ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তুরাগ তীরে উচ্ছেদ অভিযান, ক্ষতিপূরণ দাবি বৈধ মালিকদের

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ১০ এপ্রিল ২০১৯

তুরাগ তীরে উচ্ছেদ অভিযান, ক্ষতিপূরণ দাবি বৈধ মালিকদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তুরাগ নদের দুই তীরে চূড়ান্ত পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযানে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুইটি পার্কসহ ঊনত্রিশটি অবৈধ স্থাপনা। অভিযানকালে এক লাখ টাকা জরিমানা ছাড়াও জব্দ করা মালামাল প্রায় দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পুরো এপ্রিল মাস জুড়েই চলবে এ অভিযান। এদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকালে ভাঙ্গা পড়া বৈধ স্থাপনার মালিকরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে তুরাগ নদের তীরে সমাবেশ করেছেন। মঙ্গলবার সকালে বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রক একেএম আরিফ উদ্দিনের সার্বিক নির্দেশনায় সাভার থানাধীন বিরুলিয়া এলাকার বড়কাঁকর, বিরুলিয়া ব্রিজের ঢালসহ পঞ্চবটি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে তুরাগ নদের প্রায় ২ একর তীরবর্তী ভূমি অবৈধ দখল থেকে অবমুক্ত করা হয়। অবৈধ স্থাপনা হিসেবে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অব ইনজিনিয়ারিং (এনডিই) নামের রেডিমিক্স কোম্পানির মজুদ করা পাথর, বালু ও বালু সরানোর কাজে ব্যবহৃত এস্কেভেটর নিলামে প্রায় দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকালে বৈধ স্থাপনা ভাঙ্গা পড়ায় তুরাগ তীরে সাভার থানাধীন কাউন্দিয়া ইউনিয়নের বাঘসাত্রা ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ হয়েছে। এতে ঢাকার মিরপুরের দিয়াবাড়ি, দারুসসালাম থানাধীন ছোট দিয়াবাড়ি ও কাউন্দিয়া ইউনিয়নের তুরাগ নদ লাগোয়া কয়েকটি গ্রামের অন্তত এক হাজার মানুষ অংশ নেন। সভায় কাউন্দিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শান্ত খান বলেন, ‘আমরা নদের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পক্ষে। তবে উচ্ছেদ অভিযান সঠিকভাবে হচ্ছে না। উচ্ছেদ অভিযানের সময় সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত টাকায় করা একটি সরকারী রাস্তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এতে জনগণ মারাত্মক অসুবিধায় পড়েছে।’ বিষয়টি বলতে গেলে তাকে পরিকল্পিতভাবে একটি মহল ভূমিদস্যু আখ্যা দিয়ে পোস্টার ছাপিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে দিয়েছে। কাউন্দিয়ার একজন সাবেক চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় উচ্ছেদ অভিযানকে নিয়ে রীতিমত অপরাজনীতি চলছে। এ্যাডভোকেট আবদুল আজিজ বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে নিয়ম মানা হচ্ছে না। সীমানা পিলারের যেটুকু ভেতরে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কথা, তার চেয়েও বেশি ভেতরে অভিযান চালানো হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র একটি চিঠির নির্দেশনার বরাত দিয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতা জুয়েল বলেন, ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয় বা ভবিষ্যতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হতে পারে এমন জায়গায় খনন কাজ পরিচালনা করা যাবে না। তা মানা হচ্ছে না। কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মেম্বার আবু তালেব বলেন, এমন নির্দেশনা থাকার পরেও নদের কাছে থাকা তার মৎস্য খামারের মাটির রাস্তা কেটে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। অথচ রাস্তার উপরে কোন স্থাপনা ছিল না। রাস্তা কেটে দেয়ার কারণে তার খামারের ২৫ লাখ টাকার মাছের মধ্যে কিছুটা লুটপাট হয়েছে। বাকিটা নদীতে চলে গেছে। রাস্তা কেটে দেয়ায় পাশেই থাকা শ্মশান ঘাটটি রীতিমত ঝুঁকির মধ্যে আছে। যেকোন সময় পাড় ভেঙ্গে সেটি নদে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
×