ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জ্বলে উঠতে ‘কোটা’ তুলে দিল প্রোটিয়ারা!

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৭ এপ্রিল ২০১৯

  জ্বলে উঠতে ‘কোটা’ তুলে দিল প্রোটিয়ারা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্ণবাদের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৯৯২ সালে প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই বিশ্ব ক্রিকেটে আলোচিত নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিটি মৌসুমে, প্রতিটি বিশ্বকাপে অসাধারণ এক দল। হ্যান্সি ক্রনিয়ে, গ্রায়েম স্মিথ কিংবা এবি ডি ভিলিয়ার্স- ২৭ বছরে প্রোটিয়া ক্রিকেটের সেরা প্রজন্ম বেছে নিতে যে কেউ হিমশিম খাবেন। অথচ বৈষয়িক টুর্নামেন্ট এলেই সব এলোমেলো। কখনও শেষ বলে টাই, কখনও বৃষ্টি আইনের মার-প্যাঁচ, শেষ মুহূর্তের ব্যর্থতায় তারা এখন বিশ্বকাপের ‘চোকার্স’। দ্বারে আরও একটি শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। ইংল্যান্ডে ৩০ মে শুরু বিশ্বকাপের ১২তম আসর। এ মাসেই সব দেশ তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করে দেবে। বিশ্বকাপে ভাগ্য ফেরাতে মরিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা এবার দল গঠনে চিরায়ত ‘কোটা’ পদ্ধতি তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ সাদা-কালো ভেদাভেদ নয়, যোগ্যদের নিয়েই বিলেতে পাড়ি জমাবে প্রোটিয়ারা। বিশ্বকাপের দল গঠনে কোটা পদ্ধতি বাতিলের খবর জানিয়ে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার (সিএসএ) প্রধান নির্বাহী থাবাং মোরো বলেন, ‘বিশ্বকাপের জন্য নির্দিষ্ট কোন অনুপাত থাকবে না। গিবসন এবং জন্ডি তাদের ১৫ সদস্যের দলে যোগ্যতার ভিত্তিতে যে কাউকে নিতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্বকাপটা জিততে। এ জন্য অবশ্যই সেরাদেরই সুযোগ পাওয়া উচিত। ম্যাচের একাদশ নির্ধারণেও একই কথা প্রযোজ্য। সেরা দলটিই নামানো হবে। আমি দল নির্বাচনে আর কোন নির্দিষ্ট অনুপাত বা কোটার প্রয়োগ চাই না।’ শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যকার বৈষম্য দূরীকরণে সিএসএ এতদিন অদ্ভুত এক কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে আসছিল। যে নিয়ম অনুসারে প্রতি মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় ক্রিকেট দলে সর্বোচ্চ ৫ জন শ্বেতাঙ্গ এবং বাকি ৬ জন অন্য বর্ণের ক্রিকেটারকে নেয়া হয়ে থাকে। তবে বিশ্বকাপে এ নিয়মটি মানবে না দক্ষিণ আফ্রিকা। থাকবে না কোটা পদ্ধতি। সিএসএ প্রধান নির্বাহী থাবাং এরই মধ্যে প্রধান কোচ ওটিস গিবসন এবং নির্বাচক কমিটির আহ্বায়ক লিন্ডা জন্ডিকে নতুন এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৫ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সে ম্যাচে কাইল এ্যাবটের বদলে ভারনন ফিল্যান্ডারকে খেলানোয় উঠেছিল কোটা পদ্ধতির অপব্যবহারের অভিযোগ। তাই চলতি বিশ্বকাপে এমন কিছুর সম্মুখীন হতে চাচ্ছে না সিএসএ। প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করা হবে আগামী ১৮ এপ্রিল। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে তারা। গত এক বছরে ৫০ ওভার ফরমেটে কোন সিরিজ না হারা দক্ষিণ আফ্রিকা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম এ্যান্ড এ্যাওয়ে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এবং নিজেদের মাঠে পাকিস্তান ও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। তবে প্রোটিয়াদের জন্য চিন্তার কারণ হাসিম আমলার (গত বছর ওয়ানডেতে গড় মাত্র ৩৫.২৬) অফফর্মসহ বড় কয়েকজন ক্রিকেটারের ইনজুরি। অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসিস এর আগে সাফল্যের জন্য নিজেদের পরিকল্পনা হিসেবে ছয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান, সাত নম্বর পজিশনে একজন অলরাউন্ডার, তিন ফাস্ট বোলার এবং একজন স্পিনারের কথা উল্লেখ করেছিলেন। বোলিং লাইনআপে স্বাভাবিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত লেগ স্পিনের জন্য ইমরান তাহির এবং পেস আক্রমণে কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি এবং অভিজ্ঞ হিসেবে ডেল স্টেইন অথবা নতুন মুখ হিসেবে এনরিখ নর্টির আসার কথা। কিন্তু এনগিডি (সাইড স্ট্রেইন) এবং নর্টি (কাঁধে) ইনজুরির কারণে চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) মিস করছেন। কোচ গিবসন বলেন, ‘কিছু সময়ের জন্য ১৫ সদস্যের বিষয়ে মনস্থির করেছি। কিন্তু এখন আমাদের বিস্তারিত আলোচনায় বসতে হবে। আইপিএল মিস্ করা খেলোয়াড়দের কাছে জানতে চেয়েছি প্রোটিয়া সেটআপের বিষয়টি জানতে চেয়েছি।’ তিনি আরও জানান, ‘আগামী ১২ মে আমাদের ক্যাম্প শুরু হবে এবং সেখানে কোন প্রকার ইনজুরি না থাকার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হতে চাই। আমরা চাই না বিশ্বকাপের মতো আয়োজনে কারও কোন প্রকার ইনজুরি থাকুক।’
×