বিলটি আইনে পরিণত হোক।
×