ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপদ সড়ক নিয়ে আরও কিছু কথা

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ৭ এপ্রিল ২০১৯

 নিরাপদ সড়ক নিয়ে আরও কিছু কথা

বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যে সংস্থাটি মূল ভূমিকা রাখতে পারে সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ১৯ জুলাই ২০১৭-এ প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট অনুযায়ী ১৯৮৮ সালের জানুয়ারী থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যক্রম শুরু করে। প্রণিত আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের কার্যাবলী হচ্ছে নিম্নরূপ। কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো- আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, সুশৃঙ্খল ও দক্ষ সড়ক পরিবহন সেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলা। সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, কারিগরি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধমে দক্ষ চালক সৃষ্টি এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো। মোটরযান চালনায় ড্রাইভিং লাইসেন্স মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ইন্সট্রাক্টর লাইসেন্স, রুট পারমিট ইত্যাদি প্রদান। মোটরযান প্রস্তুতকারী ও সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান, মোটরযান বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান মোটরযান ওয়ার্কশপ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল, মোটরযান দূষণ পরীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান, ইত্যাদির রেজিস্ট্রেশন প্রদান। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সার্ভিস কার্যক্রম তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ। সরকারী মোটরযান মেরামত ও অকেজো ঘোষণা নিমিত্ত পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রদান। সড়ক দুর্ঘটনায় জড়িত মোটরযানের পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রদান। সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কিত কার্যক্রম গ্রহণ। ট্রাফিক চিহ্ন, সংকেত, গতিসীমা নির্ধারণ। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ আধিক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় সমন্বিত রুট নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। মোটরযান টাইপ ও শ্রেণির নমুনা অনুমোদন এবং তদনুযায়ী নির্মাণ ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ। মোটর যানের ওজনসীমা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ। আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি গঠন ও এর কার্যক্রম তদারকি, পরীক্ষণ ও সমন্বয়। মোটরযানের কর ও ফি আদায় এবং সরকারের পূর্বানুমতিক্রমে মোটরযানের ফী নির্ধারণ। গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়ন। যে কোন এলাকা বা অধিক্ষেত্রের মধ্যে সরকারের পূর্বানুমতিক্রমে মোটরযান গণপরিবহনের সংখ্যা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ। উপরোক্ত কোন বিষয়ের সঙ্গে আনুষঙ্গিক অন্য যে কোন কাজ এবং সরকার কর্তৃক সংশ্লিষ্ট অন্য কোন আইন বিধি, প্রবিধান দ্বারা প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব। সুষ্ঠু সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা এবং সড়ক নিরাপত্তা বিধানের জন্য বিআরটিএ গঠন করা হয়। চেয়ারম্যান বিআরটিএ-র সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সরকার কর্তৃক জারিকৃত সকল কাজ সম্পাদন করাও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব। সংশোধিত অবকাঠামো অনুযায়ী বর্তমানে বিআরটিএ-র মোট বিভাগীয় অফিস ৭টি এবং সার্কেল অফিস ৬২টি, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে বর্তমানে ৫৭টি জেলায় বিআরটিএর পূর্ণাঙ্গ সার্কেল অফিস আছে। অবশিষ্ট ০৭টি জেলায় পার্শ্ববর্তী জেলা সার্কেল অফিসের সহকারী পরিচালক কর্তৃক বিআরটিএ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। বিভাগীয় অফিসের প্রধান হচ্ছেন উপপরিচালক এবং সার্কেল অফিসের প্রধান হচ্ছেন সহকারী পরিচালক। এ অফিসের কাজ হচ্ছে মোটরযান নিবন্ধন, মালিকানা বদলী, নম্বর প্লেট, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, মোটরযানের ট্যাক্স টোকেন ইস্যু ও নবায়ন, রুট পারমিট ইস্যু ও নবায়ন। এবার সংশোধিত আইন আনুযায়ী বাস, ট্রাক ও লরির মতো