ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিঃশেষ পানির উৎস ॥ অগ্নি ঝুঁকিতে সিলেট

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ৭ এপ্রিল ২০১৯

 নিঃশেষ পানির উৎস ॥ অগ্নি ঝুঁকিতে  সিলেট

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ সিলেটে আগুন নিয়ে আতঙ্কিত নগরবাসী। গত ৩ মাসে সিলেট বিভাগে ৩৫৩টি অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। একদিকে অপরিকল্পিত নগরায়ন অপরদিকে পানির উৎস্থলের অভাব, এই কারণে নগরী আগুন নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নগরীর মার্কেট, বিল্ডিং, দালানকোটায় অগ্নিকান্ড সংঘটিত হলে ক্ষতির পরিমাণ হবে ভয়াবহ। বছরের শুরুতে যে হারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে তাতে গত বছরের চেয়ে এবার এর মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এ নিয়ে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে জনমনে। বাসা-বাড়ি, শপিংমলসহ অসংখ্য বহুতল ভবন রয়েছে অগ্নি ঝুঁকিতে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জরিপে সিলেট নগরীর অধিকাংশ ভবন রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায়। ২০১৭ সালে ৫৮ শপিংমল ও মার্কেটের উপর পরিচালিত জরিপে মাত্র তিন মার্কেটে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক ছিল। বাকিগুলোর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে ৩২টি আর অতিঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে ২৩টি। গত ২০ বছরে সিলেট নগরী ঘনবসতিতে পরিণত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন মহল্লায় প্রধান সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কের অপ্রশস্থতা এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে রেখেছে। রাস্তা ছোট থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র নিয়ে কাজ করতে পারবে না ফায়ার সার্ভিস। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই কোন কোন এলাকায়। নগরীর বেশিরভাগ ভবনে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা নেই। শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এ্যাক্টিংউইজার, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকা, অদক্ষ জনবল, জলাধারের অভাব, চলাচলের রাস্তা না থাকা, সিঁড়ির অপ্রশস্থতা, ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্যাবল, বালু ভর্তি প্রয়োজনীয় বালতিসহ নেই প্রশিক্ষিত জনবল। ফলে মারাত্মক অগ্নি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে নগরী। অগ্নি ঝুঁকির বিষয়ে এতদিন কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেয়া হলেও গত মঙ্গলবার নগর ভবনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক দিনামনি শর্মা জানান, সিলেটের অধিকাংশ বিপণিবিতানগুলোতে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আর যেগুলোতে রয়েছে তাও নিম্নমানের। যেসব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি রয়েছে সেগুলো যথারীতি পরীক্ষা করা হয় না। প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেই দক্ষ জনবলও। এসব কারণ বিবেচনায় বিষয়টি তদারকি করতে আবারও মাঠে নেমেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এ বিষয়ে কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিমের সমন্বয়ক হিসেবে কার্যক্রম তদারকি করবেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা। আগুন নেভানোর জন্য সাধারণ মানুষ তথা ফায়ার সার্ভিসের জন্য প্রথম প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে পানি।
×