ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে আবার শীর্ষে লিভারপুল

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ৭ এপ্রিল ২০১৯

 ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে আবার শীর্ষে লিভারপুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে লিভারপুল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে শুক্রবার পিছিয়ে পড়েও জার্গেন ক্লপের দল শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে পরাজিত করেছে সাউদাম্পটনকে। সেই সঙ্গে ম্যানচেস্টার সিটিকে টপকে আবারও প্রিমিয়ার লীগে শীর্ষে উঠে এসেছে লিভারপুল। ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহ আর জর্ডান হেন্ডারসন দুই গোলের সৌজন্যেই এদিন বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্গেন ক্লপের দল। অথচ সেন্ট মেরিস স্টেডিয়ামে এদিন দুর্দান্ত শুরু করে স্বাগতিক সাউদাম্পটন। ম্যাচ শুরুর ৯ মিনিটেই শেন লংয়ের গোলে প্রথম এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৩৬ মিনিটে লিভাপুলকে সমতায় ফেরান নেবি কিয়েটা। গিনির ২৪ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারের লিভারপুলের জার্সিতে এটাই ক্যারিয়ারের প্রথম গোল। এরপর ৮০ ও ৮৬ মিনিটে সালাহ ও হেন্ডারসনের গোলে সফরকারীদের জয় নিশ্চিত হয়। সেই সঙ্গে ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে দুই পয়েন্ট এগিয়ে গিয়ে লীগ টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করে অল রেডরা। যদিও সিটির হাতে এখনও এক ম্যাচ বেশি আছে। ফুলহ্যাম ও টটেনহ্যামের বিপক্ষে শেষ দুটি ম্যাচেও শেষ মুহূর্তের গোলেই লিভারপুলের জয় নিশ্চিত হয়েছিল। তবে সিটির কাছ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা ছিনিয়ে নেবার দৌড়ে যেন সমান তালেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ক্লপের শিষ্যরা। লিভারপুলের বিপক্ষে টেবিলের তলানির থেকে চতুর্থ স্থানে আর রেলিগেশন জোন থেকে পাঁচ পয়েন্ট ওপরে থেকে ম্যাচ শুরু করেছিল সাউদাম্পটন। ডিসেম্বরে নতুন কোচ হিসেবে রালফ হাসেনহাটেল দায়িত্ব নেবার পর এই প্রথম টানা শেষ দুটি ম্যাচে জয়ী হয়েছিল সাউদাম্পটন। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই যেন লিভারপুলের বিপক্ষে দুর্দান্ত শুরু করে সাউদাম্পটন। প্রথমার্ধের ৯ মিনিটে রায়ান বারট্রান্ডের ক্রস থেকে পিয়েরে-এমিলে হোলবার্গ বক্সের ভিতর বল পেয়ে তা বাড়িয়ে দেন লংয়ের কাছে। দারুণ নিয়ন্ত্রণে বল জালে জড়ান লং। প্রিমিয়ার লীগে শেষ ৫০ ম্যাচে এটা লংয়ের চতুর্থ গোল। অভিজ্ঞ এই আইরিশম্যানের এটি অবশ্য ৫০তম প্রিমিয়ার লীগ গোল। বার্টান্ডের আরেকটি বিপজ্জনক ক্রস থেকে লং দ্রুতই দ্বিতীয় গোল পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভার্জিল ভ্যান ডিকের দক্ষতায় সে যাত্রা রক্ষা পায় লিভারপুল। গত গ্রীষ্মে আরবি লিপজিগ থেকে ৫৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে লিভারপুলে যোগ দেন কেইটা। এরপর অবশ্য নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। তবে সাউদাম্পটনের বিপক্ষেই নিজেকে মেলে ধরলেন দারুণভাবে। বিরতির ৯ মিনিট আগে লিভারপুলকে সমতায় ফেরাতে দুর্দান্ত এক গোল করেন গিনির এই মিডফিল্ডার। যদিও এই গোলে সালাহ’র অফসাইড পজিশন নিয়ে আপত্তি তুলেছিল সাউদাম্পটন। তবে শেষ পর্যন্ত কাজে লাগেনি তা। বিরতির পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নিজেদের করে নেয় লিভারপুল। তবে দ্বিতীয় গোলের জন্য সফরকারীদের অপেক্ষা করতে হয় ৮০ মিনিট পর্যন্ত। সাউদাম্পটনের কর্নার থেকে কাউন্টার এ্যাটাকে হেন্ডারসনের পাস থেকে কার্লিং শটে গোল করে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন মোহাম্মদ সালাহ। গত নয় ম্যাচে এটি ছিল মিসরীয় তারকার প্রথম গোল। মূল একাদশে না থাকলেও বদলি খেলোয়াড় হিসেবে ক্লপকে হতাশ করেননি অধিনায়ক হেন্ডারসন। রবার্তো ফিরমিনোর লো ক্রসে ৮৬ মিনিটে দলের মূল্যবান তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন তিনি। সাউদাম্পটনের জালে বল জড়িয়ে নতুন একটা রেকর্ডও গড়লেন মোহাম্মদ সালাহ। প্রিমিয়ার লীগে লিভারপুলের হয়ে দ্রুততম ৫০ গোলের রেকর্ড গড়লেন তিনি। অথচ সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সবধরনের প্রতিযোগিতায় টানা আট ম্যাচে গোলবঞ্চিত ছিলেন লিভারপুলের এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড। দ্রুততম সময়ে অর্ধশতক গোল করতে সালাহ খেলেছেন ৬৯টি ম্যাচ। ৭২ ম্যাচ খেলে ৫০ গোল করে এই তালিকায় এতদিন পর্যন্ত শীর্ষে ছিলেন ফার্নান্দো টোরেস। লিভারপুলের হয়ে ৮৬ ম্যাচে ৫০ গোল করে এখন তৃতীয় স্থানে চলে গেছেন ক্লাবের সাবেক তারকা লুইস সুয়ারেজ। এছাড়া রবি ফ্লাওয়ার খেলেছেন ৮৮ ম্যাচ। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গোল দেয়ার পর সাধারণত গোলদাতাকেই খুঁজে নেয় সতীর্থরা। প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়ে ফুটবলাররা যখন মাঠের এক কোণায় গিয়ে উদযাপন করতে থাকেন, তাতে সঙ্গী হন দলের বাকি সদস্যরাও। তবে ব্যতিক্রম ঘটনাও ঘটে থাকে কখনও কখনও। অনেকে আবার গোল দিয়ে সতীর্থদের কাছে ধরা না দিতেই যেন বেশি পছন্দ করেন। শুক্রবার রেকর্ড গোল করে এমনই উদযাপন করতে দেখা গেল মোহাম্মদ সালাহকে। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে জার্সি খুলেই দৌড় শুরু করেন লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ড। এ সময় তার পেছনে দৌড়াতে থাকেন সতীর্থ রবার্টসন। সামনে থেকে আসতে থাকেন হেন্ডারসন। দু’জনকেই বোকা বানিয়েছেন সালাহ। বরার্টসন ও হেন্ডারসন জড়িয়ে ধরবেন, এমন সময় ভেল্কি দিয়ে বেরিয়ে যান সালাহ। বরার্টসন ও হেন্ডারসন একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন। যা দেখে অন্য সতীর্থরা হাসতে থাকেন।
×