ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওরোজ ও নববর্ষের আলোচনা

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

 নওরোজ ও  নববর্ষের আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক আয়োজনে উদযাপণ হলো বাংলাদেশ ও ইরানের নববর্ষ। ইরানী নওরোজ ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও শিল্পকলা একাডেমি শুক্রবার যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনার সঙ্গে নৃত্য-গীতের সমন্বিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সাজানো হয় আয়োজন । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী । বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানী ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাযেম কাহদুয়ী এবং নাট্যজন মামুনুর রশিদ। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সংস্কৃতির স্বার্থে নদী রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সংস্কৃতি বাঁচাতে হলে নদীকে বাঁচাতে হবে। সবকিছু ইট পাথর দিয়ে ঘেরা হয়ে গেলে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি দুর্বল হয়ে যাবে। আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হলে প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে। নদীকে বাঁচাতে হবে। আমাদের গ্রামগুলোকে বাঁচাতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে গেছেন। উন্নত দেশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। দেশ ও প্রকৃতি কিভাবে রক্ষা হবে তার জন্য তিনি পরিকল্পনা নিয়েছেন। সরকার আবহমান গ্রাম বাংলার প্রকৃতিকে রক্ষার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, নওরোয ও পহেলা বৈশাখের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ সাযুজ্য রয়েছে। বেশ কাছাকাছি সময়ের ব্যবধানে ইরান ও বাংলাদেশে বসন্তকালের আগমন ঘটে থাকে। ইরানে নওরোয ২১ মার্চ, আর বাংলাদেশে নববর্ষ উদযাপিত হয় ১ বৈশাখ ১৪ এপ্রিল। ইরানে নওরোযের আনন্দ ও আমেজ থাকে সপ্তাহব্যাপী। আমাদের দেশেও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে গ্রামেগঞ্জে মেলা হয়ে থাকে। মেলায় ওঠে নানা রকম জিনিসপত্র ও খাদ্যসামগ্রী। বিভিন্ন রকম খেলাধুলাসহ আনন্দ উল্লাস হয়ে থাকে। বিগত কয়েক দশক যাবত এটি নগর জীবনেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। অন্য বক্তারা বলেন, নওরোয ইরানীদের সবচেয়ে প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলোর অন্যতম যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ধর্ম, বর্ণ, ভাষা নির্বিশেষে ইরানীদের একে অপরের কাছে টেনেছে। ইরানী জনগণের সংস্কৃতিতে নওরোয বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান ও নিদর্শনে পরিপূর্ণ এবং এটি ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব হিসেবেও বিবেচিত। ইরানীদের মাধ্যমেই নওরোয উৎসব উদযাপনের প্রচলন হলেও এই উৎসব আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইরানের পাশাপাশি এই উৎসব আজ মধ্য এশিয়া থেকে শুরু করে তুরস্ক, ইরাক, ভারত উপমহাদেশ এবং উত্তর আফ্রিকাসহ বিশ্বের আরও অনেক অঞ্চলে তাদের নিজস্ব আচার পদ্ধতিতে উদযাপিত হয়ে থাকে। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাংস্কৃতিক দল।
×