ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এবার ববি কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের ১২ দফা দাবি

প্রকাশিত: ১০:২৬, ৮ এপ্রিল ২০১৯

 এবার ববি কর্মচারী  কল্যাণ পরিষদের ১২ দফা দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ১৩ দিনের চলমান আন্দোলনের মধ্যে এবার রবিবার সকালে মানববন্ধন করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ। পরিষদের সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান জানান, ১২ দফা দাবিতে সকাল সাড়ে দশটায় তারা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন। তিনি আরও বলেন, বিগত দিনগুলোতে আমাদের বিভিন্ন দাবি পূরণের জন্য জানিয়ে এলেও তা আজও কার্যকর করা হয়নি। যে কারণে আমাদের বেতন বৈষম্য দূর করাসহ ১২ দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। এ সময় বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী শরীফ, সাবেক সভাপতি শাহাজাদা খান, মোঃ পারভেজ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, তিন বছর থেকে তারা দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে আসলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নীতিমালা সংশোধন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সরাসরি নিয়োগের ৬০% অভ্যন্তরীণভাবে পদসহ পদোন্নতি বিধান করতে হবে। যা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রদান করতে হবে। পদোন্নতির বয়স হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা না থাকলে শুধুমাত্র গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। সময় উপযোগী সার্ভিস রুল প্রণয়ন করতে হবে। অতিরিক্ত সময়ে কাজের মজুরি হবে বেসিক হারে এবং রাত্রিকালীন ভাতা প্রদানসহ সকল প্রকার পারিতোষিকে ভাতা প্রদান করতে হবে। অনুমোদনের মাধ্যমে অর্জনকৃত সকল সনদপত্র নথিভুক্তির পর দুটি ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা এবং নথিভুক্তির জন্য অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত ববির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালুর ঘোষণার পরও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। রবিবার সকাল ১০টায় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কনে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলার প্রধান ফটক আটকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগেই মৌখিক আশ্বাসের আস্থার বিষয়টি হারিয়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, ১২ দিন ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুরু থেকেই যেহেতু এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এদিকে শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিসে শনিবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা একাডেমিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান নিলেও প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। পাশাপাশি সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল তাদের কার্যক্রম শুরু করলেও বাসগুলোতে আশানুরূপ শিক্ষার্থীর দেখা মেলেনি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান হেনা রানী বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চালুর ঘোষণা অনুযায়ী সকালেই শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসেছেন। ক্লাসও শুরু হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে তারা ভেতরে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বোঝানো হয়েছে কিন্তু তারা লিখিত না পেয়ে আমাদের ভেতরে যেতে দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, টানা ১৩ দিনের কর্মসূচীতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা তারা পুষিয়ে নিতে পারবেন।
×