ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যারা পুড়িয়ে মানুষ মারে তারা টিকবে না ॥ পূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ৬ এপ্রিল ২০১৯

 যারা পুড়িয়ে মানুষ  মারে তারা  টিকবে না ॥ পূর্তমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিত্তবৈভবের নয় আত্মউৎসর্গের ব্রত নিয়ে সবাইকে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। ‘বাংলাদেশ কংগ্রেস’ দলের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কংগ্রেসের সভাপতি এ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, দলের মহাসচিব এ্যাডভোকেট মোঃ ইয়ারুল ইসলাম, এ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল আউয়াল, মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়াসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে বাধা, দেশের উন্নয়নে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী দেয়, রাজনীতির নামে পেট্রোলবোমা দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারে, রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়, মানুষের গণতান্ত্রিক চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে, তাদের রাজনীতি বাংলাদেশে বেশিদিন থাকবে না। মন্ত্রী বলেন, রাজনীতির ব্রত হতে হবে আত্মউৎসর্গের। এখন কোন কোন ক্ষেত্রে নিজের বিত্তবৈভবের রাজনীতি দেখি। এটা তো রাজনীতি হওয়ার কথা ছিল না। রাজনীতি বলতে আমি শ্রেষ্ঠ নীতিকে বুঝি, রাজনীতি মানে রাজার নীতিতে আমি বিশ্বাস করি না। শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার রাজনীতি তৃণমূল থেকে শুরু করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, অসহায় ছিন্নমূল মানুষ থেকে উর্ধমুখী সবার জন্য সমাধিকার নিশ্চিত করার রাজনীতি। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করছেন। তাই যে বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি, সেই বাংলাদেশকে আজ বলা হয় উন্নয়নের রোলমডেল। দেশের উন্নয়নে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী পালনকারীদের উদ্দেশে রেজাউল করিম বলেন, আপনারা অন্ধকার ও ভুল পথ থেকে ফিরে আসেন, নইলে একটা সময় দেখা যাবে মুসলিম লীগের মতো আপনাদের অস্তিত্ব মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে। কংগ্রেসের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা মনে করি মানুষের কল্যাণে আত্মোৎসর্গ করতে হবে। রাজনৈতিক নেতারা কেন দুর্নীতিবাজ হবেন? তাদের বিরুদ্ধে কেন দুর্নীতির মামলা হবে? রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকতে পারে, কিন্তু আমরা মনে করি কেউ যেন শত্রু না হয়। রাজনীতি নিয়ে আমার প্রতিপক্ষ থাকতে পারে, তাদের সঙ্গে রাজনীতির মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা, যুক্তি উপস্থাপন, খন্ডন হতে পারে। এভাবেই আমরা রাজনীতি করতে চাই। গুণগতমান এবং সৃজনশীলতার রাজনীতি ছাড়া মানুষের কল্যাণ হতে পারে না। সেই কল্যাণের পথে আপনারা সবাই শামিল হন। মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা তার দৃপ্ত প্রত্যয়ে বলেছিলেন, নিজের দেশের টাকায় পদ্মা সেতু বিনির্মাণ করব। অনেকেই এ নিয়ে হাসি-তামাশা করেছেন অথচ সেই পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার যা কেউ সাহস পায়নি, সেই কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের আজ যে প্রান্তে যাবেন, সেখানেই দেখবেন উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। ইন্টারনেটের ফলে মানুষ সর্বত্র উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন। আমাদের মাথাপিছু গড় আয়, আয়ু, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বেড়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আমরা চাই। ‘একশ’ র উর্র্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন। তারা যতবার কথা বলতে চেয়েছেন, ততবার তিনি তাদের কথা শুনেছেন। এটাই হলো রাজনীতির সৌন্দর্য যে পরমসহিষ্ণু হতে হবে। সবার কথা শুনতে হবে, না হলে গণতন্ত্র অর্থবহ হয় না, অর্থহীন হয়ে যায়। মন্ত্রী বলেন, জীবনকে উৎসর্গ করতে হবে মানুষের কল্যাণে ও দেশের সেবায়। আর সেটাই হবে রাজনীতি। আমরা চাই যারা ধ্বংসের রাজনীতি করে, যারা সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে, স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতি করে, তাদের বিনাশ হোক। আমরা সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতি দেখতে চাই। যেখানে ক্ষমতায় থাকবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল, আবার বিরোধী দলেও থাকবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল। স্বাধীনতাবিরোধীরা থাকবে তা আমরা কল্পনাও করি না।
×