ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য ফাঁস

তিন লাখ টাকার জন্যই শিশু মনিরকে অপহরণ করা হয়েছিল

প্রকাশিত: ১১:২৬, ১২ এপ্রিল ২০১৯

তিন লাখ টাকার জন্যই শিশু মনিরকে অপহরণ করা হয়েছিল

গাফফার খান চৌধুরী ॥ তিন লাখ টাকার জন্যই অপহরণ করা হয়েছিল আট বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্র মনির হোসেনকে। অপহরণের পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও তার এক ছাত্র আকরাম হোসেন মনিরের ওপর নির্যাতন শুরু করে। অপহরণকারীরা নির্যাতন করে ছোট্ট মনিরের কান্না তার পিতামাতাকে শুনিয়ে মানসিকভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করেছিল। যাতে সন্তানের কান্নায় দ্রুত দাবিকৃত টাকা পৌঁছে দেয়। কিন্তু বিধি বাম। মারধরের এক পর্যায়ে মনির জোরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এরপর প্রথমে গলা চেপে ধরে অধ্যক্ষ। গলায় চাপ দেয়ার কারণে কান্নার আওয়াজ বের হচ্ছিল না। কান্না বের না হওয়ায় অধ্যক্ষ মনিরের পিতামাতাকে সন্তানের কান্নার আওয়াজ শোনাতে পারছিল না। আর টাকা আদায়ের জন্য মনিরের কান্নার আওয়াজ তার পিতামাতাকে শোনানো জরুরী মনে করেছিল অধ্যক্ষ। এজন্য অধ্যক্ষ একটি তোয়ালে দিয়ে মনিরের মুখসহ পুরো মাথা পেঁচিয়ে দেয়। যাতে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলেও, তা যেন জোরে না হয়। তোয়ালে পেঁচিয়ে বেশিক্ষণ রাখার এক পর্যায়ে মনিরের মৃত্যু হয়। পরে লাশ বস্তায় ভরে লুকিয়ে রাখা হয়। অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী আকরামকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে ডেমরা থানাধীন মসজিদুল-ই-আয়েশা জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলা থেকে তৃতীয় তলায় উঠার সিঁড়ির চৌকিতে সিমেন্টের বস্তার ভেতর থেকে রশি দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় শিশু মনিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মনির স্থানীয় নূর-ই-মদিনা মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। মনির হত্যার ঘটনায় গত ৯ এপ্রিল রাতে নূর-ই- মদিনা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল জলিল হাদী ওরফে হাদিউজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মোতাবেক হত্যাকা-ে সহযোগিতা করায় তারই মাদ্রাসার দুই ছাত্র মোহাম্মদ তোহা ও আকরাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। ৭ এপ্রিল মনিরকে কৌশলে অপহরণ করা হয়। ডেমরা থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, আসামিদের ঢাকার সিএমএম আদালতে সোপর্দ করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী আকরামকে পঁাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। অপর আসামি তোহার বয়স কম হওয়ায় তার রিমান্ড মঞ্জুর হয়নি।
×