ভারি যানবাহন চালানোর সুযোগ পেলেন মাঝারি যানবাহনের চালকরা। আর প্রাইভেট কারসহ ছোট যানবাহনের চালকরা চালাতে পারবেন মাঝারি যানবাহন। এক্ষেত্রে চালককে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। দেশে চালকের সঙ্কট থাকায় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ চালকের যোগ্যতার শর্ত শিথিল করে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশে ভারী ও মধ্যম শ্রেণীর মোটর যানের তুলনায় ভারি ও মধ্যম মানের ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী চালকের সংখ্যা অপ্রতুলতার কারণে যাত্রী ও পণ্যবাহী মোটরযানের স্বাভাবিক চলাচল অব্যাহত রাখার স্বার্থে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা- এতদিন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা ছিল না। নতুন আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চালককে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাসের বিধান রাখা হয়েছে। হেলপার হতেও শিক্ষাগত যোগ্যতা- আগের অধ্যাদেশে সহকারীদের লাইসেন্সের কথা থাকলেও তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত ছিল না। নতুন আইনে চালকের সহকারীরও থাকতে হবে পঞ্চম শ্রেণী পাসের সার্টিফিকেট। সহকারী হতে বাধ্যতামূলকভাবে লাইসেন্সের বিধান তো থাকছেই। চালকের বয়স-ব্যক্তিগত গাড়ি চালনার জন্য চালকের বয়স আগের মতোই অন্তত ১৮ বছর রাখা হয়েছে। তবে পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর। বাড়ছে জরিমানা ও সাজা- নতুন আইনে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। পূর্বে এই অপরাধের জন্য তিন মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। জরিমানা ও সাজা হবে হেলপারের- চালকের সহকারীর লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে নতুন আইনে। মোবাইল ফোনে কথা বলা যাবে না- গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। এ আইন ভাঙলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার- ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে- এমন অপরাধের ক্ষেত্রে চালককে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে পুলিশকে। বিধি অমান্যে পয়েন্ট কাটা- প্রস্তাবিত আইনে লাইসেন্সে থাকবে মোট ১২ পয়েন্ট। বিভিন্ন বিধি অমান্যে কাটা যাবে এই পয়েন্ট। পয়েন্ট শূন্য হলে বাতিল হবে চালকের লাইসেন্স। দুর্ঘটনার সাজা- দুর্ঘটনার জন্য শাস্তি দেয়া হবে দণ্ডবিধি অনুযায়ী। দুর্ঘটনায় কার মৃত্যু হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড। মৃত্যু না হলে ৩০৪ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে মৃত্যু ঘটালে ৩০৪ (বি) ধারা অনুযায়ী তিন বছরের কারাদণ্ড হবে। দীর্ঘদিন যাবত বিআরটিসি পরিবহন সেক্টরে নিরলসভাবে যাত্রীসেবা দিয়ে আসছে তা তুলনাহীন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন বা বিআরটিসি বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা। এটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ। একটি নিরাপদ ও আরামদায়ক রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা করা, বিআরটিসি-এর বহরে আধুনিক গাড়ি সংযোজন, গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, যাত্রী সেবা নিশ্চিতকরণ ও মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধন করা। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সড়ক পরিবহনের ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি। সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখার লক্ষ্যে স্ট্রাটিজিক ইন্টারভেনশনাল ভূমিকা পালন করা। দেশের দুর্যোগপূর্ণ সময়ে বিআরটিসির ট্রাকের মাধ্যমে মালামাল বহন করা। দেশে আধুনিক সড়ক পরিবহন সেবা প্রদান। ইন্টারনেট সুবিধাসহ বিআরটিসি বাসে Wi-Fi সিস্টেম চালু করা। এই কর্পোরেশনের সেবা কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করার জন্য জনসাধারণ খুবই আগ্রহী। এই কর্পোরেশনের গাড়ি খুব কম সংখ্যক দুর্ঘটনায় পড়ে। ঢাকা শহর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মতো বিশাল এবং দক্ষ জনবলসহ জেলা অফিস ও বিভাগীয় অফিস থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কেন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না তা নীতিনির্ধারক কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখার আবেদন রাখছি। তাছাড়া ঢাকা শহরে ৬৪টি জেলার গ্রাম থেকে যে