বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছির খিরতলা গ্রামে হাজার বছরের পুরাতন সমৃদ্ধ নগরীর সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগ। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক রিফাত উর রহমান দীর্ঘ ২-৩ মাস নিমগাছির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এখানকার বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। এই সময় তিনি এখানকার মাটি থেকে পাওয়া বিভিন্ন পুরাকৃর্তি, টেরাকেটা, তৈজসপত্র, স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ দেখে ধারণা করছেন এই জনপদ একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জনপদ। যা হাজার বছরের প্রাচীন এক সমৃদ্ধ নগরী। ১৯৯০ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার পাবনা এবং ১৯৮৪ সালে সৌখিন প্রতœতত্ত্ববিদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া রচিত বাংলাদেশের প্রতœসম্পদ বই-এর রেফারেন্সের মাধ্যমে ধারণা করেন এই স্থানটি নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণা করলে ঐতিহাসিক কোন স্থাপনা এই মাটির নিচ থেকে বেরিয়া আসতে পারে যা জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতœতত্ত্ব নির্দশন হিসেবে আসতে পারে। সেইদিক লক্ষ্য রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের এই বিষয়টি ধারণা দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের মাঠ পর্যায়ে হাতে কলমে শিক্ষা দেয়ার জন্য ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ২য় ব্যাচের একটি প্রতিনিধিদল রায়গঞ্জের ধামাইনগর ইউনিয়নের খিদিরতলা এলাকায় অনুসন্ধান কাজ শুরু করে এবং দুপুর পর্যন্ত তারা ওখানকার বিভিন্ন স্থাপনা দেখেন। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক মোঃ রিফাত-উর-রহমান ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তাড়াশ এবং রায়গঞ্জ উপজেলায় প্রতœতাত্ত্বিক জরিপ এবং অনুসন্ধান করে ইটের নমুনা, মৃৎপাত্রের টুকরা এবং মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই জরিপে বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ তানভীর আহমেদ, শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন এবং প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী ও রাফা সহযোগিতা করেন। এছাড়াও বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের সকল শিক্ষার্থী তাদের পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতœতাত্ত্বিক জরিপে অংশগ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে তাড়াশ এবং রায়গঞ্জ উপজেলার দুটি মানচিত্র তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি মৃত করতোয়া নদীর গতিপথ বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং প্রতœসম্পদ অনুসন্ধানে আসা দলের প্রধান মোঃ রিফাত উর রহমান জানান, বাংলাদেশের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের তথ্য ও স্থান পরিদর্শন করে নিমগাছি পুরাকীর্তির নির্দশন দেখে ধারণা করা হচ্ছে পাল শাসন আমলে এই স্থানটি একটি সমৃদ্ধ নগরী ছিল এবং এই পুরাকীর্তিগুলো বা এই স্থাপনাটি পাল শাসন আমলে নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে এই স্থাপনার বয়স হবে ১ হাজার থেকে ১২ শ’ বছর আগের। তবে এখানে কিছু মুদ্রা পাওয়া গেছে যেগুলো গুপ্ত শাসনামলের।