ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বসুন্ধরা ৩-২ সাইফ

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় বসুন্ধরা হারাল সাইফকে

প্রকাশিত: ১২:২০, ১২ এপ্রিল ২০১৯

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় বসুন্ধরা হারাল সাইফকে

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী থেকে ॥ কিংস মানেই বসুন্ধরা। এই বসুন্ধরা কিংস তাদের খেলার রসদ কখনও লুকিয়ে রাখে না। আর সেটা দেখাতে কিংসের তারকা খেলোয়াড়রা দর্শক মাতাতে সব রসদ উজাড় করে দিতে কার্পণ্য করেনি। খেলা শুরুর দুই মিনিটের মধ্যেই কিংসরা গোল হজম করলেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের নতুন শক্তি সাইফ ¯েপার্টিং ক্লাব সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি। চৈত্রের খরতাপে কিংসের বৈশাখী ঝড়ে যেন বিধ্বস্ত হলো সাইফ। ৩-২ গোলে হেরেই গেল তারা। জিতে বিপিএল ফুটবলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ স্থানটি ধরে রাখল বসুন্ধরা কিংস। বৃহস্পতিবার কিংস তাদের হোম ভেন্যু নীলফামারীর শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এই জয়ের মধ্যে দিয়ে তাদের জয়রথ ধরে রেখেছে। বসুন্ধরা কিংস ১১ খেলায় ১০টিতে জয় ও একটিতে ড্র করে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লীগের শীর্ষেই আছে। কিংসের হোম ভেন্যু নীলফামারীতে তাদের আরেকটি খেলা বাকি রয়েছে। আগামী ১৮ এপ্রিল কিংসের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম আবাহনী। নীলফামারীর মাঠে এ পর্যন্ত যতগুলো খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবারের খেলাটি ছিল সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। দুই দলের সমর্থক দর্শকদের মন মাতিয়ে দিয়েছে। তাদের খেলা দেখে যেন দর্শকদের গাঁটের পয়সা উসুল হয়েছে। খেলার শুরুতেই সেন্টার হতে সরাসরি বল সাইফের গোলবারে লম্বা কিক মেরে বল পাঠান ড্যানিয়েল কলিনড্রেস। কোস্টারিকার হয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা এই ফরোয়ার্ডের নেয়া আচমকা শটটি সাইফের গোলরক্ষক জিয়া কোনমতে রক্ষা করেন কর্নারের বিনিময়ে। এরপরেই পাল্টা আক্রমণ করে কর্নার পায় সাইফ। ম্যাচের তখন ২ মিনিট। সাইফের কলম্বিয়ান খেলোয়াড় দেইনার কর্দোবা তা থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ( ১-০)। গোল পরিশোধে মরিয়া কিংস একের পর এক পাল্টা আক্রমণ শানায়। এর মধ্যে ১১ মিনিটে সাইফের দলনেতা জামাল ভুঁইয়া কিংসের জালে বল পাঠালেও তা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। ৩১ মিনিটে কিংসের ইমন মাহমুদের কাছ হতে বল পাস পেয়ে তা কাজে লাগিয়ে খেলার সমতা ফিরিয়ে আনেন কিংসের ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় মার্কোস (১-১)। এরপর ৪৩ মিনিটে কিংসের বখতিয়ারের দেয়া হাফভলি করে দেয়া বল কাজে লাগান কিংসের দলনেতা ড্যানিয়েল। এগিয়ে যায় কিংস (২-১)। পাল্টা আক্রমণ চালিয়েও সাইফ বেশকিছু সুযোগ হাতছাড়া করলেও প্রথম হাফের অতিরিক্ত তিন মিনিটের খেলায় কিংসের বখতিয়ার মাঝমাঠ হতে বল নিয়ে সাইফের জালে পাঠালে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-১। দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরু হলে সাইফের খেলোয়াড়রা একের পর এক আক্রমণ করে। তেড়েফুঁড়ে সাইফের দল গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ৫৬ মিনিটে তারা সফলকাম হয়। রহিদুল হাসান রাফি কিংসের জালে বল পাঠালে ব্যবধান কমে আসে (২-৩)। গোল পেয়ে সাইফ আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি। বসুন্ধরাও আর কোন গোল করতে পারেনি। ফলে ৩-২ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বসুন্ধরা কিংস। শেখ রাসেল হারাল রহমতগঞ্জকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের দ্বাদশ রাউন্ড শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট কুড়িয়ে নিয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। তবে জিতলেও পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থানের উন্নতি ঘটাতে পারেনি ২০১২ মৌসুমের লীগ চ্যাম্পিয়ন এবং ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত রাসেল। এখনও তৃতীয় স্থানেই আছে তারা ২৪ পয়েন্ট নিয়ে (৭ জয়, ৩ ড্র ও ১ হার)। একই অবস্থা ‘আইলো’, ‘ডাইলপট্টি’ এবং ‘জায়ান্ট কিলার’ খ্যাত, ১৯৭৭ ঢাকা লীগের রানার্সআপ রহমতগঞ্জেরও। তারা রয়ে গেছে আগের নবম স্থানেই। এটা তাদের চতুর্থ হার। পয়েন্ট ৯। শক্তির বিচারে রহমতগঞ্জ থেকে অনেক এগিয়ে রাসেল। মাঠের লড়াইয়েও তার ব্যত্যয় কিছু দেখা যায়নি। ম্যাচ শুরুর মাত্র ৪ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় তারা। এ্যালেক্স রাফায়েল ডি সিলভার কর্নার বক্সে পেয়ে হেড নেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওদোইন। তার হেড গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন রহমতগঞ্জের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বক্সের মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকা মিডফিল্ডার সোহেল রানা আলতো ছোঁয়ায় বল জালে পাঠিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে গোলোৎসবে মেতে ওঠেন (১-০)। ১৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। উজবেক ফরোয়ার্ড আজিজভ আলীশেরের বাড়িয়ে দেয়া বল জালে ঠেলে দেন ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওদোইন (২-০)। ৩৪ মিনিটে আরও একটা গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন এই নাইজিরিয়ান। বাঁপ্রান্ত থেকে করা তার কোনাকুনি শট সরাসরি গ্রিপে নিয়ে নেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক তিতুমীর চৌধুরী। এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলে রহমতগঞ্জ। তবে শক্তিধর শেখ রাসেলের বিপক্ষে পেরে উঠাটা এতো সহজ ছিল না পুরানো ঢাকার দলটির জন্য। ৪৩ মিনিটে বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে গিয়ে কোনাকুনি শট নেন রহমতগঞ্জের সোহেল রানা। কিন্তু বল পোস্টে রাখতে ব্যর্থ হন। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধে একাধিক আক্রমণ শানায় পুরনো ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ। ৭৩ ও ৮০ তাদের দুটি জোরালো আক্রমণে ভাগ্যক্রমে গোল হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রাসেল।
×