পরিমাণ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন কর্মসংস্থানের আশা নিয়ে আসছে তা বন্ধ না করতে পারলে শুধু আইন করে ড্রাইভারের ওপর দোষ চাপিয়ে এবং ট্রাফিক পুলিশের ওপর সকল দায় চাপিয়ে দিলে পরিস্থিতির কোন উন্নতি হবেন। ঢাকা শহরে ২০ কি. মি এর মধ্যে সকল যানবাহনের গতি সীমিত করে দিলে দুর্ঘটনার হার কমবে। ঢাকা শহরে ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে। যান্ত্রিক যানবাহন চলা চলের রাস্তায় রিক্সা, ঠেলাগাড়ি বন্ধ করে দিতে হবে। পথচারীগণকে সড়কের ওপর দিয়ে হাঁটাও বন্ধ করে দিতে হবে। যাত্রীরা যেখানে সেখানে রাস্তা ক্রস করতে পারবেন না। খুব দ্রুততম, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ফুটপাথ রাখা যাবে না। এই রাস্তায় শুধু যানবাহন চলবে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন চিন্তা করে নতুন পথ খুঁজতে হবে- কি করে রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায়। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। স্পিডগান খুলনায় যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ঘটনা কমাতে ‘স্পিডগান’ ব্যবহার শুরু করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। ক্যামেরা ও লেজাররশ্মি ব্যবহারের মাধ্যমে চলন্ত যানবাহনের গতি মাপার যন্ত্রই হলো স্পিডগান। সম্প্রতি খুলনায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোয় ১০ জনকে জরিমানা করা হয়। শহরের মধ্যে বাস ও ট্রাকের গতিবেগ ২০-২৫ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্পিডগান ব্যবহারের ফলে নগরীতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। জানা যায়, নির্দিষ্ট গতিসীমার ওপরে যানবাহন চালালে ১৪২ ধারায় মামলা করা হবে। এতে ৩০০ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। কেএমপিকে তিনটি স্পিডগান দেয়া হয়েছে। যার ফলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুব সহজে যানবাহনের গতিসীমা পরিমাপ করা যায়। পরীক্ষামূলকভাবে তা চালানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তা ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনÑ ক. ঢাকা শহরে কমিউনিটি পুলিশের মতো কমিউনিটি ট্রাফিকিং শুরু করা যেতে পারে যার সঙ্গে বাংলাদেশ স্কাউটের স্মার্ট সদস্যদের নির্বাচিত করে তাদের ট্রাফিক পুলিশের সাহায্যকারী হিসেবে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পরীক্ষামূলকভাবে নিয়োজিত করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে স্কাউটের সংখ্যা ১৬৮২৭৬১ জন। বাংলাদেশ বিশ্ব স্কাউট সংস্থায় ৫ম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ঢাকা শহরে এ কার্যক্রম সফল হলে সকল শহরে একসাথে শুরু করে তা বাস্তবে পরিণত করতে হবে। খ. চট্টগ্রামের মত শুরু হওয়া মোবাইল ট্রাফিক পুলিশ টিম গঠন করে যেখানে যানজট সেখানেই তাঁরা উপস্থিত হবে এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে। এই টিমের সদ্যস্যা সংখ্যা হবে ১০ জন। এভাবে ঢাকা শহরে কয়েকটি টিম গঠন করে পরীক্ষামূলক চালানো যেতে পারে। ভাল ফল পাওয়া গেলে এটা চলবে, না পাওয়া গেলে বন্ধ করে দিতে হবে। ঢাকা শহর যেহেতু অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে সেজন্য এখানকার রাস্তার নেটওয়ার্কও পরিকল্পিত নয়। অধিকাংশ সড়ক উত্তর-দক্ষিণমুখী, পূর্ব-পশ্চিমমুখী সড়ক কম। সড়ক নেটওয়ার্ক সঠিক না থাকায় ট্রাফিক সিগন্যালও কার্যকরী হয় না। অনেক দেশেই একই রাস্তায় বিভিন্ন আকারের যানবাহন চলে না। ঢাকা শহরে ২৮০টি বাস রুট আছে, ঢাকা শহরে এত বাস রুট থাকার প্রয়োজন আছে কিনা কর্তৃপক্ষকে তা ভেবে দেখতে হবে। পুরো শহরকে বাস চলাচলের জন্য ১০টি রুটে ভাগ করে প্রতিটি রুটের জন্য একটি করে বাস কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে। বর্তমানে যারা মালিক আছেন, তারাই এসব কোম্পানির যৌথ মালিক হবেন এবং সমান শেয়ার হোল্ডার হবেন। ভারতের মুম্বাই শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব ঢাকার মতোই। কিন্তু সেখানে মাত্র ৩৬০০ বাস প্রতিদিন ৪৮ লাখ যাত্রী পরিবহন করে। সূত্র মতে, ঢাকায় ৬০০০ প্রতিদিন ৩০ লাখ যাত্রী পরিবহন করে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিটি বাস ৫০০ যাত্রী পরিবহন করছে। কোম্পানি গঠন করলে ৬০০০ বাস দিয়ে আরও বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে, তখন সড়কে কিছু শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। লেখক : আহ্বায়ক- ক্যাম্পেন ফর রোড সেফ্টি, নিউইয়র্ক
×