ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙ্গাবালী থানা সড়ক বেহাল ॥ বাড়ছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ১২ এপ্রিল ২০১৯

রাঙ্গাবালী থানা সড়ক বেহাল ॥ বাড়ছে দুর্ঘটনা

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ সড়ক নয় যেন দুর্ঘটনার কারখানা! সড়কটিতে হাঁটলেই হাত-পা ভেঙ্গে যেতে হতে পারে বাড়ি কিংবা হাসপাতালে। কিছুতেই রেহাই মিলছে না এ দুর্ভোগ থেকে। এ অবস্থা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা সদরের থানা সড়কের। ইট উঠে গিয়ে সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পাশেই বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইটের টুকরো। এর মধ্যে চলাচল করছে মানুষসহ নানা ধরনের যানবাহন। রাঙ্গাবালী থানা থেকে শুরু করে পূর্ব বাহেরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এ সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এ বিকট রূপ নিয়েছে। জানা গেছে, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এইচবিবি দ্বারা দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে এলজিইডি। পরে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাকি ১ কিলোমিটারও এইচবিবি সড়ক করা হয়। এতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। যার কারণে চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যেই সড়কের ইটগুলো উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এরপর আর এ সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। এছাড়া আশপাশের লোকজন সড়কের ইট রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যাওয়ার কারণে গর্তের আকার আরও বড় হতে থাকে। দিনের বেলা মানুষ কোনমতে দেখে শুনে চলাচল করলেও রাতের বেলা খানাখন্দে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি যানবাহনও দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। এ সড়কটির ওপর নির্ভর রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছোটবাইশদিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও পূর্ব বাহেরচরের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। শুকনো মৌসুমে কোনভাবে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসীর পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। ঝুঁকিপূর্ণ সড়কটিতে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল করতে না পারায় দূরের পথ থেকে এসে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে কষ্ট হচ্ছে। অনেকের আবার বন্ধ হয়ে যায় স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদর, জেলা সদর ও গলাচিপা নিয়ে যেতে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছে। সড়কটিতে বড় বড় খানাখন্দ থাকায় কৃষকদের কৃষিপণ্য যানবাহন মালিকরা বহন করতে অপারগতা প্রকাশ করে থাকে। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের মাঝখান যেন কূপ এবং জলাশয়ে রূপ নেয়। প্রতিনিয়ত সেখানে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে থাকে। ফলে জনসাধারনের দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করে। রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী বিথি জানায়, তার বাড়ি পূর্ব বাহেরচর এলাকার চর মাদার বুনিয়া গ্রামে। বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় গাড়িতে চড়ে আসা যাওয়া করতে হয়। রাস্তা ভাঙ্গা হওয়ায় গাড়িতে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়। এ ছাড়া, অনেকের হাত-পা ভেঙ্গে গেছে। যে কারণে তারা পায়ে হেঁটে দুই তিন কিলোমিটার পথ পেরিয়ে স্কুলে যায়। এমন দুর্ভোগের চিত্র দিয়েছেন আরও অনেকেই। রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন আবু জানান, রাস্তাটির বেহাল অবস্থা অল্প দিনের নয়। তিন বছর ধরে এ অবস্থায় পড়ে আছে। সামান্য বর্ষা হলেই রাস্তাটি খালে পরিণত হয়। স্কুল-মাদ্রাসাগামী ছাত্র ছাত্রীরা ঠিকভাবে স্কুলে যেতে পারে না। রাস্তাটি এখনই সংস্কার না হলে দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন জানান, এটি রাঙ্গাবালী উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে সংস্কারহীন। নিয়মিত দুর্ঘটনার খবর আসে আমাদের কাছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকেও অবহিত করা হয়েছে। এখানে কার্পেটিং সড়ক প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান মহিব বলেন, রাঙ্গাবালী উপজেলার কোন রাস্তাই কাঁচা এবং সংস্কারহীন থাকবে না। থানা সংলগ্ন ওই সড়ক কার্পেটিং দ্বারা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
×