ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদেশে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের রেট হবে এক

প্রকাশিত: ১০:৩০, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

  সারাদেশে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের রেট হবে এক

ফিরোজ মান্না ॥ সারাদেশে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের একই মূল্য নির্ধারণের কাজ চলছে। এ নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে বেশ কিছু সুপারিশ তৈরি করেছে। তবে তার পুরো রিপোর্ট দেয়ার পরেই আমরা ইন্টারনেট এক রেটে নিয়ে আসব। এক দেশ এক রেটই হতে হবে। এক দেশে দুই রকমের দাম হতে পারবে না। দেশের এক অঞ্চলে এক রেট অন্য অঞ্চলে আরেক রেট কিছুতেই হতে পারে না। প্রয়োজনে এ জন্য সরকার ভর্তুকি দেবে। সরকার তো বসেই আছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের জন্য। ভর্তুকি দিয়ে হলেও যদি দেশে দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি হয়, তাহলে এই ভর্তুকি তখন বড় লাভজনক হয়ে উঠবে। সম্প্রতি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ কথা বলেছেন। বর্তমানে এক হাজার ২শ’ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে ব্যান্ডউইথের পরিমাণ তত বাড়ছে। যেসব সমস্যা আছে সেগুলো সমাধান করা হবে, সরকারের পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হবে না, সব মহলের সঙ্গে কথাবার্তা বলেই আমরা গাইড লাইন চূড়ান্ত করব। সমস্যা কোথায় এবং এর সমাধান কী হবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ইন্টারনেট সহজলভ্য করতে ট্রান্সমিশন প্রতিষ্ঠান এনটিটিএন ও ইন্টারনেট সেবাদাতা আইএনপিদের একে অপরকে দোষারোপ না করে সমস্যা সমাধানের কথাও বলেন মন্ত্রী। সরকারের সর্বশেষ নির্বাচনী ইশতেহারে ‘গ্রাম হবে শহর’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গ্রাম শহর হওয়ার মানে হচ্ছে ডিজিটাল গ্রাম হবে, শহরের সুযোগ সুবিধা গ্রামেও পাওয়া যাবে। যে ইন্টারনেট স্পিড শহরে হবে তা গ্রামেরও পাবে। কোন বৈষম্য রাখা হবে না। শহরের বাইরে বাড়তি পয়সা দিতে হবে, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। ট্রান্সমিশন কোম্পানি এনটিটিএনদের জন্য খরচ বাড়ছে। এই খরচ যেন গ্রাহকের ওপর না পড়ে তার জন্য মন্ত্রণালয় চিন্তা ভাবনা করছে। সারাদেশে ইন্টারনেট একই মূল্যে একই হবে। এ নিয়ে কারও কোন প্রকার দ্বিধা থাকার কথা নয়। এটা নিশ্চিতে কাজ শুরু হয়েছে। যদি কোন জায়গায় ভর্তুকি দিতে হয় তাও দেয়া হবে। ছেলেমেয়েরা ভর্তুকি পেয়ে যদি এগিয়ে যায় তাহলে সে জায়গায় অবশ্যই আমরা যাব। ইন্টারনেট সেবায় শুধু অপারেটরদের নয়, এনটিটিএনদেরও ধরতে হবে। যেটুকু অপারেটর ও এনটিটিএনদের ক্ষমতায় আছে তা জনগণকে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে হবে, কোন রকমের অজুহাত দেয়া যাবে না। মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আশাবাদী ’২১ থেকে ’২৩ সালের মধ্যে যে কোনভাবেই ৫জিতে আমাদের যেতেই হবে। প্রযুক্তিতে পিছিয়ে যাওয়ার রিক্স আমরা নিতে পারি না। যে বিজনেস প্ল্যান নিয়ে আপনারা এগিয়েছেন সে বিজনেস প্ল্যান আগামী ১০ বছর থাকবে না। ৫জি অনেক পরিবর্তন আনবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়গুলোতে পরিবর্তন আসবে। গত ১০ বছরে আমরা অনেক দুর এগিয়েছি। আমরা চাই দেশে বিশ্বমানের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ গড়ে উঠুক। গ্রাহকরা ভাল মানের ইন্টারনেট সেবা পাক। ইন্টারনেট এখন কোন বিলাসিতা নয়, এটা এখন মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে চলে গেছে। বিশ্বের অনেক দেশ ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে লাইসেন্স পেয়ে ফাইবার এ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশন্স ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের কাজ করছে। ’১৪ সালে আরও তিনটি (রেলওয়ে, পিজিসিবি, বিটিসিএল) সরকারী কোম্পানিকে ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক লাইসেন্স দেয়া হয়। বিটিআরসির তথ্যমতে, ট্রান্সমিশন কোম্পানি ফাইবার এ্যাট হোমের নিজস্ব ফাইবার ৩৮ হাজার ৩৪৫ কিলোমিটার। এর বাইরে লিজ এবং সোয়াপিংসহ তাদের নেটওয়ার্ক ৪২ হাজার ৪৪১ কিলোমিটারের। সামিটের নিজস্ব ফাইবার ৪০ হাজার ৩৪৫ কিলোমিটারসহ মোট ফাইবার ৪২ হাজার ১৪৫ কিলোমিটার। এর বাইরে রেলওয়ের কাছে আছে দুই হাজার ৫শ’ কিলোমিটার এবং পিজিসিবির ৫ হাজার ৭৭৩ কিলোমিটার ফাইবার। তবে বিটিসিএলের বেশ কয়েক হাজার কিলোমিটার থাকলেও বিটিআরসির কাছে তার কোন হিসাব নেই। এছাড়া অপারেটর বাংলালিংকের ৩ হাজার কিলোমিটার, গ্রামীণফোন ২ হাজার ৭৪৫ কিলোমিটার এবং রবির এক হাজার ৩৩ কিলোমিটার ফাইবার ট্রান্সমিশন রয়েছে। তবে টেলিটকের কোন ফাইবার নেই।
×