ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মহাসড়ক যেন ফসলের মাঠ

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ১০ এপ্রিল ২০১৯

মহাসড়ক যেন ফসলের মাঠ

বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের ৯ কিলোমিটার সড়ক উত্তরাঞ্চলের আট জেলার যাত্রীদের জন্য বিপদসঙ্কুল হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টি-কাদায় মহাসড়কটি যেন ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। যানজট আর দুর্ঘটনা আতঙ্ক নিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে হচ্ছে যাত্রীদের। সরেজিমনে পরিবহন চালক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও দক্ষিণাঞ্চলের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার যাতায়াতের প্রধান রুট হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক। সম্প্রতি মহাসড়কটির দুই প্রান্তের বেশিরভাগ অংশ সংস্কার করা হয়েছে। তবে মাঝখানের অংশ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার খালকুলা থেকে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা ১০ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় এখনও সংস্কার শুরু“ করা হয়নি। যানবাহনগুলো পুরো রাস্তা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারলেও এই ৯ কিলোমিটারে এসেই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যান চালক ও যাত্রীদের। সড়কের কোন কোন অংশে বৃহৎ বৃহৎ গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে ওই গর্তগুলো পানি আর কাদায় পূর্ণ হয়ে পরিণত হয়েছে ফসলি জমিতে। এছাড়াও সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য খানা-খন্দ রয়েছে। বিশেষ করে মহিষলুটি বাজারের পূর্ব পাশে সৃষ্ট হওয়া বিশাল আকারের গর্তটি যাত্রীদের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা আরও বলেন, এ মহাসড়কে পাশ দিয়ে থ্রি-হুইলার যান চলাচলের অপর সড়কটিরও বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সাইট এ রুটটিতে যান চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাসচালক হাবিবুর রহমান, সাইদুল ইসলাম, আব্দুল মতিন, ট্রাকচালক রুবেল, আওয়ালসহ পরিবহন শ্রমিকরা বলেন, হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কটি অনেকদিন ধরেই দুর্ভোগের মহাসড়ক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার পারভেজ জানান, হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে কাছিকাটা টোলপ্লাজা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার মহাসড়ক সিরাজগঞ্জ সওজের আওতায় রয়েছে। ইতোমধ্যে এই রাস্তার ১৬ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। বাকি ৯ কিলোমিটার রাস্তার জন্য অধিদফতরে আলাদা প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। পিরিওডিক মেইনটেইনেন্স প্রোগ্রামের (পিএমপি) আওতায় এই রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনাটি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পের প্রস্তাবনাটি ফিরে এসেছে। আবার ডিজাইন করে পাঠাতে বলা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের সার্ভে কাজ চলছে। তবে এই অর্থবছরে এই প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। আগামী অর্থবছরে প্রকল্পটির অনুমোদন হলে এ মহাসড়কের বাকি ৯ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার শুরু হবে। ঈশ্বরদীতে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল তৌহিদ আক্তার পান্না ঈশ্বরদী থেকে জানান, সওজ, এলজিইডি ও পৌরসভা মিলে প্রায় ১৩শ’ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়কের প্রায় একশটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের বেহাল দশা দীর্ঘদিন। এর মধ্যে পৌরসভার কাঁচা পাকা মিলে প্রায় ১’শ ৫কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক রয়েছে। সওজের কাঁচা পাকা মিলে প্রায় একশ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক রয়েছে এবং এলজিইডিরও রয়েছে প্রায় তিন শ’ কিলোমিটার কাঁচা পাকা সড়ক-মহাসড়ক। এসব কারণে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনকে মালামাল ও যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি যানবাহনগুলোর অবস্থাও নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অচল হয়ে পড়ায় মালিকরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। রেলগেট থেকে বাজার রোড, রেলগেট থেকে পাবনা রোড, আলহাজ মোড় থেকে নতুন হাট মোড়, লালন শাহ সেতু থেকে দাশুড়িয়া হয়ে ঢাকা বিশ্বরোড, দাশুড়িয়া থেকে পাবনা রোড, আওতা পাড়া থেকে চরগড়গড়ি রোড, রূপপুর মোড় থেকে তালতলা রোড, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বাড়ির সামনের শেখ সাদী ও শেরশা রোড দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়ক নির্মাণ ও মেরামতে ঘাপলা থাকায় অল্প দিনেই সড়কগুলোর বেহাল দশায় পরিণত হয়। ফলে প্রত্যেকটি মানুষ ও যানবাহন নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।
×