ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর চেয়েও বড় স্প্যান বসছে পায়রা সেতুতে

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ৭ এপ্রিল ২০১৯

  পদ্মা সেতুর চেয়েও বড় স্প্যান  বসছে পায়রা সেতুতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ৬ এপ্রিল ॥ পটুয়াখালীর দুমকির লেবুখালীতে নির্মাণাধীন পায়রা সেতুতে বসতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর থেকেও বড় স্প্যান। নান্দনিক এক্সটাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার সেতুটিতে নদীর মাঝে মূল সেতু হবে ৬৩০ মিটার। এজন্য ২০০ মিটারের দুটি স্প্যান ও দু’পাশে দুটি স্প্যান ১১৫ মিটার করে হবে। যা দেশের সবচেয়ে বড় পদ্মা সেতুর স্প্যানের থেকেও বড়। পটুয়াখালী-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর ‘পায়রা সেতু’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে দ্বার উন্মুক্ত হবে সর্বদক্ষিণের অর্থ-বাণিজ্যসহ সার্বিক উন্নয়ন। জানা যায়, চার লেন বিশিষ্ট ১ হাজার ৪৭০ মিটার (৪,৮২০ ফুট) দৈর্ঘ্যরে ১৯.৭৬ মিটার (৬৪.৮ ফুট) এক্সট্রা বক্স গার্ডার সেতুটির উভয়দিকে সাত কিলোমিটার জুড়ে নির্মাণ করা হবে এ্যাপ্রোচ সড়ক। ব্রিজটির প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৪৪৬ কোটি টাকা। এছাড়াও সেতুটি নদীর তলদেশ থেকে ১৮ থেকে ৩০ মিটার উঁচু হবে। ফলে নদীতে নৌযান চলাচলে কোন অসুবিধা হবে না। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হবে সেতুটি। সেতুটি নির্মিত হলে খুলে যাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সম্ভাবনার দ্বার। যোগাযোগ ব্যবস্থায় সৃষ্টি হবে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। ব্যবসা-বাণিজ্যে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। গড়ে উঠবে কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই সেতুকে ঘিরে পরিকল্পনায় ব্যস্ত রয়েছেন ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা। হোটেল-মোটেল, তেল পাম্পসহ এমনকি জমির মালিকরাও। কুয়েত সরকারের অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান চাইনিজ কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ করছে। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে সেতুটির নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। রেসিডেন্স ইঞ্জিনিয়ার আহমদ শরীফ সজিব বলেন, উভয় তীরের গার্ডার নির্মাণ শেষে এখন নদীর মাঝের গার্ডার নির্মাণ কাজও শেষের দিকে। একই সঙ্গে স্প্যান বসানো হচ্ছে। লংজিয়ান চায়নার নির্মাণ শ্রমিকরা খাবার বিরতি ছাড়া দিন-রাত সমান তালে দ্রুততার সঙ্গে নির্মাণ কাজ করছেন। এখন গড় হিসাবে ৫৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২০ সালের জুনের দিকে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেতুটি নির্মিত হলে পটুয়াখালী-বরগুনা জেলাসহ উপকূলীয় ১০ উপজেলার অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সৃষ্টি হবে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ মে একনেক সভায় প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন পায়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী সফরে এসে লেবুখালীতে পায়রা নদীর দক্ষিণ পারে ফেরিঘাটে চার সড়ক বিশিষ্ট পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পদ্মা সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২ পিলারের ওপর বসবে ৪১ স্প্যান। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।
×