ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মালয়েশিয়ায় বাস খাদে, পাঁচ বাংলাদেশীসহ নিহত ১১

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৯ এপ্রিল ২০১৯

মালয়েশিয়ায় বাস খাদে, পাঁচ বাংলাদেশীসহ নিহত ১১

বিডিনিউজ ॥ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শ্রমিক বহনকারী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নালায় পড়ে পাঁচ বাংলাদেশীসহ ১১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৩৩ জন। রবিবার রাত ১১টার দিকে সেপাংয়ে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে মালয়েশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তিন নারীসহ দশজনই বিদেশী কর্মী। তাদের মধ্যে পাঁচ বাংলাদেশী, তিন ইন্দোনেশীয় এবং দুজন নেপালী। নিহত অন্যজন মালয়েশিয়ার নাগরিক, তিনি ওই বাসের চালক ছিলেন। নিহত বাংলাদেশীরা হলেন- মোঃ রাজিব মুনশী (২৬), মোঃ সোহেল (২৪), মহিন (৩৭), আল আমিন (২৫), গোলাম মোস্তফা (২২)। আহতদের স্থানীয় তিনটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সাত বাংলাদেশী হলেন মোঃ নাজমুল হক (২১), মোঃ রজবুল ইসলাম (৪৩), ইমরান হোসাইন (২১) সেরডাং হাসপাতালে এবং জাহিদ হাসান (২১), সামিম আলী (৩২), মোহাম্মদ ইউনূস (২৭) ও মোঃ রাকিব (২৪) পুত্রাজায়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো লিখেছে, কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের এমএএস কার্গো কমপ্লেক্সের ৪৩ কর্মী ছিলেন ওই বাসে। রাতের পালার ডিউটির জন্য বিভিন্ন হোস্টেল থেকে তাদের নিয়ে কার্গো কমপ্লেক্সে যাওয়ার সময় বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে। চাকা পিছলে গিয়ে বাসের সামনের অংশ রাস্তার পাশের গভীর নালায় পড়ে যায়। পুলিশ ও এমএএস কার্গো কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে স্ট্রেইটস টাইমস জানায়, ওই বাসের মালয়েশীয় চালক এবং আট বিদেশী শ্রমিক ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। জেলা পুলিশের সহকারী কমিশনার জুলফিকার আদমশাহ বলেন, আমরা দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। ফায়ার এ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ ফাদিল সালেহ বলেন, তারা ওই দুর্ঘটনার খবর পান রাত সোয়া ১১টার দিকে। আরোহীরা ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। বাসের কয়েকটি অংশ কেটে তাদের বের করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর থেকে জানান, মালয়েশিয়ার কুয়ালালমপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ বাংলাদেশীর মধ্যে ২ জনের বাড়িই চাঁদপুরে। এর মধ্যে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের বসির মেম্বারের বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ সোহেল (২৪) ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাগল গ্রামের মাওলানা আমির হোসেনের ছেলে আল আমিন (২৫)। তারা দু’জনেই ৭ মাস পূর্বে কোম্পানির ভিসায় জীবিকার সন্ধানে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। ফরিদগঞ্জের নিহত আল আমিন তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। মাত্র ৭ মাস আগে পাশের বাড়ির মিলন গাজীর ছেলে রাসেলের সঙ্গে আল আমিন জীবিকার সন্ধানে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যান। অপরদিকে হাজীগঞ্জের দেবীপুর গ্রামের মোঃ সোহেল ১ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। সেও মাত্র ৭ মাস পূর্বে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে জীবিকার সন্ধানে পাড়ি জমান। ৭ এপ্রিল রাতে দুর্ঘটনা ঘটার পর সোমবার সকালে আল আমিন ও সোহেলের বাড়িতে মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছে। এ সময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তবে মালয়েশিয়া কমিউনিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাউসার হামিদ হান্নান জানান, আমরা মৃত ২ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। এ ঘটনায় আরও কয়েজন বাংলাদেশী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে মহিন (২৬) নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
×