ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিশুসাহিত্যিক নাসির আলী সম্মাননা পেলেন ৮ গুণী

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ১১ এপ্রিল ২০১৯

শিশুসাহিত্যিক নাসির আলী সম্মাননা পেলেন ৮ গুণী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজীবন সৃজনশীল সাহিত্যচর্চা করে গেছেন বরেণ্য শিশুসাহিত্যিক ও প্রকাশক নওরোজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ নাসির আলী। সাহিত্যে তার অসামান্য অবদানকে স্মরণ করে সম্মাননা পদক প্রবর্তন করেছে মোহাম্মদ নাসির আলী ফাউন্ডেশন। রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইস্ফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ‘শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী সম্মাননা ও পদক ২০১৯’ প্রদান করা হয় দেশের ৮ জন গুণীকে। এরা হলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী (সঙ্গীত), ড. আনোয়ারুল করীম (গবেষণা), লায়লা হাসান (নৃত্য), হাবিবুল্লাহ সিরাজী (কবিতা), আনিসুল হক (কথাসাহিত্য), অধীর বিশ্বাস (প্রকাশনা), ফারুক নওরোজ (ছড়া) ও সমর মজুমদার (অঙ্কনশিল্পী)। নওরোজ সাহিত্য সম্ভার আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাসির আলী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইফতেখার রসুল জর্জ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মিজানুর রহমান বলেন, প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক ও দেশের আধুনিকতম প্রকাশক মরহুম মোহাম্মদ নাসির আলী পেশায় ছিলেন সরকারী চাকুরে কিন্তু প্রবণতায় ছিলেন লেখক। ঢাকায় তার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে নওরোজ। রুচিশীল পাঠক আমাদের দেশে এখন দুর্লভ। আমরা উন্নয়নের জোয়ারে হাবুডুবু খাচ্ছি কিন্তু সত্যিকার অর্থে বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তার কারণেই ঘটছে নানা বিপত্তি। আজ যারা পুরস্কৃত হলেন তারা অবশ্যই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে দেশের জন্য কাজ করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন। তাদের আমি হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাই। দেশে অনেক পুরস্কার আছে, যেগুলোর জন্য মানুষ অনেক ধন্না ধরে থাকেন। কিন্তু এখানে আজ যারা পুরস্কৃত হলেন তারা আলোক-উজ্জ্বল মানুষ। এ জন্য এ পুরস্কার আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের গুণী মানুষদের এখন খুবই প্রয়োজন। শুধু ইমারত গড়লে উন্নয়ন হয় না, মানুষের উন্নয়ন হতে হবে। দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হোক এই প্রত্যাশা করি। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমাদের দেশের একজন গুণী মানুষের নামে পুরস্কার চলছে, এটা আমাদের গর্ব। মোহাম্মদ নাসির আলী ছিলেন শান্ত ও স্থির প্রকৃতির। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তৈরিসহ তিনি ৫২টি বই লিখেছেন। খুবই নিবেদিত-নিঃশব্দ মানুষ ছিলেন তিনি। আমাদের দেশে যারা প্রথম প্রকাশনায় আসেন তাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। আমাদের লেখকদের এখন প্রকাশকদের বাড়িতে যেতে হয়, আগে প্রকাশকরা লেখকের বাড়িতে যেতেন। যাদের সাহিত্যের প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসা আছে, তারাই এখন প্রকাশক আছেন। এজন্য এখনও আমাদের দেশে কিছু কিছু ভাল বই বেরুচ্ছে। আজ যারা পুরস্কৃত হলেন, তাদের প্রত্যেকের সংস্কৃতিতে অবদান রয়েছে। সত্যিকার অর্থে নিষ্ঠাবান মানুষ আমাদের সমাজে কমে যাচ্ছে। যারা সংস্কৃতি জগত থেকে বিদায় নিচ্ছে তাদের মতো আর নতুন করে পাওয়া কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনুষ্ঠানের শুরুতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের উত্তরীয়, পদক ও ক্রেস্ট প্রদান করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন সীমা ইসলাম। মোহাম্মদ নাসির আলীর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন তানিয়া নন্দিনী।
×