ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির রক্ত ঝরিয়ে জয় বার্সিলোনার

প্রকাশিত: ১২:২০, ১২ এপ্রিল ২০১৯

মেসির রক্ত ঝরিয়ে জয় বার্সিলোনার

জাহিদুল আলম জয় ॥ সুপারস্টার লিওনেল মেসির রক্ত বৃথা যায়নি। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে প্রতিপক্ষের মাঠে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ক্ষুদে জাদুকর নাক ফেটে রক্তাক্ত হয়েছেন। এরপরও ম্যাচটি জিতে সেমিফাইনালে খেলার দৌড়ে এগিয়ে গেছে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সিলোনা। বুধবার রাতে ম্যানচেস্টারের ওল্ডট্র্যাফোর্ডে স্বাগতিক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারিয়েছে সফরকারী বার্সা। এর ফলে ইউরোপীয় ফুটবলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে কাতালানরা। ওল্ডট্র্যাফোর্ডে স্বাগতিকদের সঙ্গে এর আগে চারবারের দেখায় দুইবার হেরেছিল বার্সিলোনা। অপর দুই ম্যাচ ড্র হয়। এবার পঞ্চম সাক্ষাতে মেসি গোল না পেলেও খেলেছেন অসাধারণ। বিশেষ করে নাক ফেটে রক্ত ঝরার পরও পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন। শুরুর দিকে ম্যানইউর ডিফেন্ডার লুক শ’র আত্মঘাতী গোলেই স্বস্তির জয় নিয়ে ফিরেছে কাতালানরা। এ কারণে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জোরালো করেছে আর্নেস্টো ভালভার্ডের দল। ১৬ এপ্রিল ঘরের মাঠ ন্যুক্যাম্পে শেষ আটের ফিরতি লেগে ম্যানইউকে আতিথ্য দেবে বার্সা। প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই পরিকল্পিত ফুটবল খেলতে থাকে সফরকারী বার্সিলোনা। তাদের গোছানো ফুটবলের সামনে এলোমেলো হয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাচের ১২ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলের দেখাও পায় ভালভার্ডের দল। ম্যানইউ’র ডি বক্সের বাঁদিক থেকে লুইস সুয়ারেজের উদ্দেশে মাপা ক্রস বাড়ান মেসি। ফাঁকায় থাকা সুয়ারেজ গোলমুখে হেড করেন। ম্যানইউ’র ডিফেন্ডার লুক শ’র গায়ে লেগে বল গোললাইন অতিক্রম করে। সাইডলাইন থেকে লাইনসম্যান প্রথমে অফসাইডের বাঁশি বাজালেও ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের নির্দেশ দেন রেফারি। শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে কিছুটা মারমুখী হয়ে খেলতে থাকে রেড ডেভিলসরা। ম্যাচের ৩১ মিনিটে উড়ে আসা বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা মেসিকে পেছন থেকে এসে ধাক্কা দেন স্বাগতিক ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার ক্রিস স্মলিং। সঙ্গে সঙ্গে নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে মেসির। তবে সাইডলাইনে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আবার মাঠে নেমে পড়েন বার্সা অধিনায়ক। শুধু তাই নয়, রক্ত ঝরার পরও পুরো ম্যাচ খেলেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। বিরতির পরও আধিপত্য বিস্তার করে খেলে বার্সা। ম্যানইউ’র রক্ষণভাগে বারবার হানা দিয়েও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোলবঞ্চিত থাকে কাতালানরা। নাকে ব্যথা পাওয়ার পর এই অর্ধে মেসিকে কিছুটা নিষ্প্রভ মনে হয়। অন্যদিকে ইউনাইটেড বারবার আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিল। তবে বার্সার গোলমুখে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে তাদের সব আক্রমণ। শেষ পর্যন্ত দারুণ জয় নিয়েই ইংলিশভূমি থেকে ফিরেছে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। ঘরের মাঠে হেরে গেলেও অবশ্য হতাশ নয় ম্যানইউ। দলটির বিশ্বকাপ জয়ী ফরাসী তারকা পল পোগবা তো হুঙ্কারই ছেড়েছেন। ম্যাচ শেষে তিনি ন্যুক্যাম্পে ভাল করার আশাবাদ ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, বার্সাকে পিএসজির মতো স্বাদ দিতে চান। এর আগে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে পিএসজির বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারের পর প্যারিসে দারুণ নাটকীয়তায় ভরা ফিরতি পর্বে ৩-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে ম্যানইউ। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ গোলে সমতার পর এ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে থেকে পরের রাউন্ডের টিকেট পায় রেড ডেভিলসরা। শেষ আটে ঘরের মাঠে হারের পর ফিরতি লেগে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস গড়তে চায় দলটি। এ নিয়ে হুঁশিয়ারি জানিয়ে পোগবা বলেন, আমরা জানি কোথায় আমরা তাদের (বার্সা) আঘাত করতে পারি। প্যারিসের ম্যাচটা নিশ্চিত করেই তাদের মাথায় থাকবে। কারণ তারা দেখেছে পিএসজির বিপক্ষে আমরা কি করতে পারি। এদিকে মেসির নাক ফেটে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন বার্সা কোচ ভালভার্ডে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বার্সিলোনা অধিনায়কের আঘাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। ম্যাচের পর দলের সেরা তারকাকে নিয়ে নিজের দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে বার্সা বস বলেন, আঘাত পাওয়ার পর মেসি পুরোপুরি স্বচ্ছন্দ ছিল না। সে কেমন আছে তা বুঝতে পরীক্ষা করতে হবে। অবশ্য সে শক্ত ছিল। কিন্তু তার মুখে পরিষ্কার একটা কালশিটে দাগ আছে। আশাকরি দ্রুতই সে সুস্থ হয়ে উঠবে।
×