ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপদ সড়কের লক্ষ্যে লিখিত মতামত চেয়েছে বিআরটিএ

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ৯ এপ্রিল ২০১৯

নিরাপদ সড়কের লক্ষ্যে লিখিত মতামত চেয়েছে বিআরটিএ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদার ও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির ১১১ সুপারিশ তুলে ধরে সকলের মতামতের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়েছে। চলতি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত যে কেউ মতামত দিতে পারবেন। তবে অন্যান্য সময় বিআরটিএ ওয়েবসাইটে সরাসরি মতামত দেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও এবার ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছে সংস্থাটি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান বরাবর ই-মেইল অথবা লিখিত মতামত বিআরটিএ কার্যালয়ে পাঠাতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথিরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মোঃ মশিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত সকলের মতামতের জন্য দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলকে এই মর্মে অবহিত করা যাচ্ছে যে- জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৬তম সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। প্রস্তুতকৃত খসড়া প্রতিবেদনটির ওপর সর্বসাধারণের মতামত প্রদানের জন্য বিআরটিএ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। খসড়া প্রতিবেদনের ওপর ২৫ এপ্রিলের মধ্যে মতামত প্রদানের জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। বিআরটিএ ওয়েবসাইটে দেখা যায় ‘মতামত আহ্বান’ শিরোনামে ৫৮ পৃষ্ঠার খসড়া প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘...খসড়া প্রতিবেদনের ওপর আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে আপনার মতামত বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর ই-মেইলে (পযধরৎসধহ@নৎঃধ.মড়া.নফ) অথবা লিখিত আকারে প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো’। বিআরটিএ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার আগে বিআরটিএ ওয়েবসাইটে সকলের মতামতের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়েছিল। বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা ওয়েবসাইটে সরাসরি মতামত দেন। কিন্তু এবার সেই সুযোগ থাকছে না। তাছাড়া কতজন মতামত দিয়েছেন, মতামতের ধরণও দেখার কোন সুযোগ নেই। তাই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সরাসরি মতামতের সুযোগ নিশ্চিত করা হলে অনেকেই মতামত দিতে আগ্রহী হবেন। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ বেরিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে। প্রতিবেদনকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে। গত বুধবার সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টায় সাবেক নৌমন্ত্রী-শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ১১১ দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদনের খসড়া চূড়ান্ত করে। বিআরটিএ কার্যালয়ে খসড়া সুপারিশের ওপর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে ২৩ সদস্যের কমিটির অনেকেই ছিলেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খসড়া প্রতিবেদনটি বিআরটিএ ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে সকলের মতামতের জন্য। ১৫ দিন পর তা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি সংসদ সদস্য শাজাহান খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চলমান সমসাময়িক ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো সড়ক দুর্ঘটনা এবং সড়কের নিরাপত্তা। এর সমাধান করা এখন ‘নৈতিক দায়িত্ব’ হয়ে পড়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ১৫ দিনের সময় দিয়ে সুপারিশগুলো জনসাধারণের মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব। ওই ১৫ দিনের মধ্যে আমরা আশা করি মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব। তার মতামত নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব। কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটে প্রস্তাবিত সুপারিশের বাইরে যেসব মতামত আসবে সেগুলো যাচাই বাছাই হবে। এরমধ্যে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্ব বিবেচনায় মতামত প্রাধান্য দিয়ে প্রস্তাবে যুক্ত করা হবে। এরপর জমা দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনা এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি’র ওই খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। গতবছর জুলাই মাসে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনে পরিবহন খাতের বিভিন্ন স্তরে বিশৃঙ্খলার বিষয়গুলো নতুন করে সামনে চলে আসে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সে সময় সড়ক দুর্ঘটনাকে সরকারের ‘সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনার বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
×