ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ১১ এপ্রিল ২০১৯

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা

রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের কোন খবর শুনলেই আঁতকে উঠতে হয়। কারণ এই শহরে আমারও কিছু প্রিয়জন থাকে। যখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে তখন কারও না কারও প্রিয়জনই তো সেই দুর্ঘটনার শিকার হন। প্রতিটি মানুষই তাদের জীবনের মূল্য বোঝে। নিজের জানমালের নিরাপত্তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তো কিছুই হতে পারে না। কিন্তু তারপরও আমরা বিষয়গুলো এড়িয়ে চলি। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু মানুষই পুড়ে মরে না। চোখের সামনেই ছাই হয়ে যায় স্বপ্ন, সঙ্গে বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকুও। পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ফলে প্রাণহানির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন। তারপর আবার গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের পাশে কাঁচাবাজারে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় দোকানগুলো। শুধু এটাই নয়, এর আগেও ঘটেছে এমন দুর্ঘটনা। ২০১৭ সালে ওই মার্কেটে আগুন লাগার পর অগ্নি নিরাপত্তার জন্য মার্কেট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হলেও তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে ঘটল মর্মান্তিক আরও একটি অগ্নিকাণ্ড। রাজধানীর বেশির ভাগ ভবনই বিল্ডিং কোড ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই গড়ে উঠেছে। এমনটিই বেরিয়ে এসেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাম্প্রতিক জরিপে। বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নিরাপত্তা পরিকল্পনার অনুমোদন নেয়া ব্যাধ্যতামূলক হলেও বানানীর এফআর টাওয়ারের ছিল না সে অনুমোদন। শুধু তাই নয় রাজধানীর হাজার হাজার ভবন রয়েছে এমন ঝুঁকিতে। যেখানে নেই পর্যাপ্ত অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা। যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, হাসপাতাল ইত্যাদি। অথচ এত দুর্ঘটনা ঘটার পরও যথেষ্ট সক্রিয় উদ্যোগ নেয়ার বিষয়টি নজওে আসছে না! এসব ভবন কর্তৃপক্ষকে অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেয়া হয় না। অগ্নিদুর্ঘটনার জন্য অনেকটা দায়ী আমরা নিজেরাই। কারণ, একটি বহুতল তৈরি করতে যে নীতিমালাগুলো মেনে ভবন তৈরি করতে হবে সেগুলো না মেনেই তৈরি করা হচ্ছে বহুতল ভবন। সেখানে থাকছে না কোন পরিকল্পনা, থাকছে না অগ্নি নিরাপত্তার মতো ব্যবস্থাও। বার বার অগ্নিকাণ্ডের মতো এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়াতে শুধুমাত্র সরকারের উদ্যোগ নেয়াটাই যথেষ্ট নয় বরং আন্তরিক হতে হবে আমাদের সবাইকে। ভবন তৈরির ক্ষেত্রে নির্ধারিত নীতিমালা মানতে হবে। আমরা আর কোন অগ্নিকাণ্ড চাই না। চাই না বিভৎস মৃত্যু, চোখের সামনে রঙিন স্বপ্নগুলো পুড়ে ছাই না হোক। অগ্নিকাণ্ডসহ অন্যান্য ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোন আপোস নয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×