ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অসম্ভবকে সম্ভব করলেন তারা মুর

প্রকাশিত: ১২:১৮, ১২ এপ্রিল ২০১৯

অসম্ভবকে সম্ভব করলেন তারা মুর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্ব টেনিসে একদম অচেনা নাম তারা মুর। যদিওবা গত নয় বছর ধরেই পেশাদার টেনিসে পা রেখেছেন তিনি। তথাপি নামের পাশে নেই কোন ডব্লিউটিএ শিরোপা। সর্বোচ্চ দৌড় গ্র্যান্ডস্লামের দ্বিতীয় রাউন্ড। তবে সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে নয়টি আইটিএফ শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার সান্ডারল্যান্ডে আইটিএফ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর ইভেন্টে খেলতে কোর্টে নেমেছিলেন ২৬ বছরের এই খেলোয়াড়। প্রতিপক্ষ জেসিকা পঞ্চেত। ২২ বছর বয়সী পঞ্চেতও যে খুব একটা নামী খেলোয়াড় তা নয়। তবে খুব একটা পিছিয়েও ছিলেন না এই ফ্রেঞ্চ নারী। ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করে ছিলেন পঞ্চেতই। প্রথম সেটে সরাসরি ৬-০ গেমে হেরে বসেন মুর। টেনিসের ভাষায় যাকে বলে ‘বেগেল’! পরের সেটেও ‘বেগেল’ হজম করার খুব কাছাকাছি ছিলেন মুর। ০-৫ গেমে পিছিয়ে থাকা মুরের হার যেন ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। জয় আর পঞ্চেতের মধ্যে ব্যবধান ছিল শুধু ‘ম্যাচ পয়েন্ট’। কিন্তু বিধাতা ম্যাচের ভাগ্য লিখে রেখেছিলেন অন্যভাবে। ৩০-৪০ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা মুরের ভাগ্যে সম্ভবত হার লেখা ছিল না। সে কারণেই নেটে লেগে বল ‘ল্যান্ড’ করে লাইনে। সেখান থেকে ম্যাচ ‘ডিউস’ করলেন মুর। বাকিটুকু শুধুই ফিরে আসার গল্প। ‘ম্যাচ পয়েন্ট’ মিস করা পঞ্চেত সেই যে পিছিয়ে পড়লেন, আর ফিরতে পারলেন না। টাইব্রেকে গড়ানো দ্বিতীয় সেট মুর জিতেছেন ৯-৭ পয়েন্টে। দ্বিতীয় সেট জেতার পর তৃতীয় সেটে তেমন কোন কষ্টই করতে হয়নি মুরকে। তৃতীয় সেট জিতেছেন ৬-৩ গেমে। সব মিলিয়ে ম্যাচ শেষ হয় ০-৫, ৭-৬ (৯-৭) এবং ৬-৩ গেমে। খেলাধুলায় পিছিয়ে পড়ে ফিরে আসার উদাহরণ আছে অসংখ্য। অন্যান্য খেলার তুলনায় টেনিসে ‘কামব্যাক’ করা একটু কঠিন। তবে টেনিস কোর্টে ঘুরে দাঁড়ানোর তালিকা করলে নিঃসন্দেহে শীর্ষে থাকবে ১৯৮৪ সালের রোঁল গ্যারোঁ ফাইনাল। ইভান লেন্ডল আর জন ম্যাকেনরোর ফাইনালে সেই অসাধারণ কামব্যাক কোন বিশেষণেই বিশেষায়িত করা যায় না। কিন্তু মঙ্গলবার তারা মুর আর জেসিকা পঞ্চেতের ম্যাচ যেন ছাড়িয়ে গেল অতীতের সব গল্প। তবে এভাবে ফিরে আসার পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে কামব্যাক বলতে রাজি নন তারা মুর। নিজের ‘ম্যাচ পয়েন্ট’ বাঁচানোর ভিডিও দিয়ে মুর টুইট করেছেন। সেখানে হংকং বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ খেলোয়াড় লিখেছেন, ‘কখনই সংশয়ে ছিলাম না।’ তিন বছর আগে উইম্বলডনে সুযোগ পেয়েছিলেন তারা মুর। এখন আসলে তার ক্যারিয়ারে পতনই চলছে। দুই বছর আগেও র?্যাঙ্কিংয়ে সেরা ২০০তে ছিলেন তিনি। অথচ বর্তমানে মুরের অবস্থান ৪৭০ নম্বর। এভাবে ফিরে আসাটাকে কামব্যাক না বললেও মুর জানালেন এটা হতে পারে তার ক্যারিয়ারের অনুপ্রেরণার নতুন গল্প। ম্যাচের শেষে মুর বললেন, ‘আমি এখান থেকেই নিজেকে গড়ে তুলতে চাই।’ প্রতিপক্ষের ব্যাপারে তার অভিমত, ‘জেসির (জেসিকা পঞ্চেত) জন্য খুব খারাপ লাগছে। অসাধারণ মাপের খেলোয়াড় সে। আজও খুব ভয়ঙ্কর টেনিস খেলছিল সে। কিন্তু এটাই টেনিস। আমরা এভাবেই টেনিসকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। এর আগে কখনই এমন পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম না আমি। আসলে টেনিসে এমনটা হয়ে থাকে।’ পরের রাউন্ডে তারা মুরের প্রতিপক্ষ ইয়ানা মোর্দারগার। জার্মান বাছাই এদিন ৭-৬ (৩) এবং ৬-২ গেমে পরাজিত করেন রোমানিয়ার এলেনা তিউদোরা কাদেরকে। টেনিস বিশ্বে গত দুই দশক ধরেই রাজত্ব করছেন সেরেনা উইলিয়ামস, ভেনাস উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভা, ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা এবং পেত্রা কেভিতোভার মতো তারকারা। তবে এই মুহূর্তে টেনিস কোর্টে খুব বাজে সময় পার করছেন তারা। গত মৌসুমে তো কোন গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের শিরোপাই জিততে পারেননি সেরেনা-শারাপোভারা।
×