ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৯ মাসে প্রবৃদ্ধি ১২.৫৭ শতাংশ

রফতানি আয় ৩ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ৮ এপ্রিল ২০১৯

রফতানি আয় ৩ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পণ্য রফতানিতে বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৩ হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.২০ শতাংশ বেশি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রবিবার পণ্য রফতানি আয়ের যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, তৈরি পোশাক রফতানিতে ভাল প্রবৃদ্ধি হওয়ার কারণে সামগ্রিক পণ্য রফতানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে পোশাক রফতানি থেকে আয় এসেছে আড়াই হাজার কোটি ডলারের বেশি। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। একক মাস হিসেবে গত মার্চ মাসে ৩৩৪ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯.৩৫ শতাংশ বেশি। ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। এরমধ্যে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রফতানি আয় এসেছে ৩ হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বিগত অর্থবছরের তুলনায় এই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যদিও এই ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার কোটি ডলারেরও কম। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে গত মার্চ মাসে ৩৩৪ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এটি বিগত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ৯ দশমকি ৩৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের মার্চ মাসে রফতানি হয়েছিল ৩০৫ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের পণ্য। চলতি অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) সময়ের ৯ মাসে মোট রফতানি আয়ে পোশাকের অবদান ৮৩ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রফতানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৮ শতাংশেরও বেশি হবে। ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, তৈরি পোশাক খাত থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে তৈরি পোশাক খাতে পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৫৯৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের তুলনায় এ খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রফতানিতে ১ হাজার ২৮০ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত অর্থবছরের তুলনায় গত ৯ মাসে নিটওয়্যার খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন গার্মেন্ট পণ্য রফতানিতে ১ হাজার ৩১৫ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ। রফতানিকারকরা বলছেন, রফতানি আয়ে সুখবর নিয়েই অর্থবছর শুরু হয়েছিল। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এর মূল কারণ দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক রফতানিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অন্যান্য খাতেরও আয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এর ফলে রফতানিতে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। তাদের প্রত্যাশা বছরের পরবর্তী মাসগুলোতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আর ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে কৃষিপণ্য রফতানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৭২ কোটি ২৭ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ সময়ে আয় হয়েছে ৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি। গত ৯ মাসে হোম টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা দুটিই কমেছে। এ সময় আয় এসেছে ৬৪ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। গত ৯ মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে। একই সঙ্গে অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় এসেছে ৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এছাড়া চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধিও গত বছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ কম হয়েছে। এ সময়ে আয় হয়েছে ৭৭ কোটি ১৬ লাখ ডলার।